দুর্গাপুর,১০ই অক্টোঃ
: ইস্পাতনগরীর ডেভিড হেয়ার রোডে পি অ্যান্ড টি কলোনী কে ঘিরে আজ শুধুই শুন্যতা। ১৪০
টি কোয়ার্টারের মধ্যে মেরেকেটে গোটা ২৫টি কোয়ার্টারে বি.এস.এন.এল এর শ্রমিক রয়েছেন
। আসলে বি.এস.এন.এল কে সঙ্কুচিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ২০০০ সালে বাজপেয়ী নেতৃত্বাধীন
কেন্দ্রের এনডিএ সরকারের সময়ে কর্পোরেশন করার মধ্য দিয়ে । বি.এস.এন.এল-এ ক্রমাগত কর্মি সংকোচন ও নির্বিচারে ঠিকাদারি
প্রথার চালু করার আজ সাক্ষী হল ইস্পাতনগরীর পি অ্যান্ড টি কলোনী । লক্ষনীয় এনডিএ সরকারের
অন্যতম মন্ত্রি ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । গত ৮ মাস ধরে বি.এস.এন.এল এর ঠিকা শ্রমিকরা
বেতন পান নি । বি.এস.এন.এল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ও অন্যান্য ইউনিয়নের যৌথ লড়াই এর ফলে ঠিকা
শ্রমিকরা পূজোর আগে মাত্র ১ মাসের বেতন পেয়েছেন । বি.এস.এন.এল কে বন্ধ করার চক্রান্তের
বিরুদ্ধে গত ৩রা অক্টোঃ দুর্গাপুর ডিভিশনের অফিসে গন-বিক্ষোভ ও ধর্ণা দেন বি.এস.এন.এল
এর স্হায়ী ও ঠিকা শ্রমিকরা । আগামীকাল দিল্লিতে ট্রেড ইউনিয়ন গুলির যৌথমঞ্চের সভার
পরে পরবর্তি কর্মসূচী নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বি.এস.এন.এল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন এর দুর্গাপুর
ডিভিশনের সহকারী সম্পাদক পঙ্কজ চ্যাটার্জী ।
এদিকে আজ সকালে হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন
( সি.আই.টি.ইউ)-এর ডাকে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার অর্জুন মূর্তির সামনে দলে দলে ইস্পাত
শ্রমিক জড়ো হয়ে বি.এস.এন.এল-এম.টি.এন.এল কে বন্ধ করার জন্য মোদি সরকারের চক্রান্তের
বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানান ও বি.এস.এন.এল-এম.টি.এন.এল এর শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রতি
সংহতি জানান । শ্রমিক জমায়েতে ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বক্তব্য রেখে বিশ্বরূপ ব্যানার্জি বলেন যে আজকের
দিনে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বাঁচাও, দুর্গাপুর
ইস্পাত কারখানার বাঁচাও, দুর্গাপুর বাঁচাও আন্দোলন আর বি.এস.এন.এল-এম.টি.এন.এল বাঁচাও
আন্দোলন কোন পৃথক আন্দোলন নয় ।কেন্দ্রের মোদি সরকার সরকারী ও রাষ্টায়ত্ব সংস্হা উচ্ছেদ
করে দেশ কে কর্পোরেট ও বহুজাতিক সংস্হার হাতে তুলে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্হা কে তছনছ
করতে চাইছে যাতে কর্পোরেট ও বহুজাতিক সংস্হার মুনাফা বহু গুনে বৃদ্ধি পায় । এই নীতির
ফলে আজ অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট কে বিক্রি ও বি.এস.এন.এল-এম.টি.এন.এল কে বন্ধ করতে চাইছে
কেন্দ্রের মোদি সরকার। ১৪০০০ কোটি টাকা দেনার জন্য বি.এস.এন.এল-এম.টি.এন.এল কে বন্ধ
করতে চাইছে অথচ জিও-এয়ারটেল সহ বেসরকারি সংস্হার দেনা ইতিমধ্যে ৭৩০০০ কোটি টাকা ছাড়ালেও
মোদি সরকার এদের কে দরাজ হাতে সাহায্য করে চলেছে।সমস্ত বেসরকারি সংস্হা বি.এস.এন.এল
এর পরিকাঠামো ব্যবহার করে । অথচ ৪জি সংযোগ ব্যবস্হা বি.এস.এন.এল কে ব্যবহার করতে দেওয়া
হয় নি । বি.এস.এন.এল-এম.টি.এন.এল বন্ধ হলে
কেবলমাত্র এই সংস্হা দুটি তে কর্মরত ১৬৮০০০ জন শ্রমিক ও তাদের পরিবারবর্গ বিপদে পড়বেন
তাই নয়,দেশের অর্থনীতির ওপর বিরাট আঘাত নেমে আসবে । একই সাথে দেশের টেলি যোগাযোগ ব্যবস্হা
সুবিধা থেকে সাধারন মানুষের সুযোগ গ্রহন ক্রমশঃ নাগালের বাইরে চলে যাবে । বিশেষ করে
প্রত্যন্ত অঞ্চলের টেলি যোগাযোগ ব্যবস্হা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিরাট আঘাত নেমে আসবে
। তিনি বি.এস.এন.এল-এম.টি.এন.এল কে বন্ধ করার জন্য মোদি সরকারের চক্রান্তের বিরুদ্ধে
বি.এস.এন.এল-এম.টি.এন.এল এর শ্রমিকদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই গড়ে তোলার জন্য
দুর্গাপুরর ইস্পাত শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানান ।
No comments:
Post a Comment