Tuesday 30 July 2013

আক্রান্ত - দুর্গাপর ইস্পাত কারখানার ঠিকাশ্রমিকদের জীবন-জীবিকা ,অর্জিত অধিকার ও গণতন্ত্র । ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলনই একমাত্র বিকল্প ।

গত ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে পরে  পঃবঃ - এ তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার গঠিত হওয়ার পর থেকে রাজ্যব্যাপী কমিউনিষ্ট ও বামপন্থীদের নিশ্চিন্হ করার জন্য  পুলিশী-সহায়তায় নৃশংস হামলা চালাচ্ছে শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের দুষ্কৃতি-বাহিনী আর এই আক্রমনের চূড়ান্ত শিকার ,দুর্গাপর ইস্পাত কারখানার ঠিকাশ্রমিকদের আপন সংগঠন UCWU  ( ইউনাইটেড কন্ট্রাক্টার ওয়াকার্স  ইউনিয়ন  )-এর নেতৃত্ব -সদস্য-সমর্থক ও সাধারণ শ্রমিকরা ।  

                 ২০১১ সালের ২৭শে - ২৮ শে মে থেকে তৃণমূলের সশস্ত্র বাইক বাহিনীর সন্ত্রাস শুরু হয় দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার ভিতরে ও বাইরে ।এই বাহিনী  বিনা গেট-পাসে কারখানার  অভ্যন্তরে ঢুকে ঠিকাশ্রমিকদের উপর নৃশংস শারীরিক আক্রমন , হুমকি-ভীতি প্রদর্শন শুরু করে , যা এখনও অব্যাহত । কারখানার বাইরে এই নৃশংসতা  অমানবিকতার  মাত্রা ছাড়িয়েছে ।কেবল  শ্রমিকরা নয় আক্রন্ত হছ্ছেন তাদের পরিবারের সদস্যরাও ! রাস্তায় চলাফেরা , আত্মীয়-পরিজনদের বাড়ীতে যাওয়া , দোকান-বাজারে যাওয়ার উপরে নিত্য-নতুন ফতেয়া জারি করছে তৃণমূলী দুষ্কৃতি- বাহিনী । মিথ্যা-মামলায় জড়ানোয় হয়েছে  UCWU-এর  নেতৃত্বকে । এই অভূতপুর্ব্ব সন্ত্রাসে তৃণমূলের দুষ্কৃতি- বাহিনী দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার ৩৫০০ ঠিকাশ্রমিককে উচ্ছেদ করেছে । এমনকি ২৫-৩০ বছর ধরে কাজ করছেন , এমন শ্রমিকরাও বাদ জান নি ! 

                   ইতিমধ্যে , উচ্ছেদ  হওয়া পর শ্রমিক পরিবারের অনেকে অভাবের তাড়নায় বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন , অনেকের ছেলেমেয়ের পড়াশুনা বন্ধ হয়ে গেছে । উচ্ছেদ হওয়া ঠিকাশ্রমিক পরিবারগুলির অসহনীয় মর্মান্তিক অবস্হায় দিন  কাটচ্ছেন । 

