Sunday 12 February 2017

দুর্গাপুর বাঁচাতে ,অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট সহ সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা রক্ষার শপথ নিল ইস্পাতনগরীর মানব-বন্ধন ।



দুর্গাপুর , ১২ই ফেব্রুঃ – আজ সকালে , ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের যৌথ মঞ্চের ডাকে, ১১-০০ থেকে ১১-১৫ পর্যন্ত ,ইস্পাতনগরীর কেন্দ্রস্হলে এ-জোনের ডঃ বিধানচন্দ্র রায়ের মূর্তির পাদদেশ থেকে বি-জোনে স্বামী বিবেকানন্দ মূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত মানব-বন্ধনের কর্মসূচী পালিত হল ।
ডঃ বিধানচন্দ্র রায়ের স্বপ্নের শহর দুর্গাপুর এর ভিত্তি রাষ্ট্রায়ত্ব কারখানা সমূহ । কেন্দ্রে বিগত এনডিএ সরকারের আমলে রাষ্ট্রায়ত্ব কারখানা ধ্বংসের অভিযানে দুর্গাপুরে এম.এ.এম.এম.সি. , ফার্টিলাইজার ( এফ.সি.আই),বি.ও.জি.এল সহ ৬ টি রাষ্ট্রায়ত্ব কারখানা বন্ধ হয়ে যায় । সেই সময়ে এনডিএ সরকারের অন্যতম মন্ত্রী রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । কিন্তু সেই সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ব কারখানা বন্ধের বিরুদ্ধে কোন উদ্যোগই গ্রহন করেন নি । উপরন্তু রাজ্যের বিগত বামফ্রন্ট সরকারের আমলে এম.এ.এম.এম.সি. পুনরুজ্জীবনের জন্য কনসোর্টিয়াম গঠনের উদ্যোগে কে ঠান্ডা ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছে বর্তমান তৃনমূল সরকার । বর্তমানে দুর্গাপুর আবার রাষ্ট্রায়ত্ব কারখানার ‘নিধন-যজ্ঞ’ শুরু করার প্রচেষ্টা নিয়েছে কেন্দ্রের মোদি সরকার ও রাজ্যের মমতা সরকার । মোদী সরকার ইতিমধ্যে সারা দেশে ৭৪ টি রাষ্ট্রায়ত্ব কারখানা বিক্রী / বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যার অন্যতম অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট । দেশের প্রতিরক্ষা,রেল,পরমানু  সহ প্রায় প্রতিটি শিল্পের জন্য বিশেষ বিশেষ স্টিল উৎপাদন করে দেশের ‘মহারত্ন’ রাষ্ট্রায়ত্ব ইস্পাত উৎপাদনকারী স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড ( সেইল ) এর অন্যতম হেরিটেজ কারখানা অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট । বিপন্ন সেইল এর অপর অন্যতম দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট ,দুর্গাপুর থার্মাল পাওয়ার স্টেশন ( ডি.টি.পি.এস ) এবং ডিভিসির অন্তর্গত দুর্গাপুর ব্যারেজ তথা দুর্গাপুরের শিল্প ও পানীয় জলের সরবরাহ। কিন্তু রাজ্যের তৃণমূল সরকার এ বিষয়ে নিশ্চুপ । দুর্গাপুর লোকসভার কেন্দ্রের তৃণমূলের নির্বাচিত সাংসদ সংসদে এ বিষয়ে কোন আলোচনা করা দুরে থাক , দুর্গাপুরের মানুষ তাঁর নামও ইতিমধ্যে ভুলতে বসেছেন । তবে রাষ্ট্রায়ত্ব কারখানার ‘নিধন-যজ্ঞ’ এ কেন্দ্রের মোদি সরকারের অন্যতম দোসর হয়ে উঠেছে রাজ্যের মমতা সরকার । ইতিমধ্যে রাজ্য পরিচালনাধীন  ৯০ টি রাষ্ট্রায়ত্ব কারখানা সঙ্কুচিত করে ৪৬টি সংস্হায় পরিনত করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে রাজ্যের মমতা সরকার । বিক্রী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্গাপুর কেমিক্যালস । চরম বিপন্ন তাপ বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্হা ডিপিএল । ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা সহ বন্ধ হয়েছে মোট ২২ টি কারখানা । লক্ষ লক্ষ মানুষ কাজ হারিয়েছে । বিপন্ন দুর্গাপুর জনপদ । ভয়ংকর বিপদ ঘনাচ্ছে রাজ্যের অর্থনীতিতে । সি.আই.টি.ইউ যে লড়াই শুরু করেছিল , আজ ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের যৌথ আন্দোলনে পরিনত হয়েছে , দুর্গাপুরের সমস্ত অংশের মানুষের জীবন-জীবিকা বাঁচানোর লড়াই এর রূপ নিচ্ছে ।

আজকের মানব-বন্ধন কর্মসূচীতে উপস্হিত ছিলেন সি.আই.টি.ইউ এর বর্ধমান জেলার সভাপতি বিনয়েন্দ্রকৃষ্ণ চক্রবর্তী , আই.এন.টি.ইউ.সি এর বর্ধমান জেলার সভাপতি বিকাশ ঘটক , দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় , শ্রমিকনেতা রথীন রায় , বিশ্বরূপ ব্যানার্জী,মলয় ভট্টাচার্য,বিজয় সাহা, নির্মল ভট্টাচার্য,সুবীর সেনগুপ্ত,নিমাই ঘোষ,জীবন আইচ,উমাপদ দাস, অনীত মল্লিক, সহ বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ । মানব-বন্ধন চলাকালীন বিভিন্ন জায়গায় দুর্গাপুর বাঁচাতে ,অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট সহ সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ব  সংস্হা রক্ষার লড়াই এর জন্য সব ধরনের আত্মত্যাগ করার  শপথ-বাক্য পাঠ করানো হয় ।









No comments:

Post a Comment