দুর্গাপুর,২৭শে এপ্রিল : দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় কর্মরত শ্রমিক-আধিকারিক ওপরে
দেশ জোড়া করোনা অতিমারীর ‘দ্বিতীয় ধাক্কা’ এসে পড়ছে । করোনা রোগীদের ভীড়ে ডিএসপি মেইন হাসপাতালের
নিজস্ব কোভিড ওয়ার্ডে উপচে পড়েছে ।আজ সকালে কোভিড টেস্ট বন্ধ হয়ে যায় । ফিভার ক্লিনিকে
দেখাতে এসে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে অনেকে অসুস্হ হয়ে পড়েন । কোভিডের টিকার লম্বা লাইনে
দাঁড়িয়েও অনেকে অসুস্হ হয়ে পড়ছেন ।তাজ্জব হওয়ার মত বিষয় হল যে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা
রাজ্য সহ সারা দেশে অক্সিজেন জুগিয়ে সংবাদের শিরোনামে,সেই কারখানার মেইন হাসপাতালে
অক্সিজেনের জোগান দিচ্ছে এক বেসরকারি সংস্থা ! ইতিমধ্যে মেইন হাসপাতালে কর্মরত নার্স
সহ বেশ কয়েকজন কর্মরত শ্রমিকের করোনায় মৃত্যু হলেও বীমার টাকা এবং পোষ্যের চাকুরী হয়
নি । অথচ করোনার মধ্যে উৎপাদন অব্যাহত রেখে,এই মুহুর্তে সেইলের সব থেকে বেশী মুনাফা
করছে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা ।মোদি সরকারের কাছে জুটেছে বেসরকারীকরনের হুমকি । এই সবের বিরুদ্ধে সিআইটিইউ
ইতিমধ্যেই জোড়ালো আন্দোলন গড়ে তুলেছে । কিন্তু গতকাল কর্তৃপক্ষ আচমকা কোভিড টেস্ট বন্ধের
নোটিস জারি করতেই ধৈর্যের বাঁধ ভাঙ্গে । আজ সকাল থেকে প্রতিবাদের ঝড় তোলে হিন্দুস্হান
স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( সিআইটিইউ)। সকালে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার মেডিক্যাল অ্যান্ড
হেলথ সার্ভিসেস এর ডাইরেক্টর ও ইডি ডঃ কে.এন ঠাকুরের সাথে ইউনিয়নের এক প্রতিনিধি দল
দেখা করেন।
ইউনিয়নের
পক্ষ থেকে অবিলম্বে কারখানা ও সহযোগী সংস্হার সমস্ত স্হায়ী-ঠিকা-অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারী
ও আধিকারিক এবং তাদের পরিবার বর্গের অবিলম্বে কোভিড টিকাকরন এর জন্য মেইন হাসপাতাল,ইস্পানগরী
এ-জোন ও বি-জোনের হেলথ সেন্টার,প্ল্যান্ট মেডিক্যাল ও দুর্গাপুরের সহযোগী বেসরকারী
হাসপাতালের জরুরী পদক্ষেপ এবং রিএম্বার্সমেন্টের সুযোগ চালু, রিএম্বার্সমেন্টের সুযোগ সহ হাসপাতালে কোভিড টেস্ট পরিষেবা জরুরী ভিত্তিতে
পুনরায় চালু ও প্রয়োজনে সহযোগী হাসপাতালের পরিবর্তন, কোভিড টিকাকরন এর সাথে সাথে কারখানা
ও সহযোগী সংস্হার সমস্ত স্হায়ী-ঠিকা-অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারী ও আধিকারিক এবং তাদের
পরিবার বর্গের বিভিন্ন পর্যায়ের কোভিড চিকিৎসার জন্য মেইন হাসপাতালের জেরিয়াট্রিক ওয়ার্ড
সহ মেডিক্যালের তিনটি ওয়ার্ড অক্সিজেনের সুষ্ঠ সরবরাহ যুক্ত বেডের ব্যবস্হা ও সহযোগী
বেসরকারী হাসপাতালে উপযুক্ত সংখ্যক বেড রিজার্ভ,রোগীদের খবরাখবর দেওয়ার জন্য এক জন
ডাক্তারে নেতৃত্বে হেল্প ডেস্ক চালু,কারখানার উৎপাদিত অক্সিজেন দিয়ে অক্সিজেন ট্যাঙ্ক
ও সিলিন্ডার সদাসর্বদা পূর্ণ রাখা,কারখানা ও ইস্পানগরীতে কোভিড রোগীদের জন্য উপযুক্ত
ও পৃথক অ্যাম্বুলেন্স,অবিলম্বে উপযুক্ত সংখ্যক ডাক্তার-নার্স-চিকিৎসা কর্মী নিয়োগ,প্রয়োজনীয়
ওষুধ মজুদ,
কারখানা
ও ইস্পানগরীতে স্যানিটাইজেশন ও কর্মরতদের জন্য মাস্ক-হ্যান্ড গ্লাভস-সাবান ইত্যাদির
সরবরাহ,হাসপাতাল কে নিরবিচ্ছিন্নভাবে পরিস্কার রাখা,কর্মরতদের সংখ্যা কমিয়ে রোস্টার
বিধি চালু প্রভৃতি দাবি জোড়ালো ভাবে উপস্হাপিত
করা হয় । পরে কারখানার ইডি ( ওয়ার্কস) এর পক্ষ থেকে কোভিড সংক্রান্ত রিভিয়ু কমিটির
মিটিং-এ উক্ত দাবির বেশ কিছু মেনে দাবি কর্তৃপক্ষ মেনে নেয় বলে হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ
ইউনিয়ন ( সিআইটিইউ) এর পক্ষ থেকে বিশ্বরূপ ব্যানার্জি জানিয়েছেন । তিনি জানান যে সহযোগী
বেসরকারী হাসপাতালে ৫০টি বেড রিজার্ভ,মেইন হাসপাতালে ১৬০ টি বেড কোভিড রোগীদের জন্য
রাখা হচ্ছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছ। হেল্প ডেস্ক ও পৃথক অ্যাম্বুলেন্স এর ব্যবস্হা,
হাসপাতালে কারখনার অক্সিজেন এর সরবরাহ,হেলথ সেন্টারে ভ্যাকসিন দেওয়ার দাবি কর্তৃপক্ষ
মেনে নিয়েছে । অস্হয়ী
ডাক্তার-নার্স-চিকিৎসা
কর্মী নিয়োগ শুরু হয়েছে ।