Wednesday 28 June 2017

কমরেড সুধা ভট্টাচার্য এর স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হল ।



দুর্গাপুর,২৮শে জুন : আজ সন্ধ্যায় ইস্পাতনগরীর ডিভিসি অডিটোরিয়ামে প্রয়াত পার্টি সদস্যা সুধা ভট্টাচার্য এর স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হল । ভাব গম্ভীর অনুষ্ঠানের সূচনায় তাঁর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন  সন্তোষ দেবরায় , রথীন রায় , বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী , সুবীর সেনগুপ্ত ,তাঁর একমাত্র পুত্র ও পার্টির জেলা কমিটির সদস্য নির্মল ভট্টাচার্য ,ভাই বিমল চৌধুরী ও অন্যান্য আত্মীয়-পরিজন এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ।
সংগীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত সহ অন্যান্য শিল্পীরা । তাঁর উজ্জ্বল সংগ্রামী জীবন সম্পর্কে স্মৃতিচারন করেন সন্তোষ দেবরায় ও বিমল চৌধুরী ।

গত ২১শে জুন প্রয়াত হন পার্টি সদস্যা সুধা ভট্টাচার্য । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল  ৮৫ । 














Tuesday 27 June 2017

অ্যালয় স্টিল বিক্রির জন্য আরও একধাপ এগোল কেন্দ্রীয় সরকার : প্রবল শ্রমিক বিক্ষোভে অবরুদ্ধ হল কারখানার গেট



দুর্গাপুর,২৭শে জুন : আজ সকালে আবারও একবার প্রবল শ্রমিক বিক্ষোভে অবরুদ্ধ হল অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের গেট । শ্রমিক ইউনিয়ন গুলির যৌথমঞ্চ ( আই.এন.টি.টি.ইউ.সি ও বিএমএস বাদে ) এর ডাকে সকাল ৫ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত এই বিক্ষোভ চলে । রাষ্ট্রায়ত্ব ইস্পাত উৎপাদক সংস্হা সেইল এর বিশেষ ধরনের ইস্পাত উৎপাদক কারখানা -  অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট ( দুর্গাপুর ),সালেম ( তামিলনাড়ু ) ও ভদ্রাবতী ( কর্নাটক ) কারখানা কে মোদি সরকার গালভরা নাম স্ট্র্যাটেজিক ডিসইনভেষ্টমেন্টের নামে বিক্রি করতে চাইছে । এর বিরুদ্ধে ঐ কারখানার শ্রমিকরা ইতিমধ্যে ১দিনের ধর্মঘট পালন করেছে। সেইলের শ্রমিক ইউনিয়ন গুলির যৌথমঞ্চের ডাকে এই ধর্মঘট সর্বাত্মক হয় । সংহতি জানিয়ে সেইলের শ্রমিকরা সর্বত্র ২ ঘন্টার কর্মবিরতি পালন করে । আশ্চর্যের বিষয় হল এই বেসরকারীকরন করার বিরুদ্ধে তামিলনাড়ু ও কর্নাটক সরকার তীব্র প্রতিবাদ জানালেও , রাজ্যের তৃণমূল সরকার পুরোপুরি নিশ্চুপ ! দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর সি.পি.আই.(এম ) বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কে বার বার চিঠি দিয়ে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের বেসরকারীকরন রোখার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির আবেদন জানালেও কোন ফল হয় নি ।
এর মধ্যে অ্যালয় স্টিল বিক্রির জন্য আরও একধাপ এগোল কেন্দ্রীয় সরকার ।   অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট ,সালেম ও ভদ্রাবতী কারখানা কে বিক্রি করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার টেণ্ডার ডেকে লুথার অ্যান্ড লুথার কে লিগাল অ্যাডভাইসার , প্রটোকল ইনস্যুরেন্স সার্ভেয়ার্স অ্যান্ড লস্ অ্যাসেসর্স কে অ্যাসেট ভ্যালুয়ার্স ও এস.বি.আই ক্যাপিটাল মার্কেট (এস.বি.আই ক্যাপ ) কে  ট্রানসাকশন  অ্যাডভাইসার নিযুক্ত করেছে ।
এই খবর জানাজানি হতেই ইস্পাত শ্রমিকদের প্রবল ক্ষোভ তৈরি হয়েছে । শ্রমিক ইউনিয়ন গুলির যৌথমঞ্চ এর ডাকে আজ মর্নিং শিফট শুরুর সময় থেকে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের মেইন গেটে দলে দলে শ্রমিক গেট অবরোধ করে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকার কে বেসরকারীকরনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও দেশের প্রতিরক্ষা-মহাকাশ-পরমানু সহ প্রায় প্রতিটি শিল্পের বুনিয়াদি সরবরাহক অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের আধুনিকীকরনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের জন্য জোরদার বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন । সংহতি জানিয়ে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার শ্রমিকরাও বিক্ষোভে যোগ দেন । কারখানার শীর্ষ আধিকারিকরা সহ অন্যান্য আধিকারিকরা অবরোধে আটকে পড়েন । বিক্ষোভ চলাকালীন বক্তব্য রাখেন দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর সি.পি.আই.(এম ) বিধায়ক সন্তোষ দেবরায়, মলয় ভট্টাচার্য,গুরুপ্রসাদ ব্যানার্জী , মনিলাল সিনহা প্রমূখ ।
  যৌথমঞ্চের পক্ষ থেকে বেসরকারীকরনের বিরুদ্ধে এবং অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট ও দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার আধুনিকীরন-সম্প্রসারনের দাবীতে আগামী ২৯শে জুন দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার সি.ই.ও দফ্তরে ইস্পাত শ্রমিকদের বৃহত্তম সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে ।






