পঃ বঙ্গে  কমিউনিষ্ট এবং বামপন্থীদের উপর এই আক্রমন কিন্তু নতুন নয় । ৭০' দশকের গোড়ার দিকে ঠিক একইভাবে তৃণমূলের পূর্বসূরী কংগ্রেসের নেতৃত্বে ভয়ংকর আক্রমন চালানো হয়েছিল । সেদিনও এক বিভৎস আক্রমনের শিকার হতে হয়েছিল ঠিকাশ্রমিক ও UCWU-কে । কেবলমাত্র UCWU-র সদস্য হওয়ার অপরাধে ৭০০ জন কে উচ্ছেদ করা হয়েছিল । এই অগণতান্ত্রিক চেতনাই হোল দক্ষিনপন্হী দেউলিয়া রাজনীতির বৈশিষ্ঠ্য  । পঃ বঙ্গের মানুষ এই আধা-ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাসের উপযুক্ত জবাব দিয়েছিলেন ১৯৭৭ সালে বামফ্রন্ট সরকার  গঠন করার মধ্য দিয়ে । বিগত ৩৪ বৎসর ধরে বামফ্রন্ট সরকার  যেমন বিরোধীদের প্রতি প্রতিহিংসামূলক আচরন করেনি , ঠিক একইরকম ভাবে নৃশংস আক্রমনের শিকার হয়েও UCWU - এর পক্ষ থেকে বিরোধীদের প্রতি কোনো প্রতিহিংসামূলক আচরন করা হয় নি । যে ৭০০ কে উচ্ছেদ হতে হয়েছিলো , তাদেরকে পূণর্বহাল করা হলেও , যারা  ৭০০ জন , উচ্ছেদ -হওয়া- শ্রমিকদের সরিয়ে জোর করে কাজে ঢুকছিলেন ,তাদের  একজনকেও ,' উচ্ছেদ ' করা হয় নি । এমন কি UCWU-এর নেতৃত্ব দীর্ঘ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ঠিকাশ্রমিকদের স্হায়ীকরণের ফলও  তারা ভোগ করছেন । একেই বলে সভ্যতার সাথে বর্বরতার পার্থক্য ! 
          ১৯৬৭ সালে UCWU -র জন্মলগ্ন থেকে ইস্পাত  ঠিকাশ্রমিক আন্দোলনের দাবী আদায়ে  UCWU -এর ধারাবাহিক গৌরবজ্জ্বোল ভূমিকা এক ইতিহাস সৃষ্ঠি করেছে  । সেই ধারাবাহিক  দাবী আদায়ের কতকগুলি উল্লেখযোগ্য সাফল্য হোল : - ১) ১৯৭৪ সালে ঐতিহাসিক প্রথম  বেতন-চুক্তি ।  ২) ৫৫০০ জন ঠিকাশ্রমিকের দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় স্হায়ীকরন । ৩) ২০১০ সালে আরও ৬০ জনের স্হায়ীকরন । ৪) মহিলা ও পুরুষ শ্রমিকদের সম কাজে  সমান বেতন ( আগে পুরুষ শ্রমিকদের তুলনায় মহিলা শ্রমিকদের কম বেতন দেওয়া হোত । )  ৫) ঠিকাশ্রমিকদের সর্বনিম্ন মাসিক বেতন ১০৯৩৮/- ও প্রজেক্ট শ্রমিকদের মাসিক বেতন ৯৯৩৮/- । ৬) বাৎসরিক বোনাস ,বিভিন্ন ছুটি , সেফটি সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা । ৭)দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার অভ্যন্তরে  কর্মরত অবস্হায় মৃত্যু হলে , মৃত শ্রমিকের স্ত্রী অথবা ছেলের দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় স্হায়ী  কাজে  চাকুরী । ৮) গেট-পাস আদায় । ৯) ২০০৬ সালে বেতন-চুক্তি শেষ হলেও ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মাসিক  ৮০৬/- + ১০০০ = ১৮০৬/- আদায় । ১০) স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৬-মাস অন্তর বেতন বৃদ্ধি । ১১) অল্পসংখ্যক হলেও ঠিকাশ্রমিকদের জন্য কোয়ার্টারের সুবিধা আদায় , প্রভৃতি ।  
                                          কিন্তু আজ এই অর্জিত অধিকার বিপন্ন । ঠিকাশ্রমিকদের উচ্ছেদ  এখনও জারি  আছে । অন্যদিকে , তৃণমূলী দুষ্কৃতীবাহিনী  ও ঠিকাদারদের যোগসাজসে  কর্মরত ঠিকাশ্রমিকদের একটা বড় অংশ নির্ধারিত বেতনের থেকে কম বেতনে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন । প্রতিবাদ করলে ,'উচ্ছেদ' হতে পারেন , এই ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চাইছেন না । 
       এই অবস্হায় , UCWU-এর পক্ষ থেকে , অর্জিত অধিকার বজায় রাখতে এবং উচ্ছেদ শ্রমিকদের অবিলম্বে পুনর্বহাল , নোটিফায়েড ও বি-লিষ্ট ভুক্ত শ্রমিকদের স্হায়ীকরন , ঠিকাশ্রমিকদের চুক্তি-মাফিক বেতন-প্রদান , সমস্ত ধরনের ঠিকাশ্রমিকদের জন্য অবিলম্বে বেতন-চুক্তি সহ অন্যান্য দাবীকে সামনে রেখে  ট্রেডইউনিয়নগুলির  ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান জানানো হয়েছে ।
              

