Tuesday 3 May 2022

৩রা মে “শ্রমিক সংহতি দিবস”- শ্রমিক আন্দোলন কে আজও পথ দেখাচ্ছে ।

 


দুর্গাপুর,৩রা মে : ইস্পাতনগরীতে পালিত হল  শ্রমিক সংহতি দিবস”-এর ৫৭-তম বার্ষিকী ১৯৬৬ সালে রা মে  মিশ্র ইস্পাত কারখানার ( অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট ) মেইন গেটের সামনে প্রশাসনিক ভবনে বিক্ষোভরত শ্রমিকদের উপরে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তৎকালীন কং সরকারের পুলিশ নির্মম লাঠি চার্জ করলে অনেকে ঘায়েল হয়।কিন্তু তারপরেও বিক্ষোভ চলতে থাকলে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে ও আবার  লাঠি চার্জ করে।পাল্টা শ্রমিকদের প্রতিরোধে বেশ কিছু পুলিশ কর্মী আহত হয়। ১৪-জন শ্রমিক কে গ্রেফ্তার করা হয় শ্রমিকদের দাবী ছিল যে কারখানার বাসে তারা আসেন , সেই বাসে তাদের কারখানার গেটের পরিবর্তে কারখানার অভ্যন্তরে গন্তব্যস্হলে নামিয়ে দিতে হবে। পরের দিন ৪ঠা মে কারখানায় স্বতঃস্ফূর্ত ধর্মঘট হয় । বিকালে দুর্গাপুরের ঐতিহাসিক লাল ময়দানে প্রতিবাদ সভা হয়।শ্রমিক চেতনায় আঘাত হানে – সংহতি ছাড়া দাবি আদায় করা যাবে না।এই সভা থেকে  হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার সাথে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট  শাখার পথ চলা শুরু হয়। কারখানার অভ্যন্তরে ডিউটির বাস চলার দাবি আদায় সম্ভব হয় । এই আন্দোলন কে স্মরণ করে পরবর্তিকালে ৩রা মে শ্রমিক সংহতি দিবস হিসাবে পালন করা শুরু হয়

    বিগত ৫৭ বৎসর ধরে হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন(সিআইটিইউ) এর এএসপি শাখা লড়াই-সংগ্রামের বহু অন্যন্য নজীর তৈরি করেছে বিশেষ করে মিশ্র ইস্পাত কারখানার আধুনিকীকরন সম্প্রসারনের জন্য ১৯৭২ সালের ১৯শে সেপ্টে: ধর্মঘটের থেকে শুরু করে ২০১৩ সালে ডিসেঃ মাসে দিল্লী অভিযানকারখানা বাঁচানোর লড়াই এই সংগ্রামের এক তাৎপর্যপূর্ন দিক এই লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৮২ ১৯৮৬ সালে প্রথম দ্বিতীয় পর্যায়ের মিশ্র ইস্পাত কারখানার আধুনিকীকরন সম্প্রসারনের কাজ হয় যদিও তা প্রয়োজনের তুলনায় ছিল কম ।২০১৬ সাল থেকে কেন্দ্রের মোদি সরকার অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের বেসরকারীকরনের চক্রান্ত শুরু করলে ইউনিয়নের পক্ষ কারখানা বাঁচানোর জন্য যৌথ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয় । সেই যৌথ আন্দোলন আজ ইতিহাস রচনা করেছে । এই কারনে ইউনিয়ন রাজ্যের শাসক দলের চক্ষুশূলে পরিনত হয়। দুর্গাপুরে মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে যে কিভাবে তৃণমূলী দুষ্কৃতিরা ২০১৭ সালের ২৩শে মার্চ ইউনিয়ন দফ্তর ( ২/১ তিলক রোড) ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয় এবং নৃশংস আক্রমন চালায় ইউনিয়ন নেতৃত্বের উপর । আক্রমন চালিয়েছে ঠিকা শ্রমিকদের উপর । শ্রমিকরা এর উপযুক্ত জবাব দিয়েছেন । ঐ বছরের ১১ই এপ্রিল মোদি সরকার অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের বেসরকারীকরনের চক্রান্তের বিরুদ্ধে ৯২% শ্রমিক ধর্মঘটে যোগ দেন । অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের বেসরকারীকরনে রুখতে “ অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বাঁচাও “ লড়াই সারা দেশের শ্রমিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে এক ইতিহাস তৈরি করেছে । এখনো বেসরকারীকরনের চক্রান্তের বিপদ বিদ্যমান । এরই মধ্যে চলেছে কারখানার আধুনীকিকরনের লড়াই । এই লড়াইও অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বাঁচানোর জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ । সাম্প্রতিক কারখানায় উৎপাদিত বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের জন্য উৎপাদিত এক্সেল মোদি সরকারের বেসরকারীকরনের নীতি কে রীতিমত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। শ্রমিক সংহতি আরও মজবুত করেই কারখানা বাঁচানোর ও আধুনীকিকরনের লড়াই এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে । আজ সন্ধ্যায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেই ইস্পাতনগরীর ইউনিয়ন দফ্তরে ( ২/১ তিলক রোড) “শ্রমিক সংহতি দিবস”- উপলক্ষে আয়োজিত শ্রমিক কনভেনশনে এই আহ্বান জানান বক্তারা । বক্তব্য রাখেন ইউনিয়নের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা অর্ধেন্দু দাক্ষী,পূর্বতন বিধায়ক সন্তোষ দেবরায়,পূর্বতন সাংসদ সুনীল খাঁ,নবেন্দু সরকার ও বিজয় সাহা । এই উপলক্ষে প্রকাশ করা হয় ইউনিয়নের সংগ্রামের ইতিহাস – “ অগ্নিবলয় “ ।










No comments:

Post a Comment