Sunday 30 April 2017

আশীষ-জব্বারের শহীদভূমি ইস্পাতনগরী সাম্প্রদায়িক মেরুকরনের চেষ্টার বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখল ।



দুর্গাপুর,৩০ এপ্রিল – রাত পোহালেই ঐতিহাসিক মে দিবস । ইস্পাতনগরীর রাস্তায় রাস্তায় লাল ঝাণ্ডার মিছিলের চিরপরিচিত ছবি গত ছয় বছর ধরে শত অপচেষ্টা করে মুছে ফেলা যায় নি । দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় কর্মরত ৩৫০০ বেশী ঠিকা শ্রমিক কে সি.আই.টি.ইউ করার ‘ অপরাধে ‘ কাজ থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে । পার্টি নেতৃত্ব ও কর্মীদের একের পর এক মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে । তৃণমূলী দুষ্কৃতিদের নৃশংস হামলা শিকার হয়েছেন পার্টি নেতৃত্ব-কর্মীবৃন্দ । মহিলারাও এই হামলা থেকে রক্ষা পায় নি । দখল বা ভাঙ্গচূড় করা হয় একাধিক পার্টি-ইউনিয়ন-গন সংগঠনের অফিস । কিন্তু এত করেও রাজ্যের শাসক তৃণমূল দল ইস্পাতনগরীর বুকে লাল ঝান্ডা কে দমাতে পারে নি । ২০১১ সালের পর যখনই ‘ নির্বাচন ‘ অনুষ্ঠিত হয়েছে , তখনই লাল ঝাণ্ডা কে বেছে নিতে মানুষ ভুল করেনি । ২০১১ তৃণমূল সরকার আসার পরে পর পর দু বার দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় স্হায়ী শ্রমিকদের ইউনিয়ন স্বীকৃতি নির্বাচনে জয়ী হয়েছে হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সি.আই.টি.ইউ ) । ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাম,গনতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ প্রার্থীরা দুর্গাপুরের উভয় কেন্দ্রেই বিপুল ভোটে জয়ী হয় । আজ যখন কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকারের হিংস্র আক্রমনে দুর্গাপুরের শিল্পাঞ্চল বিপন্ন,বিপন্ন মানুষের রুটি-রুজি , তখন লাল ঝান্ডা উঁচিয়ে দুর্গাপুরের মানুষ পাল্টা আন্দোলন গড়ে তোলার হিম্মৎ দেখিয়েছে । গড়ে তুলেছে শক্তিশালী যৌথ আন্দোলন । শ্রমিকের খুনে-রাঙ্গা আশীষ-জব্বারের শহীদভূমি ইস্পাতনগরী জন্মলগ্ন থেকে শুরু করে বর্তমানে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট ও দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা বাঁচানোর  ‘ মহাকাব্যিক-লড়াই ‘ পর্যন্ত সাক্ষী রয়েছেন যে, ধর্মনিরপেক্ষতার মহান আদর্শ কে পাথেয় করেই মেহেনতী মানুষ-গনতন্ত্র প্রিয় মানুষের ঐক্য,দুর্গাপুরের মানুষ রুটি-রুজির লড়াই এর জয় ছিনিয়ে আনতে পারে । তাই রুটি-রুজির স্বার্থে সাম্প্রদায়িক-বিভেদকামী শক্তির বিরুদ্ধে কড়া অবস্হান গ্রহন করতে দুর্গাপুর দ্বিধা করে না ।
কিন্তু এরমধ্যে সারা দেশের সাথে রাজ্যে সাম্প্রদায়িক শক্তি বিনষ্ট করার জন্য হিন্দুত্ব ফ্যাসিবাদী শক্তি যে প্রয়াস নিয়েছে,রাজ্যে ফ্যাসিবাদী কায়দায় শাসন চালাতে বিশ্বাসী তৃণমূল দল সেই প্রয়াসে গোপন ও প্রকাশ্য ঠিকাদারের ভূমিকা পালন করছে । ইস্পাতনগরীতে রামনবমীর দিনে আরএসএস এর সশস্ত্র মিছিলে অনেক পরিচিত তৃণমূলীদের অংশগ্রহন , সাম্প্রদায়িক মেরুকরনে আরএসএস ও তৃণমূলের চক্রান্ত সামনে এনেছে । ইস্পাতনগরীর মানুষ সম্প্রীতি রক্ষায় দল-মত নির্বিশেষ জোট বাঁধছেন ।

 তাই,আজ বিকালে, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি ( মার্কসবাদী )-র দুর্গাপুর ইস্পাত জোনাল কমিটির পক্ষ থেকে ধর্মীয় মেরুকরনের বিরুদ্ধে ও জাতীয় ঐক্য,সংহতি এবং সম্প্রীতির রক্ষার জন্য বাম-গনতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ কে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আশীষ মার্কেট থেকে আশীষ-জব্বর ভবন পর্যন্ত এক বিশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হলে , বিপুল সংখ্যায় মানুষ মিছিলে যোগদান করেন । ঝড়-বৃষ্টি-প্রবল মেঘ গর্জন উপেক্ষা করে মিছিল অনুষ্ঠিত হয় এবং এই মিছিল ইস্পাতনগরীতে সাম্প্রদায়িক মেরুকরনের চেষ্টার বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি দেয় এবং গতকাল শিলিগুড়িতে অশোক ভট্টাচার্যের উপর তৃণমূলের হামলার বিরুদ্ধে তীব্র ধিক্কার জানায় ।






Saturday 29 April 2017

মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় প্রান গেল একই পরিবারের চার সদস্যের ।



