Saturday 25 November 2017

সেচমন্ত্রীর আশ্বাস কাজে এল না : প্রতিশ্রুতির ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও দুর্গাপুর ব্যারেজের ভাঙ্গা লকগেট মেরামত হল না ।



দুর্গাপুর,২৫শে নভেঃ : অভাবনীয় এ দৃশ্য ! দুর্গাপুর ব্যারেজের যে অংশ থাকে জলে পরিপূর্ণ , সেই অংশ এখন বালুকা বেলা ! দলে দলে মানুষ দুর দুরান্ত থেকে ছুটে আসছেন এই দৃশ্য দেখার জন্য , ঝুঁকি নিয়ে মানুষ নামছে দামোদরের বুকে সদ্য জেগে ওঠা চরে । কিন্তু এ সবের মাঝেই উঠে আসছে এক হাড়হিম করা সত্য – একটা গোটা নদী উধাও হয়ে গেছে । দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের লাইফ-লাইন নামে পরিচিত দামোদর নদের জল ভাঙ্গা ১নং লকগেট দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় বয়ে গেছে । গোটা শিল্পাঞ্চল জুড়ে পানীয় জল নিয়ে হাহাকার । এর মাঝে ১৩টি গন সংগঠনের যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে  সেচ দফ্তরের মূখ্য বাস্তুকারের দপ্তরে অবিলম্বে লকগেট মেরামতি , সংশ্লিষ্ট  দোষীদের খুঁজে বার করে অবিলম্বে শাস্তি, দুর্গাপুর এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে নিরবিচ্ছিন্ন পানীয় জল,বিদ্যুৎ সরবরাহর ব্যবস্থার দাবীতে ডেপুটেশন হয় । ডেপুটেশন দেওয়ার কিছু ক্ষনের মধ্যেই তৃণমূলের কাউন্সিলর চন্দ্রশেখর ব্যানার্জীর নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র তৃণমূলী দুষ্কৃতি দুর্গাপুর স্টেশনের পরিবহন শ্রমিকদের সি.আই.টি.ইউ দফ্তরে হামলা চালালে ডি.ওয়াই.এফ.আই কর্মী বিক্রম ব্যানার্জী ও গণশক্তি পত্রিকার চিত্র সাংবাদিক সাহেব চক্রবর্তী গুরুতর আহত হয় । আহত সাহেব চক্রবর্তী কে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় । খবর পেয়ে দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর সি.পি.আই.(এম) বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় আহত সাহেব চক্রবর্তী কে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে দেখে আসেন । পরে তিনি দুর্গাপুর ব্যারেজে যান । অসুস্হ শরীর নিয়ে বিধায়ক গত দু দিন ধরে ভাঙ্গা লকগেট মেরামতির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কে উদ্যোগী করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন । ইতিমধ্যে গতকালই ,বামফ্রন্টের বিধায়ক মানস মুখার্জী ( কামারহাটি ) দ্রুত লকগেট মেরামতির দাবীতে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি দিয়েছেন । কিন্তু কাজ চলছে ঢিমেতালে । দ্রুত মেরামতির জন্য দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর সি.পি.আই.(এম) বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় সেনাবাহিনী নিয়োগের দাবী জানালেও ,রাজ্য সরকার কর্ণপাত করে নি ।
সি.আই.টি.ইউ এর পশ্চিম বর্ধমান জেলার সভাপতি বিনয়েন্দ্র কিশোর চক্রবর্তী অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছেন সেচ দফ্তরের দিকে । তিনি বলেছেন যে সেচ মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিই সার । ২৪ ঘন্টা পার হলেও মেরামতি শেষ হয় নি । ইতিমধ্যে শিল্পাঞ্চলে পানীয় জলের অভাব দেখা দিয়েছে । ১-২ দিনের মধ্যে কারখানা গুলিতে জলের সংকট দেখা দেবে । সেচ দফ্তরের গাফিলতির ফলে ব্যারেজের রক্ষনাবেক্ষন হয় নি । বরাদ্দ টাকা কোথায় গেল ?
এদিকে , হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ ) এর এক প্রতিনিধি দল ঘটনাস্হলে যান । প্রতিনিধি দলে ছিলেন প্রফুল্ল মন্ডল , কাজল মজুমদার , স্বপন মজুমদার ও বাবুরাম শর্মা ও খোঁজখবর নেন । প্রসংগত দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার জি.এম. ( প্রজেক্ট ) শৈলেন্দ্র জয়ালের নেতৃত্বে প্রযুক্তিবিদও দক্ষ শ্রমিকদের একটি বড় দল লকগেট মেরামতির জন্য সেচবিভাগ কে দিন-রাত্রি সহায়তা করে চলেছে । দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের ভারী যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম দিয়েও সহায়তা করা হচ্ছে । 
আজ ইস্পাতনগরীতে পানীয় জলের সরবরাহ বি-জোনের একাংশে করা হয়েছে । আগামীকাল ২৬টি ট্যাঙ্কারের মাধ্যমে গোটা ইস্পাতনগরীতে পানীয় জলের সরবরাহ করা হবে বলে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ।










