Sunday 28 December 2014

মেহেনতী মানুষের ঐক্য ও বামপন্হীদের লড়াই রুখতে পারে সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদকে ।

                                                     

দুর্গাপুর , ২৭ শে ডিসেঃ – আজ , ইস্পাতনগরীর নেতাজী ভবনে ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টি ( মার্কসবাদী )-র দুর্গাপুর ইস্পাত জোনাল সাংগঠনিক কমিটির পক্ষ থেকে , ‘ সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের ক্রমবর্ধমান বিপদ এবং ধর্মনিরপেক্ষতার সংগ্রাম ‘ – শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় । আলোচক ছিলেন প্রখ্যাত ঐতিহাসিক শ্রী গৌতম রায় । তিনি বলেন যে ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের পরে ভারতে ব্রিটিশ শাসকরা ভারতে সাম্প্রদায়িকতার বিস্তারে ইন্ধন জুগিয়েছিল । জাতীয় কংগ্রেসের সূচনাকাল থেকেই কংগ্রেসের অভ্যন্তরেই  হিন্দু সাম্প্রদায়িক শক্তি সক্রিয় ছিল । পরবর্তীকালে  হিন্দু মহাসভা এবং তারও পরে আরএসএসের গঠনের মধ্য দিয়ে সেই শক্তি আরও বিস্তার ঘটায় । কিন্তু লক্ষনীয় বিষয় হল যে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে আরএস শুধু নিজেদের সরিয়ে শুধু রাখেনি , বরং হিন্দুরাজ্যের কথা বলার মধ্য দিয়ে মুসলিম জনগনকে ভীত-সন্ত্রস্ত করে তুলেছিল । তারফলে প্রথমে পাকিস্হানের প্রস্তাব উড়িয়ে দিলেও , পরে জিন্নাহ্ সহ অন্যান্যরা পাকিস্হান গঠনের দাবীতে ঝুঁকে পড়ে । আরএসএসের নেতা গোলওয়ালকার যে কালচারাল-ন্যাশালিজমের কথা বলেছেন তার ভিত্তি স্বামী বিবেকানন্দ এর বর্ণিত বৈদিক ধর্মের পরিবর্তে পুরান-ভিত্তিক এবং আরএসএস হিন্দু ধর্মের পরিবর্তে  হিন্দুত্বের কথা বলে । স্বাধীনতার পরে ,বিশেষ করে মহাত্মা গান্ধীর হত্যার পরে আরএসএসের প্রভাব কমতে থাকে । কিন্তু প্রথমে ভারতীয় জনসংঘ ও পরে ভারতীয় জনতা পার্টি গঠনের মধ্য দিয়ে এবং সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল , লালবাহাদুর শাস্ত্রী , ইন্দিরা গান্ধী , রাজীব গান্ধীর মত কংগ্রেসী নেতা সহ জয়প্রকাশ নারায়ন এর মত অকংগ্রেসী নেতাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদতে আরএসএসের আজকের এই বাড়বাড়ন্ত ঘটেছে ।পশ্চিমবঙ্গে আরএসএসের বৃদ্ধির পেছনে মমতা ও  আরএসএসের পুরনো সখ্যতার কথাও উল্ল্যেখ করেন শ্রী রায় । তিনি আরও  বলেন যে  আরএসএসের এই বৃদ্ধির পিছনে বহুমূখী কৌশল কাজ করছে । বর্তমানে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের মূল চালিকা শক্তি আরএসএস ও তার সহযোগী হিন্দুত্ববাদী শক্তি সরাসরি ভারতের আবহমানকাল ধরে চলে আসা ধর্মনিরপেক্ষতার ঐতিহ্যকেই কেবল আক্রমন করছে তাই নয় , চ্যালেঞ্জ করছে ভারতের সংবিধানকে । এই পরিস্হিতিতে , ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার সংগ্রামকে জোরদার করার জন্য চাই মেহেনতী মানুষের ঐক্য ও বামপন্হীদের লড়াই যা রুখতে পারে সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদ শক্তিকে , রক্ষা করতে পারে ভারত ও পশ্চিমবঙ্গে  ভয়াবহ  বিপদের হাত থেকে । সভায় বক্তব্য রেখেছেন দুর্গাপুর ইস্পাত জোনাল সাংগঠনিক কমিটির আহ্বায়ক কমঃ সন্তোষ দেবরায় । সভাপতিত্ব করেন কমঃ সুশান্ত ব্যানার্জী । 

                                                  








No comments:

Post a Comment