দুর্গাপুর,১৫ই আগষ্ট
: আজ সকালে ইস্পাত শ্রমিক সহ দলে দলে সাধারন মানুষ জড়ো হয়ে বি.টি.রণদিভে ভবনে আবারও
সদর্পে উড়িয়ে দিল রক্তপতাকা ।
গত ৭ই আগষ্ট , দুর্গাপুর
পৌর
নির্বাচনের প্রাক্কালে,তৃণমূলী দুষ্কৃতিরা আচমকা হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ
ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ ) ও স্টিল ওয়র্কার্স ফেডরেশন অফ ইন্ডিয়া ( সি.আই.টি.ইউ ) দফ্তর বি.টি.রণদিভে ভবনে ( ১নং বিদ্যাসাগর এভিন্যু ) ভাঙ্গচূর-লুঠপাঠ চালায়,লাল ঝাণ্ডা খুলে লোপাট করে,বোর্ড খুলে নেয় ও তৃণমূলের পতাকা লাগিয়ে দেয়।খবর পেয়ে ঘটনাস্হলে ট্রেড ইউনয়নের সর্বক্ষনের কর্মী এবং ৭নং ওয়ার্ডে সি.পি.আই.(এম) এর প্রার্থী স্বপন সরকার পৌঁছালে তাকে তৃণমূলীরা মারধোর করে ।
প্রসংগত, দুর্গাপুর বাঁচাতে , অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বাঁচাতে , দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা বাঁচাতে এবং মোদি সরকারে নির্দেশে রাষ্ট্রায়ত্ব ইস্পাত উৎপাদক সংস্হা সেইলে এর বিশেষ ইস্পাত উৎপাদক সংস্হা
অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট,সালেম ও ভদ্রাবতী স্টিল প্ল্যান্ট এর বেসরকারীকরনের বিরোধীতা করার জন্য হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ
ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ ) ও স্টিল ওয়র্কার্স ফেডরেশন অফ ইন্ডিয়া ( সি.আই.টি.ইউ ) এর শয়ে শয়ে সদস্য নিজেদের টাকা-পয়সা খরচা করে ঐ দিন ট্রেন যোগে দিল্লি রওনা দিয়েছিলেন । তারা ৯ই আগষ্ট দিল্লিতে যন্তর-মন্তরে রাষ্ট্রায়ত্ব ইস্পাত শিল্পের ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের যৌথ মোর্চা ( বিএমএস ও তৃণমূল বাদে ) পক্ষ থেকে সারা ভারতের ইস্পাত শ্রমিক-কর্মচারিরা
বিক্ষোভ প্রদর্শনে যোগ দেন । এই অনুপস্হির সুযোগে তৃণমূল বি.টি.রণদিভে ভবনে কাপুরোষচিত হামলা চালায় ।
এই ঘটনা জানাজানি হতেই সমস্ত দুর্গাপুর জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়ে । ইস্পাত শ্রমিকদের মধ্যেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় । বিধানসভায় এই খবর পৌঁছাতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় । সি.পি.আই.(এম) বিধায়ক রুনু দত্ত বিষয়টি বিধানসভায় উথ্থাপন করলে ,স্পীকার বাধা দেন ।
ইতিমধ্যে ঘটনাস্হলে বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় সহ অন্যান্য পার্টি নেতৃবৃন্দ
ইউনিয়ন দফ্তরে পৌঁছালে , প্রবল জনমতের চাপে পুলিশ-প্রশাসন নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয় এবং ইউনিয়ন অফিস দখল মুক্ত হয় ।
আরও উল্ল্যেখ্য, বি.টি.রণদিভে ভবনের ঠিক উল্টোদিকে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার বাংলো ( ২০নং বিদ্যাসগর এভিন্যু ) তৃণমূলের অবৈধ ভাবে দখল করে নির্বাচনী দফ্তর বানিয়েছিল । অভিযোগ , আসানসোলের মেয়র ও তৃণমূলের নেতা জিতেন তেওয়ারির নেতৃত্বে এক দল কুখ্যাত কয়লা-মাফিয়া ও তাদের সাঙ্গোপাঙ্গো ঘাঁটি বানিয়ে দুর্গাপুর পৌর নির্বাচনের
‘ভোট-লুঠ’ করে । এ বিষয়ে বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে আগাম রাজ্য প্রশাসন ও দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার কর্তৃপক্ষ কে জানালেও,কোনও ব্যবস্হা নেওয়া হয় নি । আসলে দুর্গাপুর নগর নিগম
নির্বাচনে তৃণমূলের ভোট-লুঠের অঙ্গ ছিল ২০নং বিদ্যাসাগর এভিন্যুতে ঘাঁটি তৈরি করা ।
গত ১৩ই আগষ্ট দুর্গাপুর
নগর নিগম নির্বাচনের দিনে ১৫-২০ হাজার বহিরাগত তৃণমূলী সশস্ত্র দুষ্কৃতি রাজ্য পুলিশ
ও প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদতে বিরোধী প্রার্থী – পোলিং এজেন্ট ও ভোটরদের বুথে যেতে দেয়
নি এবং অধিকাংশ বুথেই অবাধে ভোট লুঠ করে । এই ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্গাপুর ক্ষোভে
ফুঁসছে ।
আজ সকালে বি.টি.রণদিভে ভবনে প্রথমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন
করেন প্রবীন শ্রমিক নেতা ও হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ ) এর সভাপতি রথীন রায় । তিনি
বুর্জোয়া গনতন্ত্রের ভুলুন্ঠিত পতাকা উর্ধে তুলে ধরার জন্য শ্রমিক শ্রেনীর কর্তব্য
এর কথা স্মরণ করিয়ে দেন ।
এরপরে হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ ) এর পক্ষে রক্তপতাকা উত্তোলন
করেন ইউনিয়ন এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য , প্রাক্তন রাজ্য সভার সাংসদ ও সি.আই.টি.ইউ
এর সর্বভারতীয় নেতৃত্ব জীবন রায় এবং স্টিল
ওয়ার্কার্স ফেডরেশন অফ ইন্ডিয়া ( সি.আই.টি.ইউ ) এর পক্ষে কালী সান্যাল । শহীদবেদীতে
মাল্য দান করেন রথীন রায় , জীবন রায়,
কালী
সান্যাল, বিশ্বরূপ ব্যানার্জী , বিনয়েন্দ্র কিশোর চক্রবর্তী , সন্তোষ দেবরায় প্রমূখ
।
এক সংক্ষিপ্ত ভাষনে
জীবন রায় বি.টি.রণদিভে ভবনে তৃণমূলের হামলার তীব্র নিন্দা করে বলেন যে আন্তর্জাতিক
ক্ষেত্র পর্যন্ত পরিচিত হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক
চেতনা ও ঐক্যের প্রতীক । তাই বি.টি.রণদিভে ভবনে নির্মম হামলা ও লুঠতরাজ চালিয়ে এবং
ভোট লুঠ করে মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে , তৃণমূল দল পতনের রাস্তায় হাঁটছে।
বামফ্রন্টের ডাকে আজ রাজ্য ব্যাপি ৭১তম স্বাধীনতা দিবসে দেশের ঐক্য, সংহতি, ধর্মনিরপেক্ষতা
ও সম্প্রীতি রক্ষায় ‘মানববন্ধন এবং স্বাধীনতা দিবসের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পালিত হয় ।
ইস্পাতনগরীতে বি.টি.রণদিভে ভবনের সামনে এই
অনুষ্ঠান পালিত হয় ।