Friday 24 November 2017

দুর্গাপুর ব্যারেজের ১নং লকগেট ভেঙ্গে চূড়ান্ত বিপত্তি : বন্যার আশংকা নিম্ন দামোদর অববাহিকা অঞ্চলে, গভীর সংকটে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল ।



দুর্গাপুর,২৪শে নভেঃ : আজ ভোর রাতে ( আনুমানিক ভোর ৫-০০ ) দুর্গাপুর ব্যারেজের ১নং লকগেট ভেঙ্গে চূড়ান্ত বিপত্তি ঘটে । ব্যারেজের জলাধার ভেঙ্গে প্রবল বেগে জল বেরোতে শুরু করেছে । এর ফলে দামোদর নিম্ন অববাহিকা অঞ্চলের বর্ধমান,বাঁকুড়া,হুগলী ও হাওড়া জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বন্যার আশংকা তৈরি হয়েছে । মাঠের ধান মাঠেই নষ্ট হতে পারে । অন্যদিকে জল বেড়িয়ে যাওয়ার ফলে ব্যারেজের জল ও সংলগ্ন জলাধার গুলিতে জল কমে যাওয়ার ফলে গভীর সংকটে পড়তে চলেছে গোটা দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল ।
খবর পেয়ে ঘটনাস্হলে দ্রুত পৌঁছান  পশ্চিম বর্ধমান জেলার সভাপতি সি.আই.টি.ইউ  বিনয়েন্দ্র কিশোর চক্রবর্তী , হিন্দুসহান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ ) এর নেতৃবৃন্দ বিশ্বরূপ ব্যানার্জী , মৃত্যুঞ্জয় ঝা , সীমন্ত চ্যাটার্জী ও বাবুরাম শর্মা এবং দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর সি.পি.আই.(এম ) বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় ।
বিধায়ক অসুস্হ শরীরে ঘটনাস্হলে পৌঁছে বিধান সভার মারফৎ রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার দ্রুত ব্যবস্হা গ্রহনের আর্জি জানান । তিনি জানিয়েছেন যে দুর্গাপুর রক্ষা করতে হলে বিভেদ ভুলে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ কে দ্রুত হাতে হাতে মিলিয়ে কাজ করতে হবে । একই সাথে তিনি বলেন যে ‘ দুর্গাপুর রক্ষা কর’ আন্দোলনের অন্যতম দাবী হল দুর্গাপুর ব্যারেজের নিয়মিত রক্ষনাবেক্ষন ও ড্রেজিং । তিনি অভিযোগ করেছেন যে দুর্গাপুর ব্যারেজের আজকের এই পরিনতির জন্য দায়ী রাজ্য সরকার ও ডিভিসি কর্তৃপক্ষের  লাগাতার গাফিলতি । বারংবার জানানো হলেও কেউই কোন কার্যকরী ব্যবস্হা নেয় নি ।
 হিন্দুসহান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ ) এর ওবি-কনভেনর ( ডিএসপি শাখার ) ও সি.আই.টি.ইউ এর রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য বিশ্বরূপ ব্যানার্জী জানিয়েছেন যে দ্রুত ব্যবস্হা না নেওয়া হলে পরিস্হিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে । জল বেড়িয়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট জলাধার ও চ্যানেল গুলিতে জল কমে জলের অভাবে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা সহ ছোট-বড় ৩৩ টি কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে । অন্যদিকে ইস্পাতনগরী সহ বৃহত্তর দুর্গাপুর অঞ্চলে পানীয় জল সরবরাহের উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে চলেছে বলে আশংকা প্রকাশ করে তিনি জানিয়েছেন যে ইতিমধ্যে ইস্পাত কর্তপক্ষ ইতিমধ্যে ইস্পাতনগরীতে পানীয় জল সরবরাহের উপর নিয়ন্ত্রন জারী করেছে । তিনি আরও জানিয়েছেন পরিস্হিতির গুরুত্ব বুঝে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার কর্তৃপক্ষ সব রকমের প্রযুক্তিগত সহায়তার জন্য তৈরি রয়েছে । কারখানার উ্চপদস্হ আধিকারিকরাও ঘঠনাস্হলে উপস্হিত রয়েছে । ডিভিসির আধিকারিকরাও পৌঁছে লকগেটের মেরামতির চেষ্টা করছে । কিন্তু রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের দেখা পাওয়া যায় নি । দেখা পাওয়া যায় নি রাজ্য সরকারের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের ।
পশ্চিম বর্ধমান জেলার সভাপতি সি.আই.টি.ইউ  বিনয়েন্দ্র কিশোর চক্রবর্তী রাজ্য সরকারে বিরুদ্ধে ‘নির্লিপ্ত’ থাকার অভিযোগ তুলেছেন । তিনি বলেছেন যে ডিভিসি পূর্বেই রাজ্যের হাতে দুর্গাপুর ব্যারেজ ও ইরিগেশনের দায়িত্ব তুলে দিয়েছে কিন্তু রাজ্য সরকার তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ায় এই দূর্যোগ তৈরি হয়েছে । ফলে গোটা আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল ভয়াবহ সংকটের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে । ঘটনার ৮ ঘন্টা পড়েও  রাজ্য সরকারের আধিকারিকরদের ঘটনাস্হলে দেখা যায় নি । তিনি ক্ষোভের সাথে প্রশ্ন তোলেন – কোথায় গেলেন রাজ্যের মন্ত্রীরা ? কোথায় গেলেন আসানসোল ও দুর্গাপুরের মেয়র ?