Friday 23 June 2017

কোয়ার্টার ও জমি লিজিং এবং নাগরিক পরিষেবার দাবীতে ডি.এস.পি-র সিইও দফ্তরে বিশাল জমায়েত ।



দুর্গাপুর ,২৩ জুন : আজ দুপুরে প্রচন্ড গরম উপেক্ষা করে দলে দলে শ্রমিক-কর্মচারী ও অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার সি.ই.ও দফ্তরে গণ-অবস্হানে যোগ দেন । হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ ) সহ অন্যান্য ট্রেড ইউনিয়ন ( বিএমএস ও তৃণমূল বাদে ) ,অ্যাসোসিয়েশন ও ফোরামের ‘ যুক্ত মঞ্চের’ পক্ষ থেকে কারখানার যে কোয়ার্টারে বসবাস করছেন,ইচ্ছুক প্রার্থীদের সেই  কোয়ার্টারের লীজ/লাইসেন্স এর সুযোগ , সেইলের অন্য প্ল্যান্টের মত গ্র্যাচুইটি থেকে কেটে নেওয়া বাড়ী ভাড়া বাবদ টাকা অবিলম্বে ফেরৎ ,লাইসেন্সিং কে লীজে পরিবর্তন , কোম্পানীর উদ্বৃত্ত জমিতে লীজের ভিত্তিতে জমির প্লট / গ্রুপ হাউসিং এর সুবিধা , ইস্পাতনগরীর জল-বিদ্যুৎ-রাস্তা-নিকাশী ব্যবস্হা সহ সামগ্রিক নাগরিক পরিষেবার আধুনিকীকরন ও কর্মরতদের জন্য আধুনিক টাউনশীপ গড়ে তোলার দাবীতে আজকের গণ-অবস্হানের ডাক দেওয়া হয় । এই দাবীতে বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে ‘ যুক্ত মঞ্চের’ পক্ষ থেকে ধারাবাহিক ভাবে আন্দোলন জারী আছে । আংশিক দাবী আদায় হলেও অধিকাংশ  দাবীগুলি অযৌক্তিতত ভাবে মানা হচ্ছে না বলে , দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ‘ যুক্ত মঞ্চের ‘ নেতৃত্ব অভিযোগ করেছেন । তাই সমস্ত দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার আন্দোলন চলবে বলে , কর্তৃপক্ষ কে ‘ যুক্ত মঞ্চের ‘ নেতৃত্ব হুঁশিয়ারী জানান । একই সাথে আন্দোলনের সাথে যারা এখনও যুক্ত হননি,তাদের খোলা মনে এগিয়ে এসে যৌথ আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার জন্য নেতৃত্ব আবেদন জানান । গণ-অবস্হানে বক্তব্য রাখেন বিশ্বরূপ ব্যানার্জী , বিশ্বজিত বিশ্বাস , শম্ভূ প্রামানিক,সুব্রত ভট্টাচার্য,অশোক চক্রবর্তী , দুলাল চন্দ্র কয়াল ও স্বপন মুখার্জী । এছাড়াও বক্তব্য রাখেন দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় । তিনি বলেন যে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য উভয় সরকার যে রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা বিরোধী অবস্হান নিয়েছে তার ফলে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল ধুঁকছে । একই কারনে বিপদাপন্ন  ইস্পাতনগরী । যদি অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট ও দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার আধুনিকীকরন ও সম্প্রসারন অবিলম্বে না হয় তাহলে ইস্পাতনগরী কে ঘিরে যাবতীয় আন্দোলন বিফলে চলে যাবে । তাই কারখানা বাঁচানোর আন্দোলনও পাশাপাশি শক্তিশালী করতে হবে । মজবুত ও আরও প্রসারিত করতে হবে যৌথ আন্দোলন ।