দুর্গাপুর,২৯শে এপ্রিল : গতকাল মধ্য রাতে ২ নং জাতীয় সড়কের অন্ডালের কাছে এক ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনায় ইস্পাতনগরীর রাণা প্রতাপ রোডের ( ২০/২১ ও ২০/২৩ ) বাসিন্দা একই পরিবারের চার সদস্য মারা গেছেন । প্রানে বেঁচেছেন একজন । দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার ব্লাষ্ট ফার্নেসের স্হায়ী  শ্রমিক জীবন মুখার্জী ও তার পরিবারের ৪ সদস্য মারুতি ভ্যানে করে পুরুলিয়ায় এক বিয়ে বাড়ীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রাতে ফিরছিলেন দুর্গাপুরে । পথে অন্ডালে ট্র্যাফিক জ্যামে পড়ে গাড়ীটি একটি লোহার রড বোঝাই ট্রেলারের পেছনে দাঁড়ালে , পিছন থেকে দ্রুতগতিতে আসা অপর একটি ট্রেলার সজোরে মারুতি ভ্যানটি কে ধাক্কা মারে এবং ধাক্কার চোটে সামনে দাঁড়ানো লোহার রড বোঝাই ট্রেলারের পেছনে মারুতি ভ্যানটি ঢুকে যায় । এর ফলে ঘটনাস্হলে ঐ চার জন মারা যান । গুরুতর জখম হলেও প্রানে বেঁচেছেন জীবন মুখার্জী । চিকিৎসাধীন জীবন মুখার্জীর অবস্হা আপাতত স্হিতিশীল । মারা গেছেন জীবন মুখার্জীর মা ভক্তি মুখার্জী ( ৭০ ), ভাই মিলন মুখার্জী ( ৪১), স্ত্রী কনিকা মুখার্জী ( ৪৪ ) ও ছেলে সৌরেন মুখার্জী ( ১৪ )।

দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক জ্ঞাপন করেছেন ও ক্রমবর্ধমান পথ দুর্ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ।


ভক্তি মুখার্জী 


মিলন মুখার্জী 


সৌরেন মুখার্জী


Thursday 27 April 2017

ইস্পাতনগরীতে নারী শহিদ দিবসে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য মিছিল করলেন মহিলারা ।



দুর্গাপুর,২৭শে এপ্রিল : সারা ভারত গনতান্ত্রিক মহিলা সমিতি-র ইস্পাত জোনাল কমিটির উদ্যোগে  ইস্পাতনগরীতে নারী শহিদ দিবস পালিত হল । এই উপলক্ষ্যে,বি.টি.রণদিভে ভবনে সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন শুভ্রা গাঙ্গুলী । শহীদবেদীতে মাল্য দান করেন শুভ্রা গাঙ্গুলী , আল্পনা চৌধুরী , মিতা ভট্টাচার্য , রাজলক্ষী দে প্রমূখ । এর পরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রক্ষার আহ্বান জানিয়ে মহিলাদের মিছিল বি-জোনের বিভিন্ন রাস্তা পরিক্রমা করে চন্ডিদাস  বাজারে শেষ হয় । সেখানে পথসভায় বক্তব্য রাখেন আল্পনা চৌধুরী ।


Wednesday 26 April 2017

অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বাঁচানোর লড়াই আরও জোরদার ও প্রসারিত করার আহ্বান ।



দুর্গাপুর,২৬শে এপ্রিল : প্রবলতম শ্রমিক আন্দোলনের মুখে , রাষ্ট্রায়ত্ব ইস্পাত উৎপাদক সংস্হা সেইলের অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট সহ সালেম ও ভদ্রাবতী কারখানা বেসরকারী হাতে বিক্রীর প্রক্রিয়া ধাক্কা খেয়েছে, কারন কোন খদ্দের কেনার জন্য এগিয়ে আসে নি । তাই কেন্দ্রীয় সরকার ২রা মে পর্যন্ত টেন্ডারের সময়সীমা বৃ্দ্ধি করেছে । কিন্তু, আজ  ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের যৌথ মঞ্চের ডাকে , চড়া রোদ কে উপেক্ষা করে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের  মেইন গেটে সমাবেশ বুঝিয়ে দিল যে  ইস্পাত শ্রমিকরা বেসরকারীকরনের বিরুদ্ধে লড়াই এ বিন্দুমাত্র শৈথিল্য দেখাতে রাজি নয় । একই কথার প্রতিধ্বনি শোনা গেল নেতৃবৃন্দের বক্তব্যে । দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় গত ১১ই এপ্রিল বেসরকারীকরনের বিরুদ্ধে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের  ঐতিহাসিক ধর্মঘটের জন্য ইস্পাত শ্রমিকদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন যে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বাঁচানোর লড়াই কে কেন্দ্র করে যে অভূতপূর্ব শ্রমিক ঐক্য তৈরি হয়েছে । এ যাবৎ ৭২ টি যৌথ কর্মসূচী পালিত হয়েছে ।  যৌথ আন্দোলনে কে আরও প্রসারিত করতে হবে । যারা এখনও যৌথ আন্দোলনে যুক্ত হননি,তাঁদের প্রতি তিনি কারখানা বাঁচানোর আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন জানান । আই.এন.টি.ইউ.সি-র বর্ধমান জেলার সভাপতি ও ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের যৌথ মঞ্চের যুগ্ম-আহ্বায়ক বিকাশ ঘটক বলেন যে কারখানা বাঁচানোর আন্দোলনের ব্যাপকতা ধর্মঘটের বিরোধীদেরও মন ছুঁয়েছে । অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট ও রাষ্ট্রায়ত্ব  সংস্হা ছাড়া ডঃ বিধানচন্দ্র রায়ের মানস-নগরী দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল বেঁচে থাকা অসম্ভব । তাই অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বাঁচানোর লড়াই এর পাশে শিল্পী-ক্রীড়াবিদ-ব্যবসায়ী সহ সমাজের সমস্ত অংশের মানুষ এসে দাঁড়িয়েছেন । সিআইটিইউ -র বর্ধমান জেলার সভাপতি বিনয়েন্দ্র কিশোর চক্রবর্তী সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে শ্রমিক আন্দোলনের ব্যাপকতা দেখে নানা বিভ্রান্তিকর প্রচার চালানোর যে চেষ্টা চলছে সে বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য ইস্পাত শ্রমিকদের কাছে আবেদন জানান । বিএমএস এর বক্তব্য খন্ডন করে তিনি বলেন অতীতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী  রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী কে চিঠি লিখে আশ্বাস দেওয়ার অব্যবহিত পরেই এম.এ.এম.সি কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয় । সাম্প্রতিক কালে , কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রীয় প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার হিন্দুস্হান কেবলস্ বন্ধ করে দিয়েছে । তাই কারখানা বাঁচানোর স্বার্থে , বিএমএস এর উচিৎ যৌথ আন্দোলনে সাথে যুক্ত হওয়া । একই সাথে তিনি রাজ্য সরকারের নীরবতার সমালোচনা করেন ।  স্টিল ওয়ার্কার্স ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (সিআইটিইউ )-এর সম্পাদক পি.কে.দাস বলেন রাষ্ট্রায়ত্ব  সংস্হা গুলিকে  মোদী সরকারের বেসরকারীকরন-বিলগ্নীকরন করার প্রক্রিয়া আই.এম.এফ-বিশ্ব ব্যাঙ্ক নির্দেশিত তৃতীয় বিশ্বের দেশে ‘অবশিল্পায়ন’-এর চক্রান্তের অঙ্গ । রাষ্ট্রায়ত্ব  সংস্হা গুলিকে  বাঁচাতে এবং লাভজনক সংস্হায় পরিনত করার জন্য শ্রমিক আন্দোলন কে নীতি-পরিবর্তনের লড়াই গড়ে তুলতেই হবে । এছাড়াও আজকের সমাবেশে বক্তব্য রেখেছেন অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট ও দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের শ্রমিক নেতৃবৃ্ন্দ ।