Monday 20 November 2017

দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত দুই ঠিকা শ্রমিক,আহত ৭।



দুর্গাপুর,২০শে নভেঃ – আজ ভোর রাতে ( আনুমানিক রাত্রি ১-৩০ মিঃ থেকে ২-০০ মিঃ এর মধ্য ) দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার কোক ওভেনে ( ৩নং  ব্যাট্যারীর পিছনে )  ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মারা গেছেন দুই জন  ঠিকা শ্রমিক । গ্যাস পরিবহনের পাইপলাইনের ‘ওয়াটার-সিল’ কাজ না করায় বিষাক্ত ব্লাষ্ট ফার্ণেস গ্যাস লিকেজের জন্য এই দুর্ঘটনা ঘটে । মৃত ২ জন ঠিকা শ্রমিকের নাম যথাক্রমে সেখ হাফিজুল (  বাড়ী – আরতি গ্রাম ) ও সমীর চক্রবর্তী (  বাড়ী – জামগড়া ) । আহত আরও ৪ শ্রমিক – প্রবীর বোস , সেখ ফরিউদ্দীন , উত্তম কর্মকার ও সরোজ রায় কে স্হানীয় মিশন হাসপাতালে  ভর্তি করা হয়েছে । আপাতত তাদের অবস্হা স্হিতিশীল বলে জানা গেছে । এক জন কে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয় ।এই মাসেই অন্য আরেক টি দুর্ঘটনায় আরেক জন কর্মরত ঠিকা শ্রমিকের মৃত্যু হয় ।
আজ সকালে দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পরতেই শ্রমিকদের মধ্যে প্রবল বিক্ষোভ তৈরি হয় । হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ ) এর ডাকে দলে দলে শ্রমিক কোক ওভেনের জি.এম. অফিসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন । পরে সুব্রত ঘোষের নেতৃত্বে ইউনিয়নের এক প্রতিনিধিদল কোক ওভেনের জি.এম. এর সাথে দেখা করে অবিলম্বে মৃত শ্রমিকদের পরিবার পিছু একজন পোষ্যের  ডিএসপি-তে স্হায়ী চাকুরী , সেফটি কমিটি সহ সুরক্ষা সংক্রান্ত সমস্ত স্ট্যাটুটারী কমিটিকে অবিলম্বে সক্রিয় করা ও দুর্ঘটনার সামগ্রিক তদন্ত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কে দিয়ে করানোর দাবী জানানো হয় । এই দাবীতে আগামী পরশু দিন ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ই.ডি.ওয়ার্কস এর দফ্তরে প্রতিবাদ সভার ডাক দেওয়া হয়েছে ।
ইউনিয়নের সহ-সভাপতি প্রদ্যুৎ মুখার্জী জানিয়েছেন যে ডিএসপি তে ঘটে যাওয়া একের পর এক দুর্ঘটনা ও তৎজনিত কারনে মৃত্যুর ঘটনা বন্ধের জন্য প্রতিবিধান চেয়ে আগামী ২২-২৩ শে নভেঃ ভাইজাগে অনুষ্ঠিত জয়েন্ট কমিটি অফ সেফটি,হেলথ এ্যান্ড এনভায়রোনমেন্ট ইন স্টিল ইন্ড্রাস্টির( জে.সি.এস.এস.আই.) সভায় তিনি ইউনিয়নের পক্ষ থেকে দাবী জানাবেন । তিনি অভিযোগ করেছেন যে কর্তৃপক্ষের থেকে দক্ষ ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিস্টদের স্হায়ী করার বদলে বসিয়ে দিয়ে অদক্ষ ঠিকা শ্রমিকদের নিযুক্ত করার প্রবনতা থাকায় সেফটির বিষয়ে অবহেলা ও দুর্ঘটনা বাড়ছে ।
ইউনিয়নের যুগ্ম-সম্পাদক স্বপন মজুমদার অভিযোগ করেন যে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার কর্তৃপক্ষের স্বৈরাচারী ও একগুঁয়েমি মনোভাবের ফলে সেফটি কমিটি সহ সুরক্ষা সংক্রান্ত সমস্ত স্ট্যাটুটারী কমিটি নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়ায় কারখানার মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে । ফলে ‘ব্লাডলেস’ ইস্পাত উৎপাদন লক্ষভ্রষ্ট হচ্ছে । ইউনিয়নের সহকারী কোষাধ্যক্ষ সন্দীপ দুবে বলেন যে সি.আই.টি.ইউ এর আন্দোলনের ফলে কর্তৃপক্ষ গ্যাস-মিটার এর ব্যবস্হা করলেও , তার সংখ্যা যথেষ্ঠ না থাকায় গতকালের দুর্ঘটনা এড়ানো যায় নি ।

এই ঘটনায় এলাকার বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে  দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার কর্তৃপক্ষ কে অবিলম্বে দুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য ইউনিয়ন সমূহের সাথে যৌথ আলোচনায় বসা , অবিলম্বে মৃত শ্রমিকদের পরিবার পিছু একজন পোষ্যের অবিলম্বে ডিএসপি-তে স্হায়ী চাকুরী ও দুর্ঘটনার সামগ্রিক তদন্ত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কে দিয়ে করানোর আবেদন জানিয়েছেন । তিনি মৃত ঠিকা শ্রমিক সেখ হাফিজুল ও সমীর চক্রবর্তীর পরিবারবর্গের প্রতি গভীর মর্মবেদনা জানিয়ে সর্বোতভাবে তাদের পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন ও আহত শ্রমিকদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন ।