অবস্হান চলাকালীন এক প্রতিনিধি দল গিয়ে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার ইডি ( পি অ্যান্ড এ ) এর কাছে গিয়ে দাবী সম্বলিত স্মারক লিপি জমা দেয় । ইডি ( পি অ্যান্ড এ ) এর পক্ষ থেকে অবিলম্বে সমস্যা সমাধানের জন্য বৈঠক ডাকার আশ্বাস মিলেছে বলে , ‘ যুক্ত মঞ্চের ‘ নেতৃত্ব জানিয়েছেন ।


Thursday 22 June 2017

প্রয়াত হলেন পার্টি সদস্যা সুধা ভট্টাচার্য ।



দুর্গাপুর,২২শে জুন : গতকাল ভোর রাতে মিশন হাসপাতালে প্রয়াত হলেন পার্টি সদস্যা সুধা ভট্টাচার্য । মৃত্যু কালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ । প্রয়ান কালে তাঁর দুই কন্যা ও এক মাত্র ছেলে ও পার্টির বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য নির্মল ভট্টাচার্য সহ দুই জামাতা ও নাতি-নাতনিরা বর্তমান ।  তাঁর মরদেহ প্রথমে ইস্পাতনগরীর রানা প্রতাপ রোডে ও পরে আশীষ জব্বর ভবনে নিয়ে যাওয়া হয় । সেখানে মরদেহে রক্তপতাকা আচ্ছাদিত করেন পার্টি নেতৃত্ব । মরদেহে মাল্যদান করেন সন্তোষ দেবরায় , নির্মল ভট্টাচার্য , সুবীর সেনগুপ্ত সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। পরে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে ।
তাঁর মৃত্যুতে দুর্গাপুর ইস্পাত জোনাল কমিটির পক্ষ থেকে সন্তোষ দেবরায় গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানয়েছেন ।

