Friday 23 December 2016

শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুদ কমিয়ে, ‘আচ্ছে দিন‘- এ শ্রমিকদের বড়দিনের ‘উপহার‘ দিলেন মোদী সরকার : শ্যামল চক্রবর্তী



দুর্গাপুর,২৩শে ডিসেঃ – আজ দুর্গাপুর ইস্পাতনগরী হর্ষবর্ধন রোডে ডিভিসি শ্রমিক ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ ) এর ডি.এস.টি.পি.এস ইউনিটের কার্যালয় উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় , কেন্দ্র ও রাজ্যের উভয় সরকারে শ্রমিক ও শিল্প-বিরোধী মানসিকতার তীব্র সমালোচনা করে এ কথা বলেন সি.আই.টি.ইউ এর পঃ বঙ্গ রাজ্য কমিটির সভাপতি ও ডিভিসি শ্রমিক ইউনিয়ন এর সভাপতি শ্যামল চক্রবর্তী । তিনি বলেন যে শিল্পের ভয়ানক অধোগতি,দেশের শিল্প-তালিকায় পঃ বঙ্গের ১৩-তম স্হানে নেমে যাওয়া চোখে আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে দিচ্ছে । কিন্তু এই পরিস্হিতির মধ্যেও , মুখ্যমনন্ত্রী একের পর এক তথাকথিত জাঁকজমক-পূর্ণ,’শিল্প মেলা ‘করে রাজ্যে শিল্প গড়ার নামে জনগনের পয়সা অপব্যয় ছাড়া কিছু করছেন না । অন্যদিকে শ্রমিক আন্দোলনে কে দমন করার নীতি নিয়েছেন । কিন্তু সি.আই.টি.ইউ কোন ভাবেই মাথা নোয়াবে না । এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে,গত ৩৭ বৎসর ধরে ডিভিসি শ্রমিক ইউনিয়ন,শ্রমিক স্বার্থে  ডিভিসি তে লাগাতার লড়াই আন্দোলন চালিয়ে গেছে । এর ফলে, শ্রমিকরা সুবিধাবাদী ট্রেড ইউনিয়ন দের পরিত্যাগ করে, ডিভিসি শ্রমিক ইউনিয়ন কে আপন করে নিয়েছে এবং ইউনিয়ন স্বীকৃতি নির্বাচনে সি.আই.টি.ইউ কে বিপুলভাবে জয়ী করেছে । এর স্বীকৃতি স্বরূপ শেষ পর্যন্ত ডিভিসি ম্যানেজমেন্ট ডিভিসি শ্রমিক ইউনিয়ন কে কার্যালয় খুলতে অনুমতি দিয়েছে ।

অন্যদিকে নোট-বদলী নিয়ে জনসাধারনের হয়রানি অবিলম্ব বন্ধ করার দাবী জানিয়ে তিনি বলেন যে সি.আই.টি.ইউ কালো টাকা উদ্ধারের জন্য লাগাতার ভাবে দাবী জানিয়ে আসছে ,অথচ কেন্দ্রের মোদি সরকার কালো টাকার উদ্ধার করার পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ । অন্যদিকে রাজ্যে সারদা-নারদা কেলেংকারিতে জনগনের লুন্ঠিত কোটি কোটি টাকা হদিশ ও বাজেয়াপ্ত করার ক্ষেত্রেও একই রকমের গড়িমসি , কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক গোষ্ঠীর গোপন বোঝাপড়া সামনে আসছে । তিনি অভিযোগ করেন বিরোধীদের তোলা প্রধানমন্ত্রীর ব্যাক্তিগত দূর্ণীতি সংক্রান্ত অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বিজেপি সংসদের শীতকালীন অধিবেশন বানচাল করেছে । তিনি দাবী করেন যে অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীর ব্যাক্তিগত দূর্ণীতি সংক্রান্ত অভিযোগ নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নিতে হবে ।

জনসভা শুরুর আগে ডিভিসি শ্রমিক ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ ) এর ডি.এস.টি.পি.এস ইউনিটের কার্যালয়ের দ্বারোদঘাটন করেন শ্যামল চক্রবর্তী । ডি.এস.টি.পি.এস ইউনিটের চীফ ইঞ্জিনীয়র অ্যান্ড প্রজেক্ট হেড এস.এন.ঝা সহ অন্যান্য উচ্চ পদস্হ আধিকারিক  এই অনুষ্ঠানে উপস্হিত ছিলেন এবং শ্যামল চক্রবর্তীর সাথে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ করেন ।