Sunday 19 November 2017

প্রয়াত পার্টি সদস্যা শিখা বল এর স্মরন সভা ।



দুর্গাপুর, ১৭ই নভেঃ – গত ১১ই নভেঃ প্রয়াত হয়েছেন পার্টি সদস্যা শিখা বল । তিনি দুরারোগ্য ক্যান্সারে ভুগছিলেন । মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬১। তাঁর দুই পুত্র,দুই পুত্রবধূ ও নাতি বর্তমান।
শিখা বল ১৯৫৬ সালে খড়গপুরে হিজলীতে জন্মগ্রহন করেন । বিবাহসূত্রে তিনি দুর্গাপুরে আসেন । তাঁর স্বামী দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার শ্রমিক আশুতোষ বল প্রয়াত হলে সন্তান সহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রতিকুলতার মধ্যে পারিবারিক দায়িত্ব পালনের সাথে সাথে তিনি গনতান্ত্রিক মহিলা সমিতির কাজের সাথে যুক্ত হয়ে নেতৃত্বের ভুমিকা পালন করেন । পার্টির দুর্গাপুর ইস্পাত ৩নং এরিয়া সাংগঠনিক কমিটির অন্তর্গত শিবাজী রোড শাখার পার্টি সদস্যা শিখা বল গনতান্ত্রিক মহিলা সমিতির ইস্পাতনগরীর এ-জোন জোনাল কমিটির সদস্যা ছিলেন । ২০০৩ সালে তিনি পার্টি সভ্যপদ লাভ করেন ।
জনপ্রিয় ও পার্টির শৃংখলাবদ্ধ সৈনিক শিখা বলের স্মরনে আজ পার্টির দুর্গাপুর ইস্পাত ৩নং এরিয়া সাংগঠনিক কমিটির পক্ষ থেকে শিবাজী রোড সেক্টর অফিসে আয়োজিত স্মরন সভায় বহু মানুষের সমাগম হয় ।
শোক প্রস্তাব পাঠ করেন জীবন আইচ । স্মৃতিচারন ও বক্তব্য রাখেন পার্টির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সাংগঠনিক কমিটির সদস্য সন্তোষ দেবরায় , নির্মল ভট্টাচার্য , সারা ভারত গনতান্ত্রিক মহিলা সমিতির পঃ বঙ্গ রাজ্য কমিটির সদস্যা আল্পনা চৌধুরী,কাজল চ্যাটার্জী,কে.এস.ব্যানার্জী প্রমূখ । উপস্হিত ছিলেন পার্টির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সাংগঠনিক কমিটির সদস্য সুবীর সেনগুপ্ত , প্রাক্তন বিধায়িকা অর্চনা ভট্টাচার্য প্রমূখ ।








Friday 17 November 2017

প্রয়াত পার্টি সদস্যা শিখা বল ।



দুর্গাপুর, ১৭ই নভেঃ – গত ১১ই নভেঃ প্রয়াত হয়েছেন পার্টি সদস্যা শিখা বল । তিনি দুরারোগ্য ক্যান্সারে ভুগছিলেন । মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬১। তাঁর দুই পুত্র,দুই পুত্রবধূ ও নাতি বর্তমান।

পার্টির দুর্গাপুর ইস্পাত ৩নং এরিয়া কমিটির অন্তর্গত পার্টি সদস্যা শিখা বল গনতান্ত্রিক মহিলা সমিতির এ-জোন জোনাল কমিটির সদস্যা ছিলেন । ২০০৩ সালে তিনি পার্টি সভ্যপদ লাভ করেন ।

