Monday 9 May 2022

এনএসপিসিএল এর শেয়ার বিক্