সংক্ষিপ্ত জীবনী : অধুনা বাংলাদেশের ফরিদপুরে জন্মগ্রহন করেন সুধা ভট্টাচার্য । ১৯৪৫ সালে কোলকাতায় আসেন এবং তাঁর বাল্যকালে কেটেছিল শ্যামাজারের তেলিবাজার লেনে । বিবাহের কারনে বিদ্যালয় শিক্ষা অসমাপ্ত থাকে । কিন্তু প্রবল আর্থিক সংকটের মধ্যেও তিন সন্তানের জননী সুধা ভট্টাচার্য পুনরায় পড়াশুনা শুরু করেন এবং বি.এ. ও বি.এড ডিগ্রী অর্জন করে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৯৭০ সালে শিক্ষিকা হিসাবে কাজে যোগ দেন এবং ১৯৯৭ সালে অবসর গ্রহন করেন । কলেজে ছাত্রী থাকাকালীন বি.পি.এস.এফ এর সাথে যুক্ত হয়েছিলেন এবং মধ্যমগ্রাম অঞ্চলে পার্টির কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন । দুর্গাপুরে কাজে যোগ দেওয়ার পরে মহিলা সমিতি ও শিক্ষক আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন । ১৯৭২-৭৭ সালে আধা-ফ্যাসিবাদি সন্ত্রাসের সময়ে ইস্পাতনগরীর বুকে মহিলা সমিতির বীরত্বপূর্ণ  প্রতিরোধের সামনের সারিতে ছিলেন সুধা ভট্টাচার্য । বিশেষ করে রানা প্রতাপ রোডে তাঁর বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধ গুণ্ডাবাহিনী কে বাধ্য করেছিল নতজানু হতে । ১৯৯১ সালে তিনি পার্টি সদস্যপদ লাভ করেন । গণশক্তি ও মার্কসীয় সাহিত্যের একনিষ্ঠ পাঠিকা সুধা ভট্টাচার্য আক্ষরিক অর্থেই জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত গণশক্তি ও মার্কসীয় সাহিত্য পাঠ করে গেছেন। নিজের পরিবার  পার্টি –পরিবার । একমাত্র পুত্রবধু মহিলা নেত্রী মিতা ভট্টাচার্য দুর্গাপুর ইস্পাত জোনাল কমিটির সদস্যা । বড় মেয়ে পার্টি সদস্যা রত্না আইচ এবং জামাতা জীবন আইচ ডিভিসির সি.আই.টি.ইউ ইউনিয়নের অন্যতম নেতৃত্ব ।

Monday 19 June 2017

প্রয়াত হলেন পার্টি সদস্য নানু গোপাল চন্দ ।



দুর্গাপুর , ১৯শে জুন : দীর্ঘ রোগভোগের পর গতকাল দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার মেইন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্হায় প্রয়াত হলেন পার্টি সদস্য নানু গোপাল চন্দ । আজ সকালে তাঁর মরদেহ প্রথমে তাঁর এডিশন রোডের বাসভবনে ও পরে  এডিশন সেক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয় । সেখানে বিপুল সংখ্যায় মানুষ তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান । এরপরে ডি.এস-২ পার্টি অফিসে মরদেহ নিয়ে আসা হলে , পার্টি নেতৃত্বের পক্ষ থেকে মরদেহ রক্ত পতাকা দিয়ে আচ্ছাদিত করা হয় । মরদেহে মাল্যদান করেন সন্তোষ দেবরায় , নির্মল ভট্টাচার্য , সুবীর সেনগুপ্ত , বাদল মজুমদার সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ । প্রয়াত নানু গোপাল চন্দ এর ইচ্ছানুসারে তাঁর চক্ষু ও দেহ দান করা হয় । মৃত্যুকালে তাঁর স্ত্রী,কন্যা ও দুই পুত্র বর্তমান । পার্টির দুর্গাপুর ইস্পাত জোনালের পক্ষ থেকে তাঁর মৃ্ত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করে পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান হয়েছে ।

সংক্ষিপ্ত জীবনী : ১৯৪০ সালে ৩০শে মার্চ বর্ধমান জেলার ভাতারের বামুনাড়া গ্রামে তিনি জন্ম গ্রহন করেন । ১৯৬২ সালে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় শ্রমিক হিসাবে কাজে যোগ দিয়ে ১৯৯৮ সালে অবসর গ্রহন করেন । হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাথে যুক্ত হয়ে শ্রমিক সংগঠনের কাজের সাথে যুক্ত থাকার সাথে সাথে সেক্টর ও সমবায় সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন । দীর্ঘ দিন ধরে এডিশন সেক্টর কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন । ১৯৭৮ সালে তিনি পার্টি সভ্যপদ লাভ করেন । অনারম্বর জীবন-যাপন , পার্টির জন্য ত্যাগ স্বীকার ও অমায়িক ব্যবহারের জন্য এলাকার মানুষের একান্ত আপন জন হয়ে উঠেছিলেন  প্রয়াত পার্টি সদস্য নানু গোপাল চন্দ ।

Sunday 18 June 2017

ভারতীয় সমাজের মূল্যবোধের বিভিন্নতা বুঝতে মার্কসীয় বিশ্লেষনের প্রাসঙ্গিকতা অনিবার্য : নন্দিনী মুখার্জী