Saturday 11 November 2017

প্রয়াত পার্টির ঘনিষ্ঠ দরদী পি.এস.ঘোষ ।



দুর্গাপুর, ১১ই নভেঃ – গত ৭ই নভেঃ প্রয়াত হয়েছেন পার্টির ঘনিষ্ঠ দরদী ও ইস্পাত ঠিকা শ্রমিক আন্দোলনের সূচনা লগ্নের অন্যতম অগ্রনী নেতা পি.এস.ঘোষ । মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৫। তাঁর স্ত্রী,কন্যা ও পুত্র বর্তমান। তাঁর মরদেহ ইস্পাতনগরীর চিত্তব্রত মজুমদার ভবনে নিয়ে আসা হলে নেতৃত্ব সহ বহু সাধারন মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানান ।
গত শতাব্দীর ৬০ এর দশকের শেষভাগে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার ঠিকা শ্রমিক আন্দোলনের সূচনায় প্রতিষ্ঠিত হয় ইউনাইটেড কন্ট্রাক্টার ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন ( ইউ.সি.ডব্লু.ইউ ,সি.আই.টি.ইউ ) । প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই পি.এস.ঘোষ ইউ.সি.ডব্লু.ইউ এর অন্যতম নেতা হয়ে ওঠেন ও পরবর্তীকালে ইউয়নের যুগ্ম-সম্পাদক হয়েছিলেন । তিনি ইস্পাত শ্রমিকদের সর্ব-ভারতীয় সংগঠন এস. ডব্লু.এফ.আই (সি.আই.টি.ইউ ) এর কার্যকরী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন । ৬০ এর দশকের শেষভাগে পার্টি সভ্যপদ লাভ করেন । পরবর্তীকালে পার্টির আঞ্চলিক কমিটির সদস্য হয়েছিলেন । ১৯৯৪ সালে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার স্হায়ী শ্রমিক হয়েছিলেন । সেক্টর সংগঠন ও ক্লাব সংগঠন গড়ে তোলার ক্ষেত্রও গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেছিলেন । শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে তাঁকে বহুবার দৈহিক ও বিবিধ আক্রমনের শিকার হতে হয় , জেলে যেতে হয় । রোগগ্রস্হ হয়ে শারীরিক অক্ষমতার জন্য সাম্প্রতিককালে পার্টি সভ্যপদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছিলেন ।
তাঁর মৃ্ত্যুতে ইউ.সি.ডব্লু.ইউ এর পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করে পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়েছে ।



যে কোন পরিস্হিতি মোকাবিলার জন্য উপযুক্ত সংগঠন গড়ার আহ্বান জানিয়ে শেষ হল পশ্চিম বর্ধমান জেলার যুব সম্মেলন ।



দুর্গাপুর,১১ই নভেঃ – আজ বিকালে দুর্গাপুরের সগরভাঙ্গায় শেষ হল ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের পশ্চিম বর্ধমান জেলার ২-দিন ব্যাপি জেলা সম্মেলন । আজ সম্মেলনে  বক্তব্য রাখেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি সায়নদীপ মিত্র । এছাড়াও বক্তব্য রাখেন অভ্যর্থনা সমিতির পক্ষে সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকার । উপস্হিত ছিলেন অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি ও দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় ।

সম্মেলন ৫০ জনের জেলা কমিটি নির্বাচিত করেছে । সম্পাদক ও সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন যথাক্রমে হেমন্ত প্রভাকর ও অনামিকা সরকার । কোষাধ্যক্ষ ও যুবশক্তির দায়িত্বে নির্বাচিত হয়েছেন যথাক্রমে জয় বারুই ও বৃন্দাবন রুইদাস ।







