দুর্গাপুর,১৯শে জুলাই
: সকাল থেকে যথারীতি কর্মযজ্ঞ চলছিল অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের বিভাগে বিভাগে । সেইলের
এই বিশেষ উৎপাদনকারী সংস্হায় প্রায় ৫০০ ধরনের ইস্পাত উৎপাদন হয় । যথার্থ অর্থে আলপিন
থেকে এরোপ্লেন তৈরির জন্য ভারতের প্রায় প্রতিটি শিল্প ক্ষেত্রে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের
উৎপাদিত ইস্পাত অপরিহার্য কাঁচামাল ।দেশের সেবায় নিয়োজিত এই রকম একটি গুরুত্বপূর্ণ
রাষ্ট্রায়ত্ব ক্ষেত্রের স্টিল প্ল্যান্ট বেসরকারি হাতে তুলে দিয়ে ধান্দার পুঁজিবাদ
কে মোদি সরকার সাহায্য করতে চাইবে – এতে আশ্চর্য হওয়ার কি আছে ? কিন্তু বিস্মিত হচ্ছে
মোদি সরকার । কারন একটা কারখানা কে ঘিরে একটা গোটা জনপদের আবেগ এবং সেই কারখানার শ্রমিকদের
প্রায় পাঁচ বছর ধরে চলা টানটান লড়াই – যে লড়াই মোদি সরকারে রাষ্ট্রায়ত্ব ক্ষেত্রের
বিলগ্নির অশ্বমেধের ঘোড়া কে লাগাম টেনে ধরার স্পর্ধা দেখিয়েছে ।
আজ সকালে খবর এসে পৌঁছায় যে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির বাইরে
গিয়ে সেইলের ৭ জন ডাইরেক্টর ও একজন কোম্পানি সেক্রেটারির একটি দল অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট
পরিদর্শন করতে আসছে । এই ৭ জন ডাইরেক্টরের মধ্যে কয়েকজন বেসরকারী ডাইরেক্টরও ছিলেন
। আগামী ১লা আগষ্ট অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বিক্রির দরপত্র চুড়ান্ত হওয়ার কথা । এই সময়ের
মধ্যে কোন ‘ইচ্ছুক ক্রেতা’ কে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের ধারেকাছে ঘেঁষতে দেওয়া হবে
না, শ্রমিক ইউনিয়ন গুলি এই হুঁশিয়ারি আগেই দিয়ে রেখেছিল । ইতিমধ্যে ভিলাই স্টিল প্ল্যান্টে
জিন্দাল স্টিলের মালিকের গোপন পরিদর্শন কে ঘিরে সেইলের শ্রমিকদের মধ্যে আশংকা ছড়িয়েছে
। এই অবস্হায় সেইলের ৭ জন ডাইরেক্টর ও একজন কোম্পানি সেক্রেটারির প্রতিনিধি দলটির আকস্মিক
অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট পরিদর্শনের পরিকল্পনায় শ্রমিকরা গভীর সন্দিহান হয়ে ওঠেন । সকাল
সাড়ে এগারোটা থেকে কারখানার মেইন গেটে স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায় । শ’য়ে শ’য়ে
শ্রমিক ‘গো-ব্যাক’ শ্লোগান দিতে থাকেন এবং কোন ভাবেই কারখানার বেসরকারিকরন হতে দেওয়া
হবে না জানিয়ে দেন।বেগতিক দেখে প্রতিনিধি দলটি বার্ণপুরের দিকে রওনা হয়ে যান ।
হিন্দুস্হান স্টিল
এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন(সি.আই.টি.ইউ)-এর পক্ষে বিজয় সাহা জানিয়েছেন যে ছল-চাতুরি করে শ্রমিকদের
ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ও তাদের লড়াকু মনোবল ভাঙ্গা যাবে না।আজকের ঘটনা আবার তা প্রমান করে
দিয়েছে।



No comments:
Post a Comment