দুর্গাপুর,১৯শে জানুঃ – আজ বিকালে দুর্গাপুরে বেনাচিতির আনন্দধারা ময়দানে ও
সন্ধ্যায় ইস্পাতনগরীর চন্ডিদাস পূজা ময়দানে দুটি পৃথক বিশাল জনসভায় একথা বলেন পার্টির
পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম । তিনি বলেন যে যত নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসছে , মুখ্যমন্ত্রী
মমতা ব্যানার্জী ততই ওয়ান ডে ক্রিকেটের স্লগ ওভারে ব্যাট চালানোর মত একের পর এক মেলা
অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জনগনের চোখে ধুলো দেওয়ার চেষ্টা করছে । কারন গত ৪ বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে
উন্নয়নের কাজ স্তব্ধ হয়ে গেছে । উল্টে তৃণমূল নেতারা একের পর এক চিট-ফান্ডের মাধ্যমে
প্রতারনা করে লক্ষ লক্ষ মানুষের টাকা নির্জলা লুঠ করেছে । বামফ্রন্ট সরকার গঠিত হলে
তৃণমূলের নেতাদের থেকে লুঠ হওয়া প্রতিটি পাই-পয়সা উদ্ধার করে প্রতারিতদের ফিরিয়ে দেওয়া
হবে । নতুন শিল্প গড়ে বেকারদের কর্মসংস্হানের ব্যবস্হা করা হবে । তিনি মানুষের শক্তিশালী
জোট গড়ে বাংলা থেকে তৃণমূল ও দেশ থেকে বিজেপি হটাও এর জন্য দুর্গাপুরের মানুষকে আহ্বান
জানান ।
প্রাদেশিক কৃষকসভার সম্পাদক ও পার্টির রাজ্য কমিটির সদস্য অমল হালদার রাজ্যের
তৃণমূল সরকারের তীব্র সমালোচন করে বলেন যে রাজ্যে এই আমলে চূড়ান্ত অর্থনৈতিক অধঃপতনের
সাথে সাথে সামাজিক-সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের বিপর্যয় ঘটেছে । তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন
যে গত ৫০ বৎসরের মধ্যে এই প্রথম ডিভিসি বোরো চাষের জন্য সেচের মারফৎ জল জোগাবে না ।
ফলে পশ্চিমবঙ্গের ,’শস্য-গোলা’ নামে পরিচিত বর্ধমান জেলায় কৃষকদের মধ্যে হাহাকার পড়ে
গেছে । ইতিমধ্যে গত সাড়ে চার বছরে ১০৭ জন কৃষক বর্ধমান জেলায় আত্মহত্যা করেছে । অথচ মমতা ব্যানার্জী কৃষকদের পাশে
দাঁড়ানোর বদলে মাটি-উৎসব করছেন ! তিনি এই প্রসঙ্গে দুর্গাপুরের শ্রমিক আন্দোলনের ঐতিহ্যের
কথা ও সাম্প্রতিককালে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় সি.আই.টি.ইউ এর বিপুল বিজয় কথা উল্ল্যেখ
করে বলেন যে দুর্গাপুরের মানুষ ২০০৯ সালেই পার্টির ডাকে সারা দিয়ে চিট-ফান্ডের প্রতারনার
বিরুদ্ধে সচেতন হয়েছিলেন ।
অন্যদিকে পার্টির বর্ধমান জেলার সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক অভিযোগ করেন যে আজকের
সভা দুটিকে বানচাল করার জন্য শাসকদল প্রশাসন কে সাথে নিয়ে চক্রান্ত চালিয়েছে । সভাস্হলে
চারপাশে জোড় করে তৃণমূলের পতাকা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে । এমনকি মমতা ব্যানার্জীর বীরভূম
সফর করে কেন্দ্র করে তুচ্ছ অজুহাতে জি.টি.রোড কে অচল রেখে রানীগঞ্জে প্রয়াত প্রখ্যাত
কমিউনিষ্ট নেতা রবীন সেনের জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠান এবং দুর্গাপুরের দুটি সমাবেশে পার্টি
নেতৃত্বকে আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে । জনবিচ্ছিন্ন তৃণমূল আসন্ন পতনের ভয়ে এই ধরনের কাজ করছে । কিন্তু মানুষ
তৃণমূলের এই সব চক্রান্তের জাল ছিন্ন করেই সমাবেশে এসেছেন ।
এছাড়াও আজকের সমাবেশে দুটিতে বক্তব্য রাখেন বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী,সন্তোষ দেবরায়
ও মহাদেব পাল । উপস্হিত ছিলেন বীরেশ্বর মন্ডল,বিনয়েন্দ্র কিশোর চক্রবর্তী,মহাদেব কুন্ডু,
পার্থ মুখার্জী,আভাষ রায় চৌধুরী,নির্মল ভট্টাচার্য,সুবীর সেনগুপ্ত,পঙ্কজ সরকার প্রমূখ
।
No comments:
Post a Comment