দুর্গাপুর , ১৮ই জুন : আজ ইস্পাতনগরীর লালা লাজপৎ রায় রোডে চিত্তব্রত মজুমদার ভবনে পার্টির ডি.এস ১এ লোক্যাল কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত ‘ মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গীতে সামাজিক মূল্যবোধ ‘ – শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে এ কথা বলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট অধ্যাপিকা নন্দিনী মুখার্জী । কার্ল মার্কসের দ্বিশততম জন্মদিবস ও নভেম্বর বিপ্লবের শতবর্ষ উপলক্ষ্যে আয়োজিত  আলোচনা সভায় তিনি ছিলেন একমাত্র বক্তা । তিনি বলেন যে ভারতীয় ঐতিহাসিক ও প্রাক-ঐতিহাসিক পর্বের উপাদান পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে ভারতীয় সমাজের মূল্যবোধ কোন স্হিতিশীল বিষয় ছিল না । এমন কি বৈদিক যুগের শুরুতে পশুপালনকারী আর্যদের সাথে পরবর্তীকালের নদী-সভ্যতার কৃষিজীবি আর্যদের মূল্যবোধের পরিবর্তন ঘটে যায় । উদাহরন স্বরূপ সার্বজনীন যজ্ঞের বদলে ব্রাহ্মনের যজ্ঞের অধিকার সৃষ্টি হয় । আবার কেবল অধ্যাত্মবাদী দর্শন নয় বস্তুবাদী দৃষ্টিভঙ্গীর লোকায়ত দর্শনও ভারতীয় সমাজের মূল্যবোধ কে প্রভাবিত করেছে । বর্ণ-ব্যবস্হা ভারতীয় সমাজের মূল্যবোধ কে কেবল প্রভাবিত করেছে শুধু তাই নয় এই ব্যবস্হা  বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় বিভিন্ন উথাল-পাতাল শ্রেনী-বিপ্লবের  মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনের জায়গায়  ভারতের সমাজ পরিবর্তনে আপাত শান্ত এক বৈশিষ্ট দান করেছে । কিন্তু বর্তমানে শাসক শ্রেনী ভারতের সমাজ ও মূল্যবোধের পরিবর্তন অস্বীকার করে এক কল্পিত মনগড়া মূল্যবোধের নামে সমাজ প্রগতির পথ রুদ্ধ করতে চাইছে ।

আলোচনা সভার শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় । সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন অভিজিত মিত্র ও স্বর্ণালী রায় এবং আগুনের দিনলিপি নাটক মঞ্চস্হ করে বার্ণপুরের গণসংস্কৃতি সংঘ । সূচানায় অধ্যাপিকা নন্দিনী মুখার্জী সহ সাংস্কৃতিক কর্মীদের সম্বর্ধনা ও স্মারক তুলে দেন রথীন রায় ,সন্তোষ দেবরায়,নির্মল ভট্টাচার্য ,সুবীর সেনগুপ্ত প্রমূখ ।










Monday 12 June 2017

সেইলের অবসরপ্রাপ্ত ইস্পাত শ্রমিক-কর্মচারীদের সামাজিক সুরক্ষা বিষয়ে আলোচনা সভা ।



দুর্গাপুর , ১২ই জুন : আজ সন্ধ্যায় ধাণ্ডাবাগের শ্রদ্ধা শিক্ষা সদন বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে অবসরপ্রাপ্ত ইস্পাত শ্রমিক-কর্মচারীদের সামাজিক সুরক্ষা বিষয়ে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় । সভায় সেইলের  অবসরপ্রাপ্ত ইস্পাত শ্রমিক-কর্মচারী ও আধিকারিকদের চিকিৎসা-বিমা ‘মেডিক্লেমে’ –এর বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে আলোচনার সাথে সাথে অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষার বিষয়ে আলোচনা হয় । অবসরপ্রাপ্ত ইস্পাত শ্রমিক-কর্মচারী ও আধিকারিকদের ইতিমধ্যে গড়ে ওঠা  সংগঠন পক্ষ থেকে সভায় বক্তব্য রাখেন , অশোক চক্রবর্তী ( এক্স-এমপ্লয়িজ অ্যাসোশিয়েসান অফ সেইল অ্যান্ড ডিএসপি ) , ব্রজমানিক চক্রবর্তী ( সহমর্মী , অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট ) । স্টিল ওয়ার্কার্স ফেডাঃ অফ ইন্ডিয়া-র পক্ষে বক্তব্য রাখেন পি.কে.দাস ও স্বপন মজুমদার । তারা অবসরপ্রাপ্ত  শ্রমিক-কর্মচারীদের সংগঠিত হওয়ার জন্য ওয়ার্লড ফেডাঃ অফ ট্রেড ইউনিয়ন এর কাঠমান্ডু  সম্মেলনের গৃহীত সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করে বলেন যে সরকারের কাছে প্রাপ্য ও ন্যায্য অধিকার আায়ের জন্য চাকুরীজীবনের পরেও শ্রমিক-কর্মচারীদের সংগঠিত হওয়ার প্রয়োজন আছে ।