Thursday 25 July 2013

দুর্গাপুরের শ্রমিক আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত কমরেড বিনয় লাহিড়ীর জীবনাবসান ।

দুর্গাপুর , ২৫শে জুলাই : গতকাল দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার মেইন হাসপাতালে সন্ধ্যা ৬-৪৫ মিনিটে দুর্গাপুরের শ্রমিক আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত কমরেড বিনয় লাহিড়ীর জীবনাবসান হয়েছে । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ । দীর্ঘকাল ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন । তাঁর স্ত্রী , এক কন্যা ও এক পুত্র বর্তমান । 
             কমরেড  বিনয় লাহিড়ীর ,জীবিকার সন্ধান  ১৯৫৯ সালে  দুর্গাপুর আসেন এবং দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় শিক্ষানবীশ শ্রমিক হিসাবে কাজে যোগদান করেন । জনবিরোধী -কংগ্রেসী শাসনের বিরুদ্ধে পঃ বঃ  ৬০-এর দশকের উত্তাল গনআন্দোলনের দিনে দুর্গাপুরে ঐতিহাসিক শ্রমিক-আন্দোলনের জোয়ার সৃষ্টির এক অন্যতম কারিগর ছিলেন কমঃ লাহিড়ী । তাই শাসকশ্রনীর প্রতিহিংসার শিকার হতে হয়েছিল  কমরেড  লাহিড়ীকে এবং তাকে চাকরী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল কংগ্রেসী-জমানার কুখ্যাত ,'ভেরিফিকেশন-এ্যাক্ট ' প্রয়োগ করে । ভারতবর্ষের ইস্পাত শ্রমিক আন্দোলনের পথপ্রদর্শক হিন্দুস্হান স্টীল এম্পলয়ীজ ইউনিয়নের(HSEU ) প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন কমরেড  বিনয় লাহিড়ী । এছাড়াও , দুর্গাপুরের ঠিকাশ্রমিক ও ইস্পাত ঠিকাশ্রমিক আন্দোলনের দিশারী ইউনাইটেড কন্ট্রাক্টারস ওয়ার্কাস ইউনিয়নের ( UCWU ) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন কমরেড  বিনয় লাহিড়ী । একই সাথে কমরেড  বিনয় লাহিড়ী নিজেকে যুক্ত করেছিলেন কমিউনিষ্ট আন্দোলনের সাথে । প্রথমে অবিভক্ত ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টী ও পার্টী ভাগ হলে তিনি আজীবন ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টী ( মার্কসবাদী ) সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন ।

            আজ সকাল ৯-০০ টায়,কমরেড  বিনয় লাহিড়ীর মরদেহ প্রথমে নিয়ে আসা হয়  শহীদ আশীষ-জব্বর ভবনে । শোকাচ্ছন্ন বিপুল জনতা প্রয়াত নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান । রক্তপতাকায় আচ্ছদিত  মরদেহে মাল্যদান করেন , কমঃ রথীন রায় , সন্তোষ দেবরায় , সুশান্ত ব্যানার্জ্জী , সুবীর(লাল্টু) সেনগুপ্ত , নির্মল ভট্টাচার্য্য প্রমূখ । এরপরে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় HSEU , UCWU এর ইউনিয়ন দফ্তর ও বিমল দাসগুপ্ত ভবনে । পরে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় ।  
   তার মৃত্যুতে ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টী ( মার্কসবাদী )-র দুর্গাপুর ১এ ও ১বি জোনাল কমিটি এবং HSEU ও UCWU এর পক্ষ থেকে শোকজ্ঞাপন করে পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়েছে ।















                                
                                       