সমাবেশ থেকে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে কারখানা বন্ধ ও রাষ্ট্রায়ত্ব  সংস্হা বেসরকারীকরন-বিলগ্নীকরন করার বিরুদ্ধে একটি বিশাল নাগরিক কনভেনশন অনুষ্ঠিত করার কথা ঘোষনা করা হয় । 






Tuesday 25 April 2017

ইস্পাতনগরীর পরিকল্পিত পরিষেবা ব্যবস্হা মজবুত করার দাবী জোড়ালো হচ্ছে ।



দুর্গাপুর,২৫শে এপ্রিল : দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার অধীনে থাকা ইস্পাতনগরীর জল-বিদ্যুৎ-পয়োঃপ্রনালী ব্যবস্হা গুরুতর সমস্যার সামনে পড়ছে । গত ১৫ দিন ধরে ইস্পাতনগরীর এস.এন.ব্যানার্জী রোডের বিস্তীর্ন অঞ্চলের কোয়ার্টারের অধিবাসীরা জলের সরবরাহের অভাবে ভয়াবহ অবস্হার সম্মুখীন হন । পানীয় জলের পাইপ ফুটো হয়ে ম্যানহোলের জল সাথে মিশে যায় । দূষিত জল পান করে ঐ অঞ্চলের কোয়র্টারের বহু মানুষ অসুস্হ হয়ে পড়েন । ১৪ জন কে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় । খবর পেয়ে স্হানীয় বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় এলাকায় ছুটে যান । দলে দলে এলাকার মানুষ বিশেষ করে বাড়ীর মহিলরা  বিধায়কের কাছে এসে তাদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেন । বিধায়ক কালবিলম্ব না করে ইস্পাত কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলার জন্য হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( সিআইটিইউ ) এর নেতৃবৃন্দ এর সাথে যোগাযোগ করেন । এরপরেই কর্তৃপক্ষের সাথে ইউনিয়ন সমূহের  নেতৃবৃন্দে  আলোচনা শুরু হয় । পরিস্হিতি মোকাবিলায় জরুরী ব্যবস্হা গ্রহনের জন্য ইউনিয়ন সমূহের নেতৃবৃন্দ দাবী জানায় । কর্তৃপক্ষ দাবী মেনে জলের সরবরাহের ট্যাঙ্ক্যারের সংখ্যা বৃদ্ধি করে এবং পানীয় জলের সরবরাহকারী পাইপ লাইন ঠিক করার জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ ও লোকবল নিয়োগ করে দূষনের জায়গা খুঁজে পায় ও মেরামতি শুরু করেছে । শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গেছে মেরামতির কাজ শেষ হওয়ার মুখে । এ দিকে ইউনিয়নের সাথে কোন আলোচনা ছাড়াই কর্তৃপক্ষ একতরফা ভাবে টাউনশীপে দিনে একবার জল সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে । কর্তৃপক্ষের কাছে  ইউনিয়নের পক্ষে অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবীও জানানো হয়েছে বলে হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন এর পক্ষে বিশ্বরূপ ব্যানার্জী জানিয়েছেন । এছাড়াও তিনি , সুষ্ঠ নাগরিক পরিষেবার জন্য ও  ইস্পাতনগরীর জল-বিদ্যুৎ-পয়োঃপ্রনালী ব্যবস্হা উন্নতির জন্য , কর্তৃপক্ষ কে উপযুক্ত ব্যবস্হা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন ।