Friday 9 June 2017

হুমকি-প্রলোভনের কাছে দুর্গাপুর মাথা নত করবে না – লাল ঝাণ্ডার অঙ্গীকার ।



দুর্গাপুর,৯ই জুন : তৃণমূল পরিচালিত দুর্গাপুর মিউনিসিপ্যালিটি কর্পোরেশনের মেয়াদ ফুরিয়ে আসতে চললেও , নির্বাচনের সূচী ঘোষনার কোন লক্ষন দেখা যাচ্ছে না । আসলে , ২০১১ সালে তৃণমূল সরকার গঠিত হওয়া পরে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে ভয়াবহ সন্ত্রাস চালিয়েও , তৃণমূল সিপিআই(এম) এর গণভিত্তি ধ্বংস করতে পারে নি ।  তৃণমূলের প্রতি মোহভঙ্গ হতে দুর্গাপুরের মানুষেরও বেশী সময় লাগে নি । দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার শ্রমিক ইউনিয়নের স্বীকৃতি নির্বাচনে ( ২০১১ ) পরাস্ত হতেই তৃণমূল স্বমূর্তি ধরে । দুর্গাপুর মিউনিসিপ্যালিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন ( ২০১২ ) থেকে যে কোন নির্বাচনে  সন্ত্রাসই একমাত্র তৃণমূলের ভরসা হয়ে দাঁড়ায় ।  সমবায় নির্বাচন থেকে ক্রীড়া সংস্হার নির্বাচন , প্রহসনে পরিনত করে  গায়ের জোড়ে দখল করা তৃণমূল অভ্যাসে পরিনত করে ফেলে । ১৯৭২ সালের পর থেকে এরকম ভোটাধীকার লুঠ হওয়ার অভিজ্ঞতা দু্র্গাপুরের মানুষের ছিল না । ২০১৪ সালের লোকসভার নির্বাচনের সময় তৃণমূলের ভোট-লুঠ চরমে ওঠে । মানুষ ফুঁসতে থাকে । এমন কি তৃণমূলের সমর্থক ভোটারদের মধ্যে তৃণমূলের প্রতি বিতৃষ্ণা জন্মাতে শুরু করে । এর প্রতিফলন দেখা যায় ২০১৫ সালে  । দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার শ্রমিক ইউনিয়নের স্বীকৃতি নির্বাচন , সি.আই.এস.এফ এর নিরাপত্তায় অনুষ্ঠিত হয় । নির্বাচনের আগে ও নির্বাচনের দিন তৃণমূলের ভয়ংকর সন্ত্রাসের মুখেও ইস্পাত শ্রমিকরা ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়ে তৃণমূল কে পর্যদুস্ত করে পুনরায় হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন কে এক নম্বর ইউনিয়ন হিসাবে নির্বাচিত করে । এর পরে ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে ইতিহাস রচনা করে দুর্গাপুরের মানুষ । দুর্গাপুর ( পূর্ব ) ও দুর্গাপুর ( পশ্চিম ) দুটি বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কে পর্যদুস্ত করে জয়ী করেন যথাক্রমে সি.পি.আই.(এম ) প্রার্থী সন্তোষ দেবরায় ও জোট-প্রার্থী হিসাবে জাতীয় কংগ্রেসের বিশ্বনাথ পারিয়াল কে । বিধান সভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে পৌরসভার ৪৩ টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূল ৪০টি ওয়ার্ডে বিপুল ভোটে পিছিয়ে আছে ।