Monday 22 July 2013

প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক মঞ্চের কনভেনশন ।

দুর্গাপুর ২২শে জুলাই :  আজ , ইস্পাতনগরী ও সংলগ্ন সেপকো টাউনশীপের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক     সংগঠনকে নিয়ে তৈরী ," দুর্গাপুর প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক মঞ্চ" -এর কনভেনশন অনুষ্ঠিত হোল স্হানীয় চিলন্ড্রেন্স এ্যাকাডেমির প্রেক্ষাগৃহে । দুর্গাপুর সহ সমগ্র পঃ বঙ্গ  জুড়ে যে অসামাজিক কার্যকলাপ চলেছে , সাংস্কৃতিক জগৎও তার শিকার হচ্ছে । প্রসংগত, সাম্প্রতিক কালে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার ভবন-কর্তৃপক্ষ গণনাট্য সংঘের ইস্পাত শাখাকে নাট্যপ্রদর্শনীর অনুমতি নিয়ে টালবাহানা করছেন । 

              কনভেনশনে বিভিন্ন বক্তারা , এই পরিস্হিতিতে শিল্পী-সাহিত্যিকদের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মধ্য দিয়ে জনমানসে প্রতিবাদের তরঙ্গ সৃষ্টির আহ্বান জানান । শ্রী সলিল দাসগুপ্ত , কবিরঞ্জন দাসগুপ্ত , অশোক দাসগুপ্ত , অশোক দাস , কানাই বিশ্বাস , বনানী ভট্টাচার্য  ও প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক মঞ্চের সম্পাদক রমেন  দাস বক্তব্য রাখেন । কনভেনশনে সভাপতিত্ব করেন মঞ্চের সভাপতি  শ্রী নির্মাল্য ঘোষ । কনভেনশনে , DSP-কর্তৃপক্ষকে  ইস্পাত কারখানার ভবনগুলিকে  সাংস্কৃতিক কার্যকলাপে ব্যবহার করার দাবী জানিয়ে ডেপুটেশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং নভেম্বর -বিপ্লব উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কর্মসূচী গ্রহন করা হয়েছে । 

Monday 15 July 2013

তৃণমূলীদের বর্বরতা : শেষ কোথায় ?

দুর্গাপুর, ১৫ই জুলাই : গতকাল  ইস্পাতনগরীর ভারতী রোডে তৃণমূলীদের বর্বর আক্রমনের শিকার হলেন, মাধ্যমিক-পাস  ১৯ বছরের মোহন পাসোয়ান নামে একজন শারীরিক প্রতিবন্দ্ধী  যুবক। তার অপরাধ ,তিনি তৃণমূলীদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে গত ৫ই জুলাই ভারতী মোড়ে সিপিআইএমের ,তৃণমূলী-সন্ত্রাস বিরোধী সভায় যোগদান করেছিলেন ! 

              গতকাল   সকালবেলায় , শ্রী পাসোয়ান যখন বাজার করার জন্য ভারতী মোড়ে যাচ্ছিলেন তখন কুখ্যাত তৃণমূলী দুষ্কৃতি আজাদ সিং ,ললিত পাসোয়ান ও শুভংকর সরকার তাকে বেধড়ক মারধোর করে । মারের চোটে মোহন পাসোয়ান অজ্ঞান হয়ে গেলে , ঐ দুষ্কৃতিরা তার পকেট থেকে ১০০০ টাকা লুঠ করে পালিয়ে যায় । 

      খবর পেয়ে , স্হানীয় মানুষ ও সিপিআইএম নেতৃত্ব ছুটে এসে শ্রী পাসোয়ানকে উদ্ধার করে স্হানীয় ইএস আই হসপিটালে নিয়ে যান । শ্রী পাসোয়ানের ডান-হাত ভেঙ্গে গেছে ও কানে শুনতে পারছেন না । চিকিৎসকরা জানিয়েছেন চিকিৎসাধীন শ্রী পাসোয়ানের সিটি-স্ক্যানের পর তার আঘাত কতটা গুরুতর সেই বিষয়ে বলতে পারবেন । গোটা বিষয়টি জানিয়ে দুর্গাপুর থানায়  এফআইআর করা হয়েছে (   এফআইআর নং -  ৮৯১ , তাং-১৪/০৭/২০১৩ ),যদিও শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অপরাধীরা গ্রেফতার হয় নি । 


                                                                    