Monday 24 April 2017

দুর্গাপুরের ঐতিহ্যশালী এন.পি.টি.আই এর পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং এর বি-টেক কোর্স তুলে দিতে চায় মোদি সরকার ।



দুর্গাপুর,২৪শে এপ্রিল : দুর্গাপুরের রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্পের সাথে সাথে সরকারী শিক্ষা ব্যবস্হা এখন মোদি সরকারের আক্রমনের শিকার হতে চলছে । এন.পি.টি.আই ( ন্যাশানাল পাওয়ার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ) থেকে এক সার্কুলার (সার্কুলার নং – এনপিটিআই/ইআর/বি.টেক(পিডব্লুই)/অ্যাডমিন ২০১৭/৫৮০২-০৫,তাং-২২/০২/২০১৭) জারি করে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে এন.পি.টি.আই এর পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং এর বি-টেক কোর্সে ছাত্র ভর্তি পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
এন.পি.টি.আই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ দফ্তরের অধীনস্ত একটি সংস্হা । দেশের বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের জন্য ইঞ্জিনিয়ারদের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষনের জন্য অন্যতম সংস্হা হিসাবে পরিচিত । ২০০২ সাল থেকে এন.পি.টি.আই তে পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং এর বি-টেক কোর্স  চালু হয় । প্রতি বছর জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৬০ জন ছাত্র এন.পি.টি.আই তে পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং এর বি-টেক কোর্সে ভর্তি হয় । এ যাবৎ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের থেকে কৃতিত্বের সাথে পাশ করে ১০টি ব্যাচের ইঞ্জিনিয়ারা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংস্হায় কাজ করছেন ।

এই অবস্হায় , ইঞ্জিনিয়ারিং এর বি-টেক কোর্স টি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তুমুল ছাত্র-বিক্ষোভ শুরু হয়েছে । ছাত্ররা দাবী করেছেন অবিলম্বে বি-টেক কোর্স বন্ধের সার্কুলার প্রত্যাহার করে শিক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্হ এ.আই.সি.টি.ই-এর কাছে কোর্স টি চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন নিতে হবে । তারা এই সংক্রান্ত বিষয়ে মুম্বাই হাইকোর্টের জারী করা স্হগিতাদশ মেনে চলার দাবীও করেছেন । রাজ্য সরকারকে প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ করার জন্য ছাত্ররা আবেদন করেছেন । এদিকে ছাত্রদের দাবীর সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় , দুর্গাপুর ( পশ্চিম ) এর বিধায়ক বিশ্বনাথ পারিয়াল এবং দুর্গাপুর এর সাংসদ মমতাজ সংঘমিত্রা । সার্কুলার প্রত্যাহার ও কোর্স টি চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপের দাবী জানিয়ে  বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী , কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ ও শিক্ষা মন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন । 




Sunday 23 April 2017

অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বাঁচাতে আরও বৃহত্তর লড়াই এর প্রস্তুতি শুরু ।



দুর্গাপুর,২৩ এপ্রিল : অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বাঁচাতে আরও বৃহত্তর লড়াই এর প্রস্তুতি শুরু করে দিল ট্রেড ইউনিয়ন সহ অন্যান্য গন-সংগঠন সমূহের যৌথ মঞ্চ । আজ অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের স্টেডিয়ামের প্যাভেলিয়নে এক যৌথ সভায় , অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের বেসরকারীকরনের বিরুদ্ধে ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের যৌথ মঞ্চ এর ডাকে গত ১১ই এপ্রিল,অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টে ধর্মঘট সর্বাত্বক করার জন্য অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের শ্রমিক ও তাদের পরিবারবর্গ  কে নেতৃবৃন্দ অভিনন্দন জানান । একই সাথে , নিরঙ্কুস জনমত উপেক্ষা করে  এখনও অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের বেসরকারীকরনের  প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য মোদি সরকারের তীব্র সমালোচনা করা হয় । এ দিনের সভায় আগামী কর্মসূচী স্হির হয়েছে । ঠিক হয়েছে , আগামী দিনে দুর্গাপুরের সমস্ত কারাখানার প্রতিনিধিদের নিয়ে কারখানা বন্ধ ও বেসরকারীকরনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের রূপরেখা ঠিক করতে এক বিশাল যৌথ কনভেনশনের আয়োজন করা হবে । এছাড়া,আগামী ২৬শে এপ্রিল  অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের মেইন গেটে যৌথ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে । আজকের সভায় উপস্হিত ছিলেন বিনয়েন্দ্র কিশোর চক্রবর্তী, বিকাশ ঘটক,অনীত মল্লিক,বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী,রবি ঠাকুর,বাদল চক্রবর্তী,মহাব্রত কুন্ডু,সুবীর সেনগুপ্ত প্রমূখ নেতৃবৃন্দ । সভাপতিত্ব করেন দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় ।


প্রয়াত হলেন পার্টি-দরদী নিমাই ঘোষ ।



দুর্গাপুর,২৩শে এপ্রিল : গতকাল ভোরে,সেপকো টাউনশীপে নিজের বাসভবনে   প্রয়াত হলেন পার্টি-দরদী নিমাই ঘোষ ।মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়ছিল ৭৫ ।
  মৃত্যুকালে তিনি একমাত্র কন্যা ও নাতি কে রেখে গেছেন । বাসভবনে গিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান পার্টির ইস্পাত জোনালের সম্পাদক সন্তোষ দেবরায় সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ । এর পরে, তাঁর মরদেহ  বি.টি.রণদিভে  ভবনে নিয়ে আসা হলে ,শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের পক্ষে বিশ্বরূপ ব্যানার্জী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ । তার মৃত্যুতে পার্টির ইস্পাত জোনালের সম্পাদক সন্তোষ দেবরায় গভীর শোকপ্রকাশ করে পরিবারের প্রতি শোক জ্ঞাপন করেছেন ।