ডিভিসি শ্রমিক ইউনিয়ন এর সাধারন সম্পাদক  জীবন আইচ বক্তব্য রাখতে গিয়ে তুলে ধরেন যে কি ভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের একের পর এক পদক্ষেপের ফলে ডিভিসির জলসেচ প্রকল্প ও তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলি ভয়াবহ বিপদের মুখোমুখি হয়ে অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে । দুর্গাপুর ব্যারেজের পলি উত্তোলনের কাজ না হওয়ায় জন্য দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল ভয়ংকর জল সংকটের মুখেোমুখি হয়ছে । সবচেয়ে উন্নতমানের রঘুনাথপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বেসরকারী হাতে তুলে দিতে চাইছে । অন্যদিকে, রাজ্যে নতুন শিল্প হচ্ছে না,চালু কারখানা একটার পর একটা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে । তার ফলে বিদ্যুতের চাহিদা ব্যাপকভাবে হ্রাস পাচ্ছে , ডিভিসির সংকটের বোঝা বাড়ছে । এই সংকটের  থেকে পরিত্রানের সঠিক রাস্তা দেখাতে না পেরে,তা শ্রমিকদের উপরে সংকটের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে বেসরকারীকরন-কর্মী সংকোচনের রাস্তায় হাঁটার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার । এই প্রসঙ্গে দুর্গাপুরের ডিটিপিএইচ বন্ধের সিদ্ধান্ত রুখে দেওয়ার  বিরুদ্ধে ডিভিসি শ্রমিক ইউনিয়ন সাফল্যের কথা উল্ল্যেখ করে তিনি সতর্ক করে বলেন যে আত্মসন্তুষ্টির কোন অবকাশ নেই, লাগাতার  আন্দোলন চলবে । অন্যদিকে পে-রিভিশন কে বেসরকারী সংস্হা দিয়ে করানোর চক্রান্ত চলছে বলে তিনি সতর্ক করে , অবিলম্বে ডিভিসি ম্যানেজমেন্ট কে স্বীকৃত ইউনিয়ন ডিভিসি শ্রমিক ইউনিয়ন এর সাথে পে-রিভিশন সংক্রান্ত আলোচনায় বসার দাবী জানিয়েছেন ।

দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর সি.পি.আই.( এম ) বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় বলেন যে গোটা দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল ধুঁকছে । ৬ টি রাষ্ট্রায়ত্ব কারখানা ও ১৬ বেসরকারী কারখানা ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে । অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট  কে বেসরকারীকরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ও ইস্পাতনগরীর বেসরকারীকরনের উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার । এই উদ্যোগ সফল হলে , গভীর সংকটে পড়বে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট । অন্যদিকে রাজ্য সরকারের সংস্হা দুর্গাপুর কেমিক্যালসকে বেসরকারীকরনের কথা ঘোষনা করা হয়ছে , চরম সংকটে পড়েছে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র দুর্গাপুর প্রজেক্ট লিমিটেড ( ডি.পি.এল ) । ডি.পি.এল এর কোকওভেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের এই ভয়াবহ পরিনিতি বর্ধমান জেলা তথা রাজ্যের অর্থনীতি কে বিপর্যস্ত করবে এই আশংকা প্রকাশ করে , তিনি দুর্গাপুরের সাথে   জেলা তথা রাজ্য ব্যাপি বৃহত্তর পরিসরে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান ।

এছাড়াও সভায় বক্তব্য রাখেন ডি.এস.টি.পি.এস ইউনিটের সভাপতি নেপাল দে ও সম্পাদক শুভাশিষ গুপ্ত । উপস্হিত ছিলেন প্রবীন শ্রমিক নেতা রথীন রায় , নির্মল ভট্টাচার্য , মহাব্রত কুন্ডু , সুবীর সেনগুপ্ত  সহ অন্যান্য শ্রমিক ও গণ আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ এবং ডিভিসি শ্রমিক ইউনিয়ন ও ডি.এস.টি.পি.এস ইউনিটের অন্যান্য প্রাক্তন ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ ।সভার শুরুতে গণসংগীত পরিবেশন করে গণনাট্যের দুর্গাপুর ইস্পাত শাখার শিল্পীরা । সভাপতিত্ব করেন নেপাল দে ।



















Thursday 22 December 2016

অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের বেসরকারীকরনের উদ্যোগ বাতিলের দাবীতে আমরন লড়াই এর ডাক দিল ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের এর যৌথ গণ কনভেনশন ।

                                                              