অকর্মণ্যতা ও দূর্ণীতির নিরিখে তৃণমূল পরিচালিত দুর্গাপুর মিউনিসিপ্যালিটি কর্পোরেশনের স্হান সবার ওপরে – এ কথা মানুষের মুখে মুখে ঘুরছে । মেয়র স্বয়ং গত বিধান সভা নির্বাচনে দুর্গাপুর ( পশ্চিম ) কেন্দ্র থেকে হেরেছেন । পূর্ববর্তী বামফ্রন্ট পরিচালিত বোর্ডের বিপুল কাজের কোন তুলনায় বর্তমান বোর্ড আসতে পারেছে না – এ কথা তৃণমূলের সমর্থকরা মানছে । জল-নিকাশী-রাস্তাঘাট – আবর্জনা পরিষ্কার সহ সমস্ত পৌরসেবা বেহাল । কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা খরচ না করতে পারায় টাকা ফেরৎ গেছে । ‘ স্মার্ট-সিটি ‘-র প্রতিশ্রুতি দুরে থাক , জেলা ভাগের নামে দুর্গাপুর কে গুরুত্বহীন করে দেওয়ার দগদগে ঘা দুর্গাপুরে মানুষ কে বয়ে নিয়ে চলতে হচ্ছে । নতুন শিল্পের সম্ভাবনা শেষ । একে কারাখানা বন্ধ হচ্ছে । টুঁটি চিপে ধরা হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্প কে ।এ ক্ষেত্রে মোদি সরকারের দোসর মমতা ব্যানার্জীর সরকার পিছিয়ে নেই – সে কথা দুর্গাপুরে মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে । শিল্পাঞ্চল বাঁচানোর লড়াই চালাচ্ছে লাল ঝাণ্ডা ও যৌথমঞ্চ । দুর্গাপুর কে ‘শিল্প-হীন’ করার চক্রান্তে তৃণমূল-বিজেপি মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে । তৃণমূলের রাজত্বে দুর্গাপুর এখন ‘ দুর্দশাপুর ‘ ।
এই অবস্হায় পরাজয় একপ্রকার নিশ্চিত জেনে , যে কোন উপায় পৌর বোর্ডের দখল রাখার জন্য তৃণমূল মরিয়া হয়ে উঠেছে । এক দিকে মেয়াদ উত্তীর্ণ পৌর বোর্ডে প্রশাসক বসিয়ে ‘পেছনের দরজা ‘ দিয়ে দখলের রাস্তা নেওয়ার চেষ্টা চলছে । অন্যদিকে নির্বাচিত বাম কাউন্সিলর দের আর্থিক প্রলোভন ও ভয় দেখিয়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে । শাসক দলের দোসর হিসাবে প্রশাসন ও পুলিশের একাংশ কাজ করছে ।

এই ঘৃণ্য চক্রান্তের বিরুদ্ধে আজ বিকালে পার্টির ডাকে এক বিশাল মিছিল সিটি সেন্টারের শহীদ বিমল দাসগুপ্ত ভবন থেকে শুরু হয়ে এস.ডি.এম দফ্তরে যায় এবং বিক্ষোভ-সমাবেশে যোগ দেয় । সমাবেশ চলাকালীন এস.ডি.এম এর কাছে এক স্মারক লিপি জমা দিয়ে অবিলম্বে এই চক্রান্ত বন্ধের জন্য দাবী জানান পার্টি নেতৃবৃন্দ । নচেৎ এস.ডি.এম দফ্তরে লাগাতার বিক্ষোভ চলবে বলে পার্টি নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে প্রশাসন কে স্পষ্ট হুঁশিয়ারী দেওয়া হয় । আজকের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মহাদেব পাল , সন্তোষ দেবরায় , বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী , আল্পনা চৌধুরী ও পঙ্কজ রায় সরকার । স্মারক লিপি জমা দেওয়ার আগে, সমাবেশে তা পাঠ করেন দুর্গাপুর পৌর নিগমের বিরোধী দলনেতা শিবশঙ্কর চ্যাটার্জী ।