সংক্ষিপ্ত জীবনী : দেশভাগের পরে অধুনা বাংলাদেশের যশোর থেকে বার্ণপুরে এসে বসবাস শুরু করেন । বামপন্হী পরিারের সদস্য কলা বিভাগে স্নাতক প্রয়াত নিমাই ঘোষ  ১৯৬০ সালে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় শ্রমিক হিসাবে কাজে যোগ দেন এবং হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের জন্মলগ্ন থেকে যুক্ত ইউনিয়নের সাথে যুক্ত  ছিলেন । ইউনিয়নের সহকারী-সম্পাদক ও সহ-সম্পাদকের পদে দায়িত্ব বহন করেছেন । ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষের পদের দায়িত্ব  দীর্ঘদিন ধরে দক্ষতার সাথে সামলেছেন ।  ১৯৭০ সালে  পার্টি সভ্যপদ লাভ করেন । পার্টির আঞ্চলিক কমিটির সদস্য ছিলেন । বিগত শতাব্দীর ৭০-র দশকের কালো দিন গুলিতে,তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বারে বারে সন্ত্রাসের শিকার হয়েছিলেন । সেক্টর গন-সংগঠনেও তাঁর উল্ল্যেখযোগ্য ভূমিকা ছিল ।তিনি অত্যন্ত দক্ষ শ্রমিক ছিলেন । ২০০২ সালে কাজের থেকে অবসর গ্রহন করেন । পরবর্তীকালে সমবায় আন্দোলন  সাথে যুক্ত ছিলেন । 

Saturday 22 April 2017

ইস্পাতনগরীতে কমরেড লেনিনের ১৪৮-তম জন্মবার্ষিকী পালিত হল ।



দুর্গাপুর,২২শে এপ্রিল : আজ , ইস্পাতনগরীর আশীষ-জব্বর ভবনে , ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি ( মার্কসবাদী )-র ইস্পাত জোনাল কমিটির পক্ষ থেকে কমরেড লেনিনের ১৪৮-তম জন্মবার্ষিকী পালিত হল । এই উপলক্ষ্যে কমরেড লেনিনের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন জোনাল সম্পাদক ও পার্টির বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য সন্তোষ দেবরায় ,নির্মল ভট্টাচার্য ,সুবীর সেনগুপ্ত সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ । 







Tuesday 18 April 2017

বাম পরিচালিত দুর্গাপুর মহিলা কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক রাজ্য সরকারের সমবায়শ্রী পুরস্কার পেয়ে নজীর গড়ল ।



দুর্গাপুর,১৮ ই এপ্রিল : সারা রাজ্যের ৪৩টি আরবান কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের মধ্যে উৎকর্ষতা বিচারে ৩য় সেরা ব্যাঙ্ক এর মর্যাদা পেয়ে রাজ্য সরকারের সমবায়শ্রী পুরষ্কারে ভূষিত হল বাম পরিচালিত দুর্গাপুর  মহিলা কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক । গত ১১ই এপ্রিল কোলকাতার নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সমবায় মেলায়    , ব্যাঙ্ক এর চেয়ারম্যান বাণী চক্রবর্তীর হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম । উপস্হিত ছিলেন রাজ্যের সমবায় দফ্তরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
মাত্র সাড়ে বারো লক্ষ টাকা মূলধন কে সম্বল করে ১৯৯৯ সাল থেকে পথচলা শুরু করে প্রথম থেকে বাম পরিচালিত দুর্গাপুর  মহিলা কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক । ব্যাঙ্কের সদস্য থেকে পরিচালন সমিতি সবাই মহিলা । একজন পুরুষ কর্মী ছাড়া ব্যাঙ্কের অন্য পাঁচ কর্মী ও অ্যাকাউন্টস অফিসারও মহিলা । ব্যাঙ্কের গ্রাহক হওয়ার ক্ষেত্রে পুরুষদের বাধা নেই ।
     ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টস অফিসার রূপা ব্যানার্জী জানান যে বর্তমানে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অডিটে এ-গ্রেড প্রাপ্ত ও বর্তমানে কোর ব্যাঙ্কিং সিস্টেমে পরিচালিত দুর্গাপুর  মহিলা কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক এর কার্যকরী মূলধন ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে  ১৩ কোটি টাকা । বর্তমান বছরে তা আরও বাড়বে । ব্যাঙ্কের বর্তমান গ্রাহক ১২০০০ এবং সদস্য সংখ্যা ৭০০০ হাজার ছাড়িয়েছে । সম্পূর্ন ভাবে মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত ব্যাঙ্কের একমাত্র শাখা সিটি সেন্টারের দফ্তরটি পুরোপুরি কম্পুটারাইজড ও শীততাপ নিয়ন্ত্রিত । বর্ধিত গ্রাহক সংখ্যার দিকে নজর দিয়ে, পরিচালন সমিতি খুব শীঘ্রই ব্যাঙ্কের অন্য একটি শাখা খুলতে চলেছে বলে জানালেন ব্যাঙ্ক চেয়ারম্যান বাণী চক্রবর্তী । তিনি জানালেন যে দুর্গাপুর সহ অন্ডাল থেকে বুদবুদ পর্যন্ত অঞ্চলে নারীদের জীবন-জীবিকা উন্নয়নে ব্যাঙ্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে চলেছে এবং এই ভূমিকা আরও প্রসারিত করার জন্য পরিচালন সমিতি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ । এ যাবৎ কাল ব্যাঙ্ক ব্যবসা- বানিজ্য ও পরিষেবা ক্ষেত্রে মহিলা উদ্যোগ গড়ে তোলার  জন্য সাড়ে চার হাজারের বেশী মহিলা কে ঋন দিয়েছে । ব্যাঙ্কের নিজস্ব স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সংখ্যা ১৫০ ছাড়িয়েছে । একই সাথে ঋন পরিশোধের ক্ষেত্রেও বিশেষ সাফল্য দেখিয়েছে ব্যাঙ্ক ।
প্রসঙ্গতঃ,ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির বিগত নির্বাচনের সময় তৃণমূল ভয়াবহ আক্রমন চালায় । কিন্তু মহিলার অতুলনীয় প্রতিরোধ করে সব কটি আসনেই বাম প্রার্থীদের জয়ী করেন । এই নির্বাচন কে ঘিরে তৃণমূলী দুষ্কৃতিরা শহীদ বিমল দাসগুপ্ত ভবনে হামলা চালায় ও  বিপ্রেন্দু  চক্রবর্তী সহ কয়েক জন পার্টি নেতা কে মিথ্যা মামলায় জড়ায় ।
কিন্তু আজ সেই বাম পরিচালিত দুর্গাপুর  মহিলা কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক উৎকর্ষতায় রাজ্য সরকারের স্বীকৃতি আদায় করে নজীর গড়ল  ।