Saturday 13 July 2013

ভাবগম্ভীর পরিবেশে পালিত হোল কমরেড নিমাই অধিকারীর ৩২-তম শহীদ দিবস ।

দুর্গাপুর ১৩ই জুলাই :১৯৮০ সালের ১৩ই জুলাই দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার মেইন গেটে কংগ্রসী-ঘাতকবাহিনীর খুন হয়েছিলেন  দুর্গাপুর ইস্পাতের ঠিকা মজদুরদের সংগঠন UCWU-র অন্যতম সংগঠক কমরেড নিমাই অধিকারী। 

             সেই ঘটনাকে স্মরন করে প্রতিবছরের মতো এবছরেও দুর্গাপুর ইস্পাতের ঠিকা ও স্হায়ী শ্রমিকরা পালন করলেন  কমঃ নিমাই অধিকারীর  শহীদ দিবস । সকালে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার মেইন গেটে শহীদবেদীতে মাল্যদান করেন কমঃ জি এস দাস , বিভুতি দাস মন্ডল , সন্তোষ দেব রায় , নিমাই ঘোষ , অরুন চৌধুরী ,লাল্টু সেনগুপ্ত , প্রীতম দে , পি এস ঘোষ  প্রমূখ । 

         বিকালে UCWU-র অফিস-সংলগ্ন ট্রাঙ্ক রোড  ময়দানে শুরু হোল শহীদ নিমাই অধিকারী ও পরিতোষ ভট্টাচার্য স্মৃতি এবং মহঃ রফিক ফেয়ার প্লে ট্রফি ফুটবল প্রতিযোগীতা । ১৪টি দল এই টুর্নামেন্টে অংশ নেবেন । ২৫ বছর ধরে চলে আসা এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা হবে আগামী ৬ই আগষ্ট । 

















Friday 12 July 2013

ছিঃ ছিঃ ! এত্তা জঞ্জাল !

দুর্গাপুর ১২ই জুলাই : দুর্গাপুরের গর্ব  নয়নাভিরাম  ভগৎ সিং স্টেডিয়ামের মুখ ঢাকলো জঞ্জাল-আবর্জনায় । সৌজন্যে দুর্গাপুর পৌর নিগম !  শংকরপুরে(দুর্গাপুর) সলিড স্টেট ওয়েস্ট প্রসেসিং কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায়  দুর্গাপুর পৌর অঞ্চলের বর্জ্য ফেলার জায়গা হিসেবে ভগৎ সিং স্টেডিয়ামেকে  বেছে নিয়ে তৃণমুল পরিচালিত DMC বোর্ড , বামফ্রন্ট আমলে  ২০০২ সালে তৈরি এই স্টেডিয়ামকে ধ্বংস করার দিকে ঠেলে দিচ্ছে  বলে স্হানীয় বাসিন্দা -ক্রীড়াপ্রেমীমহলের অভিযোগ ।প্রসঙ্গত  রাজ্যস্তর-জেলাস্তরের ক্রীড়াপ্রতিযোগীতা সহ এখানে মহকুমা ক্রীড়াসংস্হার বিভিন্ন ক্রীড়া অনুষ্ঠান নিয়মিত হয়ে থাকে । মোহনবাগান ক্লাবের আবাসিক শিবিরের নিয়মিত গন্তব্যস্হল হোল ভগৎ সিং স্টেডিয়াম । সিপিআইএম-এর পক্ষ থেকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা কর অবিলম্বে  স্টেডিয়ামকে   জঞ্জাল-আবর্জনা  মুক্ত করার দাবী জানানো হয়েছে । 
  
