দুর্গাপুর , ২৭শে আগষ্ট : আজ , হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের ( সিআইটিউ
) আওহ্বানে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার সিইও – দফ্তর ( অ্যাডমিন বিল্ডিং) চল অভিযানে
সামিল হয়ে দুর্গাপুর ইস্পাত ও মিশ্র ইস্পাত কারখানার শ্রমিক-কর্মচারী-অবসরপ্রাপ্ত ও
ইস্পাতনগরী এবং সন্নিহিত অঞ্চলের অধিবাসিরা প্রবল বিক্ষোভ দেখান । পঃ বঙ্গের পরিবর্তনের
সরকার আসার পরে দুর্গাপুর ইস্পাত ও মিশ্র ইস্পাত কারখানা ও ইস্পাতনগরী এবং সন্নিহিত
অঞ্চলে কালো দিন নেমে এসেছে ।বর্তমানে দোসর হয়েছে জন-বিরোধী শ্রমিক-বিরোধী নয়া-উদারনীতিবাদের
কট্টর প্রবক্তা মোদি-সরকার । কেন্দ্র ও রাজ্য – উভয় সরকারের মদতে দুর্গাপুর ইস্পাত
ও মিশ্র ইস্পাত কারখানার কর্তৃপক্ষ শ্রমিক-কর্মচারীদের অধিকারের উপর স্টিম-রোলার চালাচ্ছে
। শ্রমিক ইউনিয়নদের সাথে বিনা আলোচনায় কর্তৃপক্ষ হাউস রেন্ট অ্যালাউন্স , ক্যান্টিন
অ্যালাউন্স বন্ধ করেছে , বিদ্যুৎের দাম ২০০ গুন বৃদ্ধি করেছে ! লিজ / লাইসেন্স হোল্ডারদের
বিদ্যুৎের দাম এক ধাক্কায় ইউনিট
প্রতি ১ টাকা ৭৭ পয়সা বৃদ্ধির সাথে সাথে এই বৃদ্ধি ২০১১ সাল থেকে
ধরা হবে বলে কর্তৃপক্ষ তুঘলকি ফরমান জারি করছে । অথচ ইস্পাতনগরী জুড়ে শাসকদল ও কর্তৃপক্ষের
একাংশের মদতে বেআইনী বিদ্যুৎ সংযোগের কারবারের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ আশ্চর্য্যজনক ভাবে উদাসীন
! যথাযথ রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে ইস্পাতনগরীর
কোয়ার্টার গুলি জরাজীর্ণ , রাস্তাঘাটের অবস্হা বেহাল , রাস্তার লাইট ঠিকমত জ্বলে না
। স্বাস্হ্য ব্যবস্হা ভেঙ্গে পড়েছে । হাসপাতালে ওষুধ অমিল , উপযুক্ত স্বাস্হ্য-কর্মী
নিয়োগের বদলে অদক্ষদের নিয়োগ করে শ্রমিক-কর্মচারী-অবসরপ্রাপ্ত ও তাদের পরিবারের সদস্যদের
জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে । দুর্গাপুর
ইস্পাত কারখানার একের পর এক ঐতিহ্যবাহী স্কুল বন্ধ করা হচ্ছে , প্যারা-টিচারদের স্হায়ী
করার বদলে একে একে ছাঁটাই করে বাকী স্কুলগুলিকে বন্ধ করার চেষ্টা চলছে অথচ রাজ্য সরকারের
শিক্ষা-দফ্তর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ করছে না। ইস্পাতনগরীর সন্নিহিত অঞ্চলের উন্নতির জন্য দায়বদ্ধতা থাকলেও
, সিএসআর-এর কোটি কোটি টাকা টাকা কর্তৃপক্ষ কোথায় ব্যয় করছে সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে
। সেইলের অন্যান্য জায়গায় কোয়ার্টার লিজিং-লাইসেন্সিং এর ব্যবস্হা করা হলেও দীর্ঘদিন ধরে দুর্গাপুর ইস্পাত ও মিশ্র ইস্পাত কারখানার
শ্রমিক-কর্মচারী-অবসরপ্রাপ্তদের কোয়ার্টার
লিজিং-লাইসেন্সিং থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে এবং কোয়ার্টারে বসবাসকারি অবসরপ্রাপ্তদের লক্ষ
লক্ষ টাকা আটকে রেখে অনায্য ভাবে মোটা অংকের বাড়ী ভাড়া জোর করে কেটে নেওয়া হচ্ছে ।
উদ্বৃত্ত জমি বেআইনী দখলদার হাতে গেলেও , নজীর থাকালেও , সেই জমি শ্রমিক-কর্মচারী-অবসরপ্রাপ্তদের
লিজ দেওয়া হচ্ছে না। বছরের পর বছর ধরে শ্রমিক-কর্মচারীদের নিদারুন পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা বিপুল পরিমানে মুনাফা
করলেও , একদা সাজানো-গোছান ইস্পাতনগরী জরাজীর্ন হয়ে পড়েছে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও নয়া-উদার অর্থনীতিবাদী
কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপে । এই সমস্ত বিষয়ে শ্রমিক-কর্মচারী-অবসরপ্রাপ্ত ইস্পাতনগরী
এবং সন্নিহিত অঞ্চলের অধিবাসিদের নিয়ে প্রবল আন্দোলন গড়ে তুলে দাবী গুলি আদায়ের জন্য
এবং অবিলম্বে দুর্গাপুর ইস্পাত ও মিশ্র ইস্পাত
কারখানায় শ্রমিক ইউনিয়নদের জেবিসিকে স্বমর্যাদায় ফিরিয়ে নিয়ে আসার দাবীতে বৃহত্তর আন্দোলনর
আবেদন জানিয়ে হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের ( সিআইটিউ ) –র পক্ষ থেকে দুর্গাপুর
ইস্পাত ও মিশ্র ইস্পাত কারখানার সমস্ত ট্রেড ইউনিয়ন ও গণ-সংগঠনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে
।আজকের সমাবেশ চলাকালীন ১০ জনের প্রতিনিধিদল
কর্তৃপক্ষের সাথে সাক্ষাত করে দাবী-সম্বলিত স্মারকলিপি জমা দেয় এবং অবিলম্বে দাবীপূরনের
জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে জোড়ালো দাবী জানায় । পরে প্রতিনিধিদলের পক্ষে কমঃ বিশ্বরূপ ব্যানার্জী
সমাবেশে জানান যে নাগরিক পরিষেবার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত ব্যবস্হার আশ্বাস দিয়েছে
এবং কোয়ার্টার লিজিং-লাইসেন্সিং এর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কমিটি রিপোর্ট পেশ করলে উপযুক্ত
আলোচনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে । আজকের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কমঃ অরুণ চৌধুরী , বিজয়
সাহা , মনোজ হাজরা সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ । এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সেইল এমপ্লয়িজ ফোরামের
পক্ষে শ্রী অজিত দাঁ । সভাপতিত্ব করেন কমঃ বাদল মজুমদার ।
No comments:
Post a Comment