Sunday 16 April 2017

ভয় নয়,ভীতি নয়, আমাদের এগোতেই হবে – অঞ্জু কর



দুর্গাপুর,১৬ই এপ্রিল – আজ দুর্গাপুরের বেনাচিতির আনন্দধারা ভবনে প্রয়াত পার্টি নেত্রী গীতা চ্যাটার্জীর স্মরনসভা এ কথা বলেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যা অঞ্জু কর । গত ৩রা এপ্রিল পার্টির সর্বক্ষনের কর্মী ও পার্টির দুর্গাপুর ২ পশ্চিম জোনাল কমিটির প্রাক্তন সদস্যা গীতা চ্যাটার্জীর জীবনাবসান হয় । বিগত শতাব্দীর ৬০’ দশকে স্বামীর কর্মসূত্রে দুর্গাপুরে আসেন এবং ইস্পাতনগরীর ৬০-৭০ এর দশকে উত্তাল দিনগুলিতে প্রথমে স্বামীর সাথে গণসংগীত শিল্পী হিসেবে গন-আন্দোলনের সাথে যুক্ত হলেও পরে দুর্গাপুর তথা বর্ধমান জেলার অন্যতম মহিলা সংগঠকে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন । শিশু শিক্ষা প্রসার ও মহিলা সমবায় ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠায় তাঁর অন্যন্য অবদান ছিল । ১৯৭৩ সালে সন্ত্রাসের কালো দিনে তিনি পার্টি সভ্যপদ লাভ করেন । সেই কথা স্মরন করিয়ে দিয়ে  অঞ্জু কর বলেন সংসারের অসম্ভব প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও প্রয়াত গীতা চ্যাটার্জী পার্টির জন্য কঠিনতম দিনে অসম্ভব সাহস ও আত্মপ্রত্যয়ের সাথে পার্টি কে এগিয়ে নিয়ে গেছেন । এই শিক্ষা পার্টি কর্মীদের আত্মস্হ করে আজকের জটিল পরিসহিতির মধ্যে জনগনের মাঝে গিয়ে পার্টির কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে । আজ পঃ বঙ্গে কৃষকেরা ফসলের দাম থেকে বঞ্চিত হয়ে আত্মহত্যা করছে,শ্রমিকরা কাজ হারিয়ে পথে বসছেন,রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্প তুলে দেওয়া হচ্ছে,নতুন শিল্প আসছে না,বেকার যুবকদের কাজে সুযোগ নেই ।গনান্ত্রিক অধিকার,শ্রমিকদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে । রেশনিং ব্যবস্হা তুলে দেওয়া হচ্ছে । ভয়াবহ আক্রমন শানিত হচ্ছে মহিলাদের উপর । মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর আমলে নারী ও শিশু পাচারে এক নম্বর পঃ বঙ্গ । অ্যাসিড হামলার শিকার মহিলারা  সুপ্রীম কোর্ট নির্দশিত ক্ষতিপূরন পর্যন্ত রাজ্য সরকারের কাছে পায় নি । তৃণমূল সরকারের প্রত্যক্ষ্য মদতে জমি-লুঠ চলছে । মানুষ রুখে দাঁড়াচ্ছেন । ভাঙ্গর,ভাবা দিঘি ও আউসগ্রাম প্রতিরোধের পথ দেখাচ্ছে । অন্যদিকে তৃণমূলের দোসর বিজেপি মানুষের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন,শ্রেনী-ঐক্য ভাঙ্গতে ধর্মের নামে বিভাজনের কৌশল নিয়েছে । সংবিধান এর বিরু্ধচারন করে রাষ্ট্র-সরকার কে ধর্মীয় রূপ দিতে চাইছে । তৃণমূল ও বিজেপি-র এই যুগপৎ ভয়ংকর আক্রমনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে । পার্টির উপরেও ভয়াবহ সন্ত্রাস চালানো হচ্ছে । কিন্তু কমিউনিষ্টরা অন্য ধাতুতে গড়া । শত বাঁধা অতিক্রম করে পার্টি এগিয়েছে , জনগনের অধিকার প্রতিষ্ঠায়। আজও এগোবেই । সেই পথই দেখিয়েছেন প্রয়াত গীতা চ্যাটার্জীর মত সহজ-সরল জীবন ধারায় বিশ্বাসী ,কিন্তু লক্ষ্য প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হাজার হাজার পার্টি কর্মী । তাদের মত লক্ষ্যে অবিচল হওয়ার জন্য তিনি আহ্বান জানান ।