            এই ঘটনায়  ক্ষুব্দ্ধ দুর্গাপুরের বর্তমান ও প্রাক্তন ক্রীড়াবিদ-দের এক প্রতিনিধিদল  আজ দুর্গাপুর পৌর নিগমের মেয়র ও বিধায়ক শ্রী অপূর্ব মুখার্জীর সাথে দেখা করতে যান । এই প্রতিনিধিদলে ছিলেন জাতীয়-আন্তর্জাতিক পর্যায় ক্রীড়াবিদ , শ্রী অমিতাভ ঘোষ , সুব্রত সিনহা , স্বপন গুহ , চণ্ডী ঘোষ ,জহর আকুঁরে , শুভাশীষ মাইতি ,ভাষ্কর গুহ সহ অসংখ্য  প্রতিযশা   স্হানীয় ক্রীড়াবিদ । কিন্তু মেয়র অনুপস্হিত থাকায় তারা ডেপুটি মেয়র  শ্রী জহর ব্যানার্জীর সাথে দেখা করেন । তিনি ক্রীড়াবিদদের আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে  স্টেডিয়ামকে জঞ্জালমুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন । তবে MIC PWD শ্রী প্রভাত চ্যাটার্জী কিন্তু বলেছেন যে স্টেডিয়ামের নীচু জায়গা ভরাটের জন্য আবর্জনা ফেলার কাজ চলবে । 
          ভগৎ সিং স্টেডিয়ামে জঞ্জাল-আবর্জনার ফেলার বিরোধীতা করে ক্রীড়াবিদদের পক্ষ থেকে  আগামীকাল স্হানীয় সৃজণী প্রেক্ষাগৃহ সংলগ্ন ময়দানে একটি কনভেনশনের আয়োজন করা হয়েছে । 






Wednesday 10 July 2013

পার্ক স্ট্রীট থেকে কামদুনি - রক্তাক্ত বাংলায় লাঞ্ছিত নারীজাতি । নারী-লাঞ্ছনার প্রতিবাদ-প্রতিরোধ হোক পৌরুষেত্বর পরিচয় ।

 দুর্গাপুর ১০ই জুলাই : পার্ক স্ট্রীট , কাটোয়া , দুর্গাপুর , খার্জুনা,গাইঘাঠা ..... এবং  কামদুনি । আজকের বঙ্গ , রঙ্গ ভুলে  আতঙ্কগ্রস্হ । প্রতিদিন সংবাদের শিরোনামে উঠে আসে লোভ-লালসার শিকার কোন এক অভাগিনীর মর্মদন্তু কাহিনী । সবাই জানে , সবাই দেখে , কিন্তু দেখতে পায় না  পঃ বাংলার প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জ্জী ! হায়্ গান্ধারী , তুমিও তো গর্জে উঠেছিলে নিজ্ পুত্রদের দ্বারা  দ্রৌপদী লাঞ্ছনায় ! 

       লাঞ্ছিত মা-বোন-স্ত্রী-প্রেমিকা , লাঞ্ছিত অর্ধেক আকাশ । আর নয় । বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছাক প্রতিবাদ-প্রতিরোধের বার্তা , পৌরুষ হয়ে ওঠো নারী-লাঞ্ছনার প্রতিরোধের অমোঘ প্রাচীর - এই আবেদন সামনে রেখে দুর্গাপুরের শিল্পী-সাহিত্যিকদের প্রতিবাদ সভায় শিল্প হয়ে উঠল যেন দধীচির বুকের পাঁজর - বজ্রনির্ঘোষ ধ্বনিত হোল রক্তাক্ত বাংলায় নারী-লাঞ্ছনার বিরুদ্ধে । 

   পঃ বঙ্গ  গনতান্ত্রিক লেখকশিল্পী সংঘের,দুর্গাপুর ২নং আঞ্চলিক কমিটির ব্যস্হাপনায় গত  ৯ই জুন ইস্পাতনগরী  দুর্গাপুরের আশীষ মার্কেটে  অনুষ্ঠিত এই সভায় আবৃতি পরিবেশন করেন শ্রী রাজীব ঘাঁটি ,অজয় ব্যানার্জ্জী , সমীর দাস , তপন চট্টোপাধ্যায় ,সৌরভ দত্ত প্রমূখ । সঞ্চালক ছিলেন শ্রী শ্যামল ব্যানার্জ্জী । বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক শ্রী  অশোক দাস । সভা শেষ হয়   প্রখ্যাত সংগীতশল্পী  শুভপ্রসাদ নন্দীমজুমদার ও বাচিকশিল্পী দেবেশ ঠাকুর এবং সুত্রকার অংশুমান কর এর অনবদ্য সংগীত-আবৃতির যুগলবন্দীর প্রতিবাদের ব্যঞ্জনায় ।