Friday 9 August 2019

হ্যাঁ । তারাও এসেছিলেন ……..



দুর্গাপুর,৯ আগষ্ট : তারাও এসেছিলেন । তারা মানে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের শ্রমিক পরিবারের সদস্যরা । গত পাঁচ বছর ধরে তাদের পরিবারে নেমে এসেছে ঘোর অনিশ্চয়তা । মোদি সরকারের অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের বেসরকারিকরনের সিদ্ধান্ত ঘোর সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছে কেবল অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের শ্রমিক পরিবারদের নয় । বিপদে পড়তে চলেছে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা সহ গোটা জনপদ,দুর্গাপুরের অর্থনীতি। তাই তারা আজ এসেছিলেন। আজ বিকালে হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ) এর ডাকে পরিবারের সদস্যদের সাথে নিয়ে ইস্পাত শ্রমিকরা অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের মেইন গেটে বিক্ষোভ অবস্হানে বসেছিলেন ।২০১৬ সাল থেকে সাল থেকে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের শ্রমিকদের লড়াই চলছে কারখানা বাঁচাতে ,বেসরকারিকরন রুখতে পরিবারের সদস্যরাও এই পাঁচ বছর ধরে এই লড়াইতে সামিল আছেন ।
গড়ে উঠেছে ট্রেড ইউনিয়ন গুলির ঐক্যবদ্ধ মঞ্চ, ‘অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বাঁচাও,দুর্গাপুর ইস্পাত বাঁচাও,দুর্গাপুর বাঁচাওকমিটি প্রায় ২০০ টি কর্মসূচী পালিত হয়েছে ধর্মঘট হয়েছে ৯২% শ্রমিক ধর্মঘটে যোগ দিয়েছিলেন কর্মসূচিতে কেবল শ্রমিক বা শ্রমিক পরিবার নয়,অংশ নিয়েছেন দুর্গাপুরের সর্বস্তরের মানুষ দৌড়ে অংশ নিয়েছেন এমন কি জাতীয় আন্তর্জাতিক স্তরের খেলোয়াররা খ্যাতনামা শিল্পী-সাহিত্যিক-সাংস্কৃতিক কর্মি-শিক্ষাবিদরা প্রতিবাদ জানিয়ে পথে নেমেছেন সেইলের এই বিশেষ উৎপাদনকারী সংস্হায় প্রায় ৫০০ ধরনের ইস্পাত উৎপাদন হয় যথার্থ অর্থে আলপিন থেকে এরোপ্লেন তৈরির জন্য ভারতের প্রায় প্রতিটি শিল্প ক্ষেত্রে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের উৎপাদিত ইস্পাত অপরিহার্য কাঁচামাল ।দেশের সেবায় নিয়োজিত এই রকম একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রায়ত্ব ক্ষেত্রের স্টিল প্ল্যান্ট বেসরকারি হাতে তুলে দিয়ে ধান্দার পুঁজিবাদ কে মোদি সরকার সাহায্য করতে চাইবেএতে আশ্চর্য হওয়ার কি আছে ? কিন্তু বিস্মিত হচ্ছে মোদি সরকার কারন একটা কারখানা কে ঘিরে একটা গোটা জনপদের আবেগ এবং সেই কারখানার শ্রমিকদের প্রায় পাঁচ বছর ধরে চলা টানটান লড়াইযে লড়াই মোদি সরকারে রাষ্ট্রায়ত্ব ক্ষেত্রের বিলগ্নির অশ্বমেধের ঘোড়া কে লাগাম টেনে ধরার স্পর্ধা দেখিয়েছে এর আগে দুবার মোদি সরকার অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টে বিক্রি করতে চেয়ে ..আই ( এক্সপ্রেসন অফ ইন্টারেস্ট ) জারি করলেও,কেউ কেনারআগ্রহদেখাতে পারে নি কারন শ্রমিকরা কারখানার ধারেকাছেক্রেতাদেরঘেঁসতে দেন নি
    দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে মোদি সরকার একশ দিনের মধ্যে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ব ক্ষেত্রের ৫০টি কারখানা বিক্রি করতে চেয়ে নির্দেশ জারি করেছে যার অন্যতম হল রাষ্ট্রায়ত্ব সেইলের বিশেষ ইস্পাত উৎপাদনকারী অ্যালয় স্টিল সহ সালেম ভদ্রাবতি স্টিল প্ল্যান্ট তৃতীয়বারের জন্য মোদি সরকার অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট সহ সালেম ও ভদ্রাবতি স্টিল প্ল্যান্ট বিক্রি করতে চেয়ে ই.ও.আই ( এক্সপ্রেসন অফ ইন্টারেস্ট ) জারি করেছে ।সেইলের সর্বত্র বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে। এর বিরুদ্ধে পথে নেমেছে গোটা দুর্গাপুর ।  ‘অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বাঁচাও,দুর্গাপুর ইস্পাত বাঁচাও,দুর্গাপুর বাঁচাও কমিটির পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে কোনভাবেই অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বিক্রি করা যাবে না । কেনার জন্য কোনভাবেই যাতে কোন ‘ইচ্ছুক ক্রেতা’ প্ল্যান্টের ধারেকাছে আসতে না পারে,তার জন্য সতর্ক আছেন অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের শ্রমিকরা ।
        আজ বিকালে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের মেইন গেটে বিক্ষোভ অবস্হানে ইস্পাত শ্রমিকদের পরিবারের বধু শাশ্বতী সরকার এগিয়ে এসে বক্তব্য রেখে বলেন যে শ্রমিকদের সাথে সাথে তাদের পরিবারের সদস্যরা অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বাঁচাতে,দুর্গাপুর ইস্পাত বাঁচাতে,দুর্গাপুর বাঁচাতে পরিবারের সদস্যরাও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ । নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখতে গিয়ে লড়াই মজুবত করতে শ্রমিক ঐক্য আরও দৃঢ় করার আহ্বান জানিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টিকারি শক্তি সম্পর্কে সতর্ক করেন। বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় মনে করিয়ে দেন এর আগেও   অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট সহ অন্যান্য সংস্হার বেসরকারিকরন ইস্পাত শ্রমিকরা আটকে দিয়েছেন । বক্তারা পরিস্কার জানিয়েছেন যে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের বেসরকারিকরন আটকাতে লাল ঝাণ্ডা শেষ পর্যন্ত লড়বে । বক্তব্য রেখেছেন আর.পি.গাঙ্গুলি,মলয় ভট্টাচার্য,বিজয় সাহা,সুব্রত ঘোষ,আল্পনা চৌধুরী,নিমাই ঘোষ,ললিত মিশ্র ও গুরুপ্রসাদ ব্যানর্জী ।সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বেফি’র পক্ষে সুব্রত সিনহা । আবৃতি করে শোনান সৌরভ দত্ত ।।সভায় কাশ্মীরে সি.পি.আই.এম এর সাধারন সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি কে গ্রেফ্তারের প্রতিবাদ জানানো  হয় । 


















No comments:

Post a Comment