 এছড়াও ,আজকের সভায় বক্তব্য রাখেন মহাদেব পাল,বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী,বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় ,মহিলা নেত্রী সাধনা মল্লিক ও রথীন রায় ।












Tuesday 11 April 2017

ধর্মঘট লিখেছে নয়া ইতিহাস ……


বেসরকরীকরনের করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবীতে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট-সালেম –ভদ্রাবতী ইস্পাত কারখানায় ধর্মঘট সর্বাত্বক : সমর্থনে সেইল জুড়ে ২ ঘন্টার বিক্ষোভ-কর্মবিরতি ।






দুর্গাপুর,১১ই এপ্রিল –  মোদি সরকারের  গালভরা নাম  ‘স্ট্র্যাটেজিক সেলে’-র আড়ালে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘নবরত্ন’ মর্যাদাপ্রাপ্ত  ইস্পাত উৎপাদক সংস্হা স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড ( সেইল) এর বিশেষ ইস্পাত প্রস্তুতকারি সংস্হা দুর্গাপুরের অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট, তামিলনাড়ুর  সালেম ও কর্নাটকের  ভদ্রাবতী ইস্পাত  কারখানা কে বেসরকরীকরনের করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবীতে , আজ অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট-সালেম –ভদ্রাবতী ইস্পাত কারখানায় সর্বাত্বক ধর্মঘট হয় । ধর্মঘটের সমর্থনে সেইলের ইন্টিগ্রেডড বৃহৎ কারখানা দুর্গাপুর ইস্পাত সহ বার্ণপুরে ইস্কো, ভিলাই,বোকারো ,বোলানি-কিরিবুরু-মেঘতাবুরু মতন প্রত্যন্ত অঞ্চলে খনিগুলি সহ বিভিন্ন দফ্তরে  ২ ঘন্টার বিক্ষোভ-কর্মবিরতি পালিত হয়েছে ।  বিএমএস বাদে সি.আই.টি.ইউ সহ সব কটি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ও তৃণমূল কংগ্রেসের মত স্হানীয় ট্রেড ইউনিয়ন ছাড়া অন্য সমস্ত ট্রেড ইউনিয়ন এর সেইলের শ্রমিকদের যৌথ মঞ্চ আজকের ধর্মঘট ও বিক্ষোভ-কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল । ধর্মঘট ও বিক্ষোভ-কর্মবিরতি সফল করার জন্য স্টিল ওয়ার্কার্স ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া ( সি.আই.টি.ইউ ) এর পক্ষে পি.কে.দাস ইস্পাত শ্রমিকদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন যে বেসরকরীকরনের করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত লড়াই জারী থাকবে । অভিনন্দন জানিয়েছেন সি.আই.টি.ইউ  এর সর্ব ভারতীয় সম্পাদক তপন সেন ।

এদিকে আজ দুর্গাপুরে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টে সব রকমের ভয়-ভীতি-হুমকি কে উপেক্ষা করে ৯১ শতাংশ শ্রমিক ধর্মঘটে অংশ নিয়েছেন । মর্নিং শিফট থেকে কারখানার গেটে দলে দলে ধর্মঘটকারী শ্রমিকরা বিপুল সংখ্যায় বিক্ষোভ প্র্রদর্শন করতে থাকেন । শ্রমিকদের কারখানায় নিয়ে আসার বাসগুলি যাত্রী-শূন্য অবস্হায় ফেরৎ আসে । তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক শাখার পক্ষ থেকে কয়েক জন ধর্মঘটের বিরুদ্ধে, মা-মাটি-মানুষের-র সরকারের আমলে ধর্মঘট করা যাবে না - বলে শ্লোগান দেয়। বেলা গড়াতেই তারা চলে যান । কারখানার ভেতরে উৎপাদন প্রায় স্তব্ধ হয়ে যায় । বিকাল পর্যন্ত কোন ইনগট উৎপাদনের খবর নেই । বহু ধর্মঘটের সাক্ষী দুর্গাপুর । কিন্তু আজকে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের  ধর্মঘট শ্রমিকদের  চেতনা-ঐক্য-ব্যপকতার নতুন ইতিহাস রচনা করল । বহু তৃণমূল সমর্থকও ধর্মঘটে অংশ নিয়েছেন ।

গত এক বছর ধরে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বাঁচাও,দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা বাঁচাও,শিল্প বাঁচাও,রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্প বাঁচাও, রক্ষা কর দুর্গাপুর – এই দাবীতে ইস্পাতনগরী ও তার সংলগ্ন অঞ্চলে প্রায় শতাধিক গন-আন্দোলনের কর্মসূচীতে হাজার হাজার শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-যুব-মহিলা সহ সমাজের প্রায় সর্বস্তরের মানুষ অংশ নিয়েছেন । এই আন্দোলনের সমর্থনে রাস্তায় নেমেছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের সফল ক্রীড়াবিদ সহ অন্যান্য ক্রীড়াবিদরা । নেমেছেন সাংস্কৃতিক কর্মীরা । আজকে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের ঐতিহাসিক সফল ধর্মঘটের পেছনে ইস্পাত শ্রমিকদের সাথে সাথে দুর্গাপুরের বৃহত্তর নাগরিক সমাজের অবদান কে কুর্ণিশ জানিয়ে , দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় বেসরকরীকরনের করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী ও প্রসারিত করার আবেদন জানিয়েছেন । ইস্পাত শ্রমিকদের সাথে সাথে দুর্গাপুরের বৃহত্তর নাগরিক সমাজ কে অভিনন্দন জানিয়েছেন ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের যৌথমঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক যথাক্রমে সি.আই.টি.ইউ এর বর্ধমান জেলার সভাপতি বিনয়েন্দ্র কিশোর চক্রবর্তী  ও আই.এন.টি.ইউ.সি এর বর্ধমান জেলার সভাপতি বিকাশ ঘটক । অভিনন্দন জানিয়েছেন হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( সিআইটিইউ) এর সভাপতি রথীন রায় । অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের ঐতিহাসিক সফল ধর্মঘটের জন্য ইস্পাত শ্রমিকদের অভিনন্দন জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন রাজ্য সি.আই.টি.ইউ  এর পক্ষে শ্যামল চক্রবর্তী ও দীপক দাসগুপ্ত ।




