দুর্গাপুর,২২শে ডিসেঃ –  “ উই উইল ফাইট টিল ডেথ “ – আজ ইস্পাতনগরী দুর্গাপুরে আয়োজিত ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের এর যৌথ কনভেনশন এই শপথ নিয়ে , দুর্গাপুর কে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা ও রাজ্যের অর্থনীতিকে নিশ্চিত রুগ্নতার হাত থেকে বাঁচাতে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের বেসরকারীকরনের উদ্যোগ বাতিল , সেইলের ( কেন্দ্রীয় সরকারের রাষ্ট্রায়ত্ব ইস্পাত উৎপাদক সংস্হা স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া ) বিশেষজ্ঞ সংস্হা ,’সেট’ এর  প্রস্তাব অনুসারে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টে ( এ.এস.পি ) বিনিয়োগ ও আধুনিকীকরন এবং একই সাথে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট ( ডি.এস.পি ) কে বার্ষিক ২.২ মিলিয়ন টন থেকে ১০ মিলিয়ন টন ইস্পাত উৎপাদন ক্ষমতা-সম্পন্ন কারখানায় পরিনত করার জন্য  ইস্পাত শ্রমিক ( স্হায়ী ও ঠিকা ) ও তাদের পরিবারবর্গ সহ দুর্গাপুরের দলমত-নির্বিশেষ সকলকে  আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানানো হয় ।
মোদি সরকারের সম্প্রতি ২২ টি রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা বেসরকারীকরনের  সিদ্ধান্ত নিয়েছে যার মধ্যে রয়েছে সেইলের বিশেষ ইস্পাত উৎপাদক সংস্হা দুর্গাপুরে    অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টে , সালেম ও ভদ্রাবতী স্টিল প্ল্যান্ট । আশ্চর্যজনক হলেও এটাই সত্য যে কেন্দ্রীয় সরকারের রাষ্ট্রায়ত্ব ইস্পাত উৎপাদক সংস্হা স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া বিগত ১৬ বৎসর ধরে ক্রমান্বয়ে মুনাফা করে কেন্দ্রীয় সরকারের কোষাগারে হাজার হাজার কোটি টাকা জমা করেছে । কিন্তু ২০১৪-১৫ আর্থিক বছর থেকে সেইল লোকসান শুরু করে এবং বেসরকারী ক্ষেত্রের ইস্পাত উৎপাদক সংস্হা গুলির অবস্হা আরও শোচনীয় হয়ে পড়েছে । বিদেশের তৈরি ইস্পাত অবাধে দেশে বিক্রী হচ্ছে , কিন্তু দেশীয় ইস্পাত শিল্প বাঁচাতে  কোনো অজ্ঞাতকারনে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক বসানো হচ্ছে না ।
স্বাধীন ভারতে শ্রমিক অধিকার রক্ষায় , দুর্গাপুরের ইস্পাত শ্রমিকরা যে অন্যন্য সাধারন নজীর তৈরি করছে ,তা দেশ-কালের পরিধি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিচিতি লাভ করেছে । একই সাথে রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্প বাঁচাতে এবং জন্মলগ্ন থেকে  এ.এস.পি ও ডি.এস.পি বাঁচাতে ও দেশের মধ্যে ইস্পাত উৎপাদনে শীর্ষে  পৌঁছাতে দুর্গাপুরের ইস্পাত শ্রমিকরা অন্যবদ্য ভূমিকা পালন করেছে । বিগত এনডি-বিজেপি সময়ে যখন এম.এ.এম.সি – এফ.সি.আই-বি.ও.জে.এল মত একটার পর একটা রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্প বন্ধ হয়ে যায় , তখন দুর্গাপুরের ইস্পাত শ্রমিকদের  যৌথ  আন্দোলনের ব্যারিকেড, এ.এস.পি কেনার জন্য আগত জিন্দাল গোষ্ঠী ও ডি.এস.পি –র ক্যাপটিভ পাওয়ার  প্ল্যান্ট কেনার জন্য আগত বহুজাতিক সংস্হা এনরনের প্রতিনিধিদের কারখানায় ঢুকতেই দেয় নি । যৌথ শ্রমিক আন্দোলন গড়ার ক্ষেত্রেও দুর্গাপুরের ইস্পাত শ্রমিকরা সারা ভারতের মধ্যে পথিকৃৎ এর ভূমিকা পালন করছে ।
আজকের ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের এর যৌথ গণ কনভেনশন সি.আই.টি.ইউ সহ আই.এন.টি.ইউ.সি-এ.আই. টি.ইউ.সি-বি.এম.এস-এইচ.এম.এস-ইউ.টি.ইউ.সি-টি.ইউ.সি.সি  যোগ দেয় ।
যৌথ প্রস্তাব উথ্থাপন ও ব্যাখ্যা করেন ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের যুগ্ম আহ্বায়ক ও সি.আই.টি.ইউ এর বর্ধমান জেলা কমিটির সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ চক্রবর্তী । বক্তব্য রেখেছেন প্রবীন শ্রমিক নেতা রথীন রায় , দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর সি.পি.আই.( এম ) বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় , স্টিল ওয়ার্কার্স ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (সি.আই.টি.ইউ ) এর সাধারন সম্পাদক পি.কে.দাস , ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের অপর যুগ্ম আহ্বায়ক ও আই.এন.টি.ইউ.সি-র বর্ধমান জেলা কমিটির সভাপতি বিকাশ ঘটক,আমীর হায়দার (এ.আই. টি.ইউ.সি), অরূপ কুমার রায় (বি.এম.এস)  অনীত মল্লিক ( টি.ইউ.সি.সি ), সব্যসাচী গোস্বামী (ইউ.টি.ইউ.সি ) সহ এ.এস.পি ও ডি.এস.পি কারখানার  শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ।সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ১২ই জুলাই কমিটির ও ব্যাঙ্ক কর্মীদের পক্ষে মধুসূদন খান ও ইস্কো আই.এন.টি.ইউ.সি-এর পক্ষে হরজিন্দার সিং ।  সভাপতিত্ব করেন রথীন রায় । কনভেনশন থেকে আগামী ৯ই জানুঃ এস.ডি.ও দফ্তরে ( সিটি সেন্টার ) গণ অনশন ও ১৮ই জানুঃ এ.এস.পি থেকে ডি.এস.পি কারখানার গেট পর্যন্ত মিছিলের ডাক দেওয়া হয় ।
কনভেনশন স্হলে উপচে পড়া ভীড় প্রমান করছে আসন্ন লড়াই এর জন্য ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে ইস্পাত শ্রমিকরা ।


