অত্যাচারি-শোষকদের মুখ বদলেছে , আসল লক্ষ্য হোক শোষন-বঞ্চনার অবসান : মহঃ সেলিম



দুর্গাপুর ,১০ই নভেঃ : আজ দুর্গাপুরের সগরভাঙ্গা হাউসিং কলোনীর পোষ্ট অফিস ময়দানে ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের পশ্চিম বর্ধমান জেলার ২১-তম জেলা সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশে আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় একথা বলেন ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের প্রাক্তন সর্ব ভারতীয় সম্পাদক ও সিপিআই(এম) এর পলিট ব্যুরো সদস্য মহঃ সেলিম । তিনি বলেন যে ভারতের ব্রিটিশ শাসনের অবসানে স্বাধীনোত্তোর ভারতে একে একে বিভিন্ন দল ক্ষমতায় এসেছে ও বিদায় নিয়েছে কিন্তু শোষন-বঞ্চনা-দূ্র্ণীতির অবসান হয় নি ,বরং বেড়েছে । নেতাদের মুখ বদল হয়েছে কিন্তু নীতি বদল হয় নি । এখানেই পার্থক্য বাম রাজনীতির সাথে দক্ষিনপন্হী রাজনীতির । ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনে কোন মুখ সামনে রেখে চলে না , কেবল মাত্র নীতি-আদর্শবোধে অবিচল , সমাজ পরিবর্তনের লক্ষ্যে স্হির ।কেবল চাকরীর জন্য নয় , ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনে সমস্ত ধরনের অমঙ্গলের বিরুদ্ধে ও সব কটি মৌলিক অধিকারের জন্য লড়াই করছে ।   ২০১৪ সালে ভারতের রাজনীতিতে হৈ-হুল্লোর সৃষ্টি করে ‘ অবতার ‘ মোদি কালো টাকা উদ্ধার ও প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছলেন । পরে নোট-বন্দী করলেন । কালো টাকা উদ্ধার হল কোথায় ? প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ পাঠানোর প্রতিশ্রুতি কোথায় গেল ? পানামা পেপার,প্যারাডাইস পেপার এর তদন্ত কোথায় হল ?উল্টে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিত সিং , অমিত শাহর ছেলে  জয় শাহ অথবা জাতীয় প্রতিরক্ষা উপদেষ্টার ছেলের দূর্ণীতি সামনে আসছে । একই অবস্হা রাজ্যের ।নারদা-সারদা কেলেংকারির সাথে বাই ওয়ান গেট ওয়ান – এর মত মমতা ব্যানার্জীর সাথে তার ভাইপো অভিষেক ব্যানার্জীর ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ড’ সংস্হার কেলেংকারী আজ প্রকাশ্যে এসেছে । ‘মা-মাটি-মানুষ’ এর শ্লোগানের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক নির্মম প্রতারনা । ‘মা’এর মর্ম বুঝেছেন বিমল গুরুং,কিষানজী ।  ‘মাটি’ বাংলার ভবিষ্যত কে  কাদায় পরিনত করেছে এবং ‘মানুষ’ এর নামে অমানুষে পরিনত করার চেষ্টা হচ্ছে । মোদি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন চিটফান্ড কেলেংকারীর নায়কদের ধরবেন । উল্টে সিবিআই তদন্তের নামে নাটক করছে । এখন আবার দূর্ণীতির অন্যতম নায়ক মুকুল রায় কে দলে নিয়েছেন । অন্যদিকে মিডিয়ার একাংশ তুবড়ির মত ফুলঝড়ি ছড়িয়ে ‘দিদিভাই-মোদিভাই’-কে শিরোনামে রাখার চেষ্টা করছে । কিন্তু ফুলঝড়ির শেষে যেমন পোড়া সুতলি পড়ে থাকে,আজকে তেমনি  তৃণমূল ও বিজেপির দূর্ণীতিগ্রস্হ কংকালসার চেহারা লুকিয়ে রাখা যাচ্ছে না । বামপন্হীরা মানুষ কে সাথে নিয়ে সমস্ত ধরনের  শোষন-বঞ্চনা-দূ্র্ণীতির অবসানে জোরদার লড়াই সংগঠিত করছে । এই লক্ষ্য ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের পশ্চিম বর্ধমান জেলার ২১-তম জেলা সম্মেলন আলোচনা হবে ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্হা গ্রহন করবে ।
এর আগে ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের পঃ বঙ্গ রাজ্য সম্পাদক জামির মোল্লা বলেন যে তৃণ থাকলে গরু চড়তে আসে ।তৃণমূল যতই সন্ত্রাস করুক না কেন ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনে কোন ভাবেই মাথা নোয়াবে না । এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের পশ্চিম বর্ধমান জেলার সাংগঠনিক কমিটির আহ্বায়ক পরেশ মন্ডল । সভাপতিত্ব করেন শুভাশীষ মাইতি ।
এর আগে দুর্গাপুরের সগরভাঙ্গার অভিনন্দন লজের রোহিত ভেমুলা মঞ্চ ও গৌরি লঙ্কেশ নগরে শুরু হয় ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের পশ্চিম বর্ধমান জেলার ২১-তম জেলা সম্মেলন । পতাকা উত্তোলন করেন ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের পশ্চিম বর্ধমান জেলার সাংগঠনিক কমিটির সহ-সভাপতি ওয়াসিমুল হক ।

সম্মেলন চলবে আগামীকাল অবধি । প্রকাশ্য সমাবেশে শেষ হওয়ার পর প্রতিনিধি সম্মেলন শুরু হয়েছে । উদ্বোধনী ভাষন দিয়েছেন ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের পঃ বঙ্গ রাজ্য সম্পাদক জামির মোল্লা ।