Sunday 9 April 2017

বেজে উঠল দ্রোহ কালের দুন্দুভি ….

বেসরকারীকরনের বিরুদ্ধে ১১ই এপ্রিল অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টে ধর্মঘট ।



দুর্গাপুর,৯ই এপ্রিল : ভারতের শ্রমিকশ্রেনীর বিরুদ্ধে প্রকারন্তরে যুদ্ধ ঘোষনা করেছে মোদি সরকার । একদিকে শ্রম আইন সংস্কার ,অন্য দিকে রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা নির্বিচারে বিলগ্নীকরন-বেসরকারীকরন সহ দেশীয় শিল্প বিকাশের বিরোধী নীতি নিয়ে চলছে মোদি সরকার । এই নীতির শিকার অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট । কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সব বিষয়ে কথা বললেও , অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় সংস্হার নির্বিচারে বিলগ্নীকরন-বেসরকারীকরন সহ বন্ধ করে দেওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের অপচেষ্টর বিরুদ্ধে নীরব-নিশ্চুপ কেন ? আজ সন্ধ্যায় দুর্গাপুর ইস্পাতনগরীর আনন্দ-লাবণ্য ভবনে ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বাঁচাও যৌথ মঞ্চের আয়োজিত এক বিশাল সভায় এই প্রশ্ন তোলেন সি.আই.টি.ইউ এর রাজ্য সভাপতি শ্যামল চক্রবর্তী । তিনি বলেন মোদি সরকারের ঘৃণ্য শ্রম আইন সংস্কারে শ্রমিক এর ধর্মঘটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রস্তাব সি.আই.টি.ইউ সহ অধিকাংশ কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন পত্রপাঠ প্রত্যাখ্যান করেছেন । কিন্তু এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বেআইনি ভাবে প্রশাসন ও দলের লোকেদের লেলিয়ে দিয়ে শ্রমিক এর ধর্মঘটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন । পঃ বঙ্গের শ্রমিকরা এটা কখনই মানে নি ,মানবে না । অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বাঁচানোর লড়াই এর পাশে সারা রাজ্যের শ্রমিকরা সর্বশক্তি দিয়ে দাঁড়াবেন । 

আই.এন.টি.ইউ.সি’র সর্বভারতীয় সভাপতি জি.সঞ্জীব রেড্ডী পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দেন যে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট সহ সালেম ও ভদ্রাবতী স্টিল প্ল্যান্ট  বাঁচানোর জন্য কেবল অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট, সালেম ও ভদ্রাবতী স্টিল প্ল্যান্টের   ধর্মঘট শেষ নয়,প্রয়োজনে সমগ্র সেইল সহ সারা ভারতে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হবে । কেন্দ্রে শ্রমিক-বিরোধী মোদি সরকারের ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলন সর্বস্তরে প্রসারিত করতে হবে । রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হায় কেন্দ্র সরকারের লগ্নী করা অর্থ রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা গুলি সূদেমুলে ফেরৎ দিয়েছে । রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা এখন দেশের সম্পত্তি । তাই রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা বিলগ্নীকরন-বেসরকারীকরন সহ বন্ধ করে দেওয়ার কোন অধিকার কেন্দ্রীয় সরকারের নেই । 

এছাড়াও সভায় বক্তব্য রাখেন বিধায়ক সন্তোষ দেব রায়,বিনয়েন্দ্রকৃষ্ণ চক্রবর্তী,রথীন রায়,রমেন পান্ডে,বিকাশ ঘটক,অসীম সাহা,বাবলা ভ্টাচার্য ও রবি ঠাকুর । বক্তারা সকলেই বেসরকারীকরনের বিরুদ্ধে ১১ই এপ্রিল অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের ধর্মঘটকে সফল করার আবেদন জানান । ঐ দিন সেইলের বিশেষ ইস্পাত উৎপাদক কারখানা অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট, সালেম ও ভদ্রাবতী স্টিল প্ল্যান্টের  ‘ স্ট্র্যাটেজিক ডিসইনভেষ্টমেন্ট’ এর জন্য মোদি সরকারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবীতে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট, সালেম ও ভদ্রাবতী স্টিল প্ল্যান্টে ধর্মঘট এবং সেইলের অন্যত্র ২ ঘন্টার কর্মবিরতি পালনের ডাক দিয়েছে সেইলের  সি.ই.টি.ইউ সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় ট্রেড ইনিয়নের যৌথ মঞ্চ ।


সভা শুরুর আগে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট এর স্টেডিয়াম থেকে এক বিশাল মিছিল সভাস্হলে আসে । পুলিশি অনুমতি না মেলায় সভা মাঠের বদলে সভাগৃহে হয় । স্হান সংকুলান না হওয়ায়,ভীড় উপচে পাশের রাস্তায় চলে যায় । বহু পথ চলিত মানুষও দীর্ঘক্ষন ধৈর্য ধরে বক্তব্য শুনতে দেখা যায় ।