Monday 19 December 2016

অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট – দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট – দুর্গাপুর কেমিক্যালস বাঁচাতে দুর্গাপুরের ইস্পাত শ্রমিকরা একটানা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ।



দুর্গাপুর,১৯শে ডিসেঃ – গত ১৫ই ফেব্রুঃ , দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের সাথে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের ,’মার্জার’ এর ঘোষনার সাথে সাথে হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন সহ দুর্গাপুর ইস্পাত ট্রেড ইউনিয়ন সমন্বয় কমিটির ( সি.আই.টি.ইউ) ও অন্যান্য গণসংগঠনের পক্ষ থেকে যৌথভাবে ইস্পাতনগরী সহ সংলগ্ন গ্রামাঞ্চল ও বস্তি গুলিতে লাগাতার প্রচার-মিছিল-পদযাত্রার মধ্য দিয়ে   দুর্গাপুর বাঁচানো তথা রাজ্যের অর্থনীতি রুগ্ন হওয়ার থেকে বাঁচানো ও রুটি-রুজি রক্ষার জন্য অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বাঁচানোর সাথে সাথে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট – দুর্গাপুর কেমিক্যালস,রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্প ,শিল্প বাঁচাতে আন্দোলন গড়ে তোলা হয় এবং যৌথ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয় । ইতিমধ্যে গত ২৯ নভেঃ সেইল ( স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া ) এর পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে ন্যাশ্যানল স্টক এক্সচেঞ্জ ও মুম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জ কে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট সহ সালেম ও ভদ্রাবতী স্টিল কে ,’স্ট্র্যাটেজিক ডিসইনভেষ্টমেন্ট’ বা বেসরকারীকরন  করতে চেয়ে মোদি সরকারের মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে ঐ কারখানাগুলিকে নিলামে চড়ানোর কথা বলে । এই চিঠি প্রকাশ্যে আসতেই অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট ও  দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টে শ্রমিক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং ৩০শে নভেঃ আই.এন.টি.ইউ.সি যৌথ আন্দোলন যোগ দেয় । পরে গত ১৭ই ডিসেঃ সি.আই.টি.ইউ- আই.এন.টি.ইউ.সি-এ.আই.টি.ইউ.সি- টি.ইউ.সি.সি-ইউ.টি.ইউ.সি এর  বৈঠকে যৌথ আন্দোলনের কর্মসূচী ঠিক হয় এবং আগামী ২২ ডিসেঃ ইস্পাতনগরীতে যৌথ কনভেনশন এর ডাক দেওয়া ।
 এদিকে, গতকাল ইস্পাতনগরীতে দুর্গাপুর ইস্পাত ট্রেড ইউনিয়ন সমন্বয় কমিটির ( সি.আই.টি.ইউ) এর ডাকে তিনটি বিশাল মিছিল হয় এবং আজ দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত সিটি সেন্টার বাস টার্মিনাসে প্রচার কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয় । দুর্গাপুর বাঁচানো তথা রাজ্যের অর্থনীতি রুগ্ন হওয়ার থেকে বাঁচানো ও রুটি-রুজি রক্ষার জন্য অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট – দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট – দুর্গাপুর কেমিক্যালস বাঁচাও এবং উচ্ছেদ হওয়া ঠিকা শ্রমিক দের পূনর্বহালের দাবী সম্বলিত অ্যাপ্রন পরিহিত ইস্পাত শ্রমিকরা ( স্হায়ী ও ঠিকা )  বিভিন্ন জেলার বাসযাত্রী-দোকানদার-পথচারী-পরিবহন শ্রমিকদের কাছে ৪০০০ লিফলেট বিলি করে । প্রচার সভায় বক্তব্য রেখেছেন বিজয় সাহা,কবিরঞ্জন দাসগুপ্ত,ললিত মিশ্র,নিমাই ঘোষ,আশীষতরু চক্রবর্তী ও দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর সি.পি.আই.(এম) বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় । সভাপতিত্ব করেন কবিরঞ্জন দাসগুপ্ত ।


















Sunday 18 December 2016

এ.এস.পি-ডি.এস.পি-ডিসিএল বাঁচাও , দুর্গাপুর রক্ষা করো,রাজ্যের অর্থনীতি বাঁচাও – এই দাবীতে দুর্গাপুর জুড়ে মিছিল ।



দুর্গাপুর,১৮ই ডিসেঃ – অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট-দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা-দর্গাপুর কেমিক্যালস বাঁচাও, শিল্প বাঁচাও,রাষ্ট্রায়ত্ব  শিল্প বাঁচাও, দুর্গাপুর রক্ষা করো,রাজ্যের অর্থনীতি বাঁচাও -  এই দাবীতে ইস্পাত জোনাল ট্রেড ইউনিয়ন সমন্বয় কমিটির ( সি.আই.টি.ইউ ) ডাকে, আজ সন্ধ্যায়  ইস্পাতনগরীতে  এ-জোন , বি-জোন ও সেইল সমবায় আবাসন অঞ্চলে তিনটি পৃথক মিছিল হল । এই দাবীতে দুর্গাপুরে লাগাতার লড়াই-আন্দোলন চলছে ।




এ.এস.পি. কন্ট্রাক্টরস এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন এর ত্রয়োদশ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল ।





দুর্গাপুর,১৮ই ডিসেঃ -  আজ , ইস্পাতনগরীর, বি.টি.রনদিভে ভবনে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের ( এ.এস.পি) ঠিকা মজদুর সংগঠন এ.এস.পি.  কন্ট্রাক্টরস এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন এর ত্রয়োদশ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল কমঃ এস.কে.এন চৌধুরী ভবন এবং কমঃ শান্তি সিং ও কমঃ বি.আর.চ্যাটার্জী মঞ্চে ।
সম্মেলনের শুরুতে রক্তপতাকা উত্তোলন করেন সংগঠনের সভাপতি রাম পঙ্কজ গাঙ্গুলী । শহীদবেদীতে মাল্যদান করেন রাম পঙ্কজ গাঙ্গুলী ,শচীন ভৌমিক, নিখিল দাস , তাপস মাজি, দুর্গাপুর ( পূর্ব) এর সি.পি.আই .( এম ) বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় , স্টিল ওয়ার্কার্স  ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার সাধারন সম্পাদক পি.কে.দাস , মলয় ভট্টাচার্য,বিশ্বরূপ ব্যানার্জী,বিজয় সাহা প্রমূখ ।
 স্টিল ওয়ার্কার্স  ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার সাধারন সম্পাদক পি.কে.দাস   সম্মেলনের উদ্বোধন করে বক্তব্য রাখেন । এছাড়াও  সম্মেলন কে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন দুর্গাপুর ( পূর্ব) এর সি.পি.আই .( এম ) বিধায়ক সন্তোষ দেবরায়, হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ ) এর পক্ষে মলয় ভট্টাচার্য,বিশ্বরূপ ব্যানার্জী,বিজয় সাহা প্রমূখ  এবং আই.এন.টি.ইউ.সি-র পক্ষে বিকাশ ঘটক ।
   ৮০ জন প্রতিনিধি সম্মেলনে উপস্হিত ছিলেন । রিপোর্ট পেশ করেন তাপস মাজি। ১০ জন রিপোর্টের উপর আলোচনা করেন । সম্মেলনে ১৯ জনের নতুন কমিটি নির্বাচিত করেছে । ওবি-কনভেনর ,সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন যথাক্রমে শচীন ভৌমিক , বিজয় সাহা ও নিখিল দাস ।
অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের প্রস্তাবিত বিলগ্নীকরনের বাতিল করার জন্য সর্বোচ্চ লড়াই গড়ে তোলা ও সম কাজে সম বেতনের নীতি প্রয়োগের জন্য জোরদার  লড়াই গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে সম্মেলন শেষ হয় ।













Saturday 17 December 2016

অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের বিলগ্নীকরন রুখতে লড়াই আরও তীব্রতর করা হবে ।



দুর্গাপুর,১৭ই ডিসেঃ - অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের বিলগ্নীকরন রুখতে এবং দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট  ও অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের আধুনিকীকরন-সম্প্রসারনের দাবীতে যৌথ আন্দোলন তীব্রতর করার সিদ্ধান্ত নিল  শ্রমিক সংগঠন গুলি । আজ দুর্গাপুরে সি.আই.টি.ইউ এর বর্ধমান জেলা দফ্তরে সি.আই.টি.ইউ,আই.এন.টি.ইউ.সি, এ.আই.টি.ইউ.সি, টি.ইউ.সি.সি ও ইউ.টি.ইউ.সির যৌথ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । আগামী ২২শে ডিসেঃ বিকালে এই দাবীতে ৬/২ গুরুনানক রোড ( আই.এন.টি.ইউ.সি -র ডি.এস.পি শাখার দফ্তর ) এক  যৌথ কনভেনশনের ডাক দেওয়া হয়েছে ।
আজকের সভায় উপস্হিত ছিলেন সি.আই.টি.ইউ এর বর্ধমান জেলা কমিটির সভাপতি বিনয়েন্দ্রকৃষ্ণ চক্রবর্তী ,রথীন রায়,সন্তোষ দেবরায়,সুবীর সেনগুপ্ত সহ এইচ.এস.ই.ইউ এর ডি.এস.পি ও এ.এস.পি  শাখার নেতৃবৃন্দ ( সি.আই.টি.ইউ ),বিকাশ ঘটক,বিশ্বজিত বিশ্বাস সহ অন্যান্য (আই.এন.টি.ইউ.সি),শম্ভূ প্রামানিক,বরুন ব্যানার্জী (এ.আই.টি.ইউ.সি ),অনীত মল্লিক (টি.ইউ.সি.সি ),লোকনাথ দাস (ইউ.টি.ইউ.সি) ।
ইতিমধ্যে,গত ১৪ই ডিসেঃ কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রীর কাছে এক যৌথ প্রতিনিধি দল দেখা করে ,অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের প্রস্তাবিত বিলগ্নীকরন বাতিল , সেইলের বিশেষজ্ঞ সংস্হা ,’সেট’ এর প্রস্তাব অনুসারে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের আধুনিকীকরন-সম্প্রসারনের জন্য ১১০০ কোটি টাকার বরাদ্দ ও দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট কে ১০ মিলিয়ন টন ইস্পাত উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন  করে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যয়-বরাদ্দের দাবী জানিয়ে এক স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয় ।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর সি.পি.আই.এম বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় , পি.কে.দাস ( সম্পাদক , এস.ডবলু.এফ.ই ),সুনীল খান (দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদ), বিশ্বরূপ ব্যান্যার্জী ও বিজয় সাহা (এইচ.এস.ই.ইউ, সি.আই.টি.ইউ), বিকাশ ঘটক,বিশ্বজিত বিশ্বাস (আই.এন.টি.ইউ.সি)। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সি.আই.টি.ইউ এর সর্ব ভারতীয় সম্পাদক ও রাজ্য সভার সাংসদ তপন সেন ও কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য । খুব শীঘ্রই সেইলের চেয়ারম্যান,বিশেষজ্ঞ ও সেইলের শ্রমিক ইউনিয়ন গুলিকে নিয়ে কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রী , অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের বিষয়ে আলোচনায় বসতে ই্ছুক বলে প্রতিনিধি দল কে কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রী জানিয়েছেন ।

ইতিমধ্যে ইস্পাত জোনাল ট্রেড ইউনিয়ন সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে ,’ এ.এস.পি-ডি.এস.পি-ডি.সি.এল বাঁচাও,শিল্প বাঁচাও,রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্প বাঁচাও,দুর্গাপুর রক্ষা করো ‘ - এই দাবীতে আগামী কাল বিকালে ইস্পাতনগরীতে তিনটি পৃথক মিছিল ও আগামী ১৯ তারিখে বিকালে সিটি সেন্টার বাস স্ট্যান্ডে প্রচার কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে ।

Tuesday 13 December 2016

দুর্গাপুরের শ্রমিক ও গনতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা প্রয়াত কমরেড এস.কে.এন চৌধুরী কে চোখের জলে বিদায় জানালো ইস্পাতনগরী ।



দুর্গাপুর,১৩ই ডিসেঃ – গতকাল , দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার মেইন হাসপাতালে চিকিৎসধীন অবস্হায় প্রয়াত হলেন দুর্গাপুরের শ্রমিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা সুনীলকান্তি নারায়ন চৌধুরী । তিনি ‘ কমরেড এস.কে.এন ‘ নামেই সমাধিক পরিচিত ছিলেন । বেশ কিছুদিন ধরে ফুসফুসের ক্যান্সারে ভুগছিলেন । মৃত্যুর সময়ে তাঁর স্ত্রী,দুই কন্যা ও জামাতা বর্তমান ।
আজ সকালে, প্রয়াত কমরেড এস.কে.এন এর মরদেহ প্রথমে নিয়ে আসা হয় ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি ( মার্কসবাদী )-র দুর্গাপুর ইস্পাত জোনাল কমিটির দফ্তর ইস্পাতনগরীর আশীষ-জব্বর ভবনে। ইতিমধ্যে প্রয়াত  কমরেড এস.কে.এন এর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আশীষ-জব্বর ভবনে পৌঁছান ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি ( মার্কসবাদী )-র বর্ধমান জেলা কমিটির সম্পাদক কমরেড অচিন্ত্য মল্লিক, পঃ বঙ্গ প্রাদেশিক কৃষক সভার সম্পাদক কমরেড অমল হালদার , আভাস রায়চৌধুরী,বীরেশ্বর মন্ডল , দুর্গাপুরের প্রাক্তন সাংসদ ও বঙ্গীয় সাক্ষরতা প্রসার সমিতির রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি সেখ সাইদুল হক, বিজ্ঞান মঞ্চের রাজ্য কমিটিরি সদস্য রাম প্রণয় গাঙ্গুলী সহ অন্যান নেতৃবৃ্ন্দ । প্রয়াত কমরেড এস.কে.এন চৌধুরীর মরদেহে রক্তপতাকা দিয়ে আচচ্ছাদিত করেন কমরেড অচিন্ত্য মল্লিক ও কমরেড অমল হালদার । মাল্যদান করেন  অমল হালদার , অচিন্ত্য মল্লিক , বীরেশ্বর মন্ডল,নির্মল ভট্টাচার্য , আভাস রায়চৌধুরী,সুবীর সেনগুপ্ত , রথীন রায় , রাম প্রণয় গাঙ্গুলী সহ পার্টি ও বিভিন্ন গন-সংগঠনের নেতৃবৃন্দ । দুর্গাপুর ইস্পাত জোনাল কমিটির সম্পাদক ও দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় ( তিনি সাংগঠনিক কাজে দিল্লিতে গেছেন ) এর পক্ষেও মাল্যদান করা হয় । পরে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ ) এর অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট শাখার দফ্তর ( তিলক রোড ) ও দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট শাখার দফ্তরে ( বি.টি.রণদিভে ভবন,১নং বিদ্যাসাগর এভিন্যু ) । রক্তপতাকায় আচ্ছাদিত করেন হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ ) এর সভাপতি রথীন রায় । মাল্যদান করেন রথীন রায় , রামপঙ্কজ গাঙ্গুলী , প্রফুল্ল মন্ডল , মলয় ভট্টাচার্য , নিমাই ঘোষ সহ অন্যান্য ট্রেড ইউনিয়ন ও বিভিন্ন গন-সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং  প্রয়াত কমরেড এস.কে.এন চৌধুরীর কন্যা ও জামাতা ।
এরপরে, মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় সিটি সেন্টারে সি.আই.টি.ইউ এর বর্ধমান জেলা দফ্তরে । রক্তপতাকায় আচ্ছাদিত করেন সি.আই.টি.ইউ এর বর্ধমান জেলা কমিটির সভাপতি বিনয়েন্দ্র কৃষ্ণ চক্রবর্তী ও বংশগোপাল চৌধুরী । মাল্যদান করেন বিনয়েন্দ্র কৃষ্ণ চক্রবর্তী, বংশগোপাল চৌধুরী,বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী , মহাব্রত কুন্ডু ,পঙ্কজ রায় সরকার , গৌরাঙ্গ চ্যাট্যার্জী , বাদল মজুমদার ,শ্যামা ঘোষ , হারা সাঁই সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ । সবশেষে , তাঁর মরদেহ সেইল আবাসন অঞ্চলে তাঁর ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় । পরে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় । এর আগে ,তাঁর ইচ্ছা অনুসারে , পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর মরোণত্তোর চক্ষুদান করা হয় ।
তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করে স্ত্রী ও আত্মীয়-পরিজনদের ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি ( মার্কসবাদী )-র বর্ধমান জেলা কমিটির পক্ষ থেকে সমবেদনা জানানো হয়েছে । ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি ( মার্কসবাদী )-র দুর্গাপুর ইস্পাত জোনাল কমিটির পক্ষেও অনুরূপ শোকজ্ঞাপন করা হয়েছে ।


সংক্ষিপ্ত জীবনী : ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহন করেন প্রয়াত কমরেড এস.কে.এন চৌধুরী । কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুল ও পরে আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশন থেকে বিদ্যালয় শিক্ষা সমাপ্ত করেন ও ১৯৬১ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক হন ।
১৯৬২ সালে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টে সিনিয়ার অপারেটিভ ট্রেনী হিসেবে যোগদান করেন ও রিসার্চ এ্যান্ড কন্ট্রোল ল্যাব ইন্সপেক্টার হিসাবে কর্মজীবন অতিবাহিত করেন । এক্সিকিউটিভ হওয়ার প্রমোশন প্রত্যাখ্যান করেন ।
তাঁর পরিবার বামপন্হী আন্দোলন তথা পার্টির সাথে যুক্ত ছিল । তাঁর দাদা সুকোমল কান্তি চৌধুরী ছিলেন রেল শ্রমিক আন্দোলনের অগ্রনী নেতা ।
১৯৬৫ সালে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান প্রতক্ষ্য করেন ও ঐ বৎসরে কারখানার কনজিউমার কো-অপঃ এর প্রথম নির্বাচনেই ডাইরেক্টর নির্বাচিত হন ।
১৯৬৬ সালে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের শ্রমিকদের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন এর এ.এস.পি শাখার প্রতিষ্ঠার অন্যতম রূপকার ছিলেন তিনি । ২০০২ সালে কর্মজীবন থেকে অবসরগ্রহনের সময় তিনি হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন এর কার্যকরী সভাপতি ছিলেন । সি.ই.টি.ইউ এর বর্ধমান জেলার সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য হিসেবেও কাজ করেছেন ।
১৯৬৮ সালে তিনি পার্টি সভ্যপদ লাভ করেন । পার্টির প্রাক্তন জোনাল কমিটির সদস্য ও আমৃত্যু আঞ্চলিক কমিটির সদস্য ছিলেন ।
১৯৬৯ সালে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের ২য় ওয়ার্কর্স কমিটির নির্বাচনে জয়ী হয়ে সম্পাদকের দায়িত্ব বহন করেন ।
১৯৭০ সালে , সি.ই.টি.ইউ এর প্রতিষ্ঠা সম্মেলনে প্রতিনিধিত্ব করেন এবং ১৯৮২ সালে স্টিল ওয়ার্কর্স ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠা সম্মেলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন । সম্মেলনে প্রকাশিত ‘ হুইদার স্টিল ইন্ডাষ্ট্রী ‘নামক সংকলনটি প্রয়াত কমরেড মৃণাল ব্যানার্জীর সাথে যৌথ সম্পাদনা করেন ।
দেশের ইস্পাত শিল্পের এন.জে.সি.এস ও স্ট্যান্ডর্ডাইজেসন কমিটিতে বিকল্প সদস্য ছিলেন ।
১৯৯০ সাল থেকে সাক্ষরতা আন্দোলনের সাথে যুক্ত থেকে রাজ্য কাউন্সিলের সদস্য হয়েছিলেন এবং মৃত্যুকালে ‘ বঙ্গীয় সাক্ষরতা প্রসার সমিতি’-র বর্ধমান জেলা কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন ।
বিগত দু-দশক ধরে বিজ্ঞান আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন ।
২০১৩ সালে , তাঁর রচিত  ,” এ.এস.পি-র হত্যাকান্ড : তদন্তে ঐ শিল্পের এক মজুর “ বইটি অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট কে তিলে তিলে ধ্বংস করার চক্রান্ত কে অত্যন্ত বলিষ্ঠ ভাবে উন্মোচিত করে ।
অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বাঁচানোর লড়াই এ তাঁর অবদান অপরিসীম । ২০০২ সালে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট কে জিন্দালদের বেঁচে দেওয়ার চক্রান্ত রুখতে ঐতিহাসিক গেট-ধর্ণায় তাঁর অসামান্য ভূমিকা , আজকে যখন পুনরায় অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বাঁচানোর যে লড়াই তীব্রতর হচ্ছে , তাকে অবশ্যই প্রেরণা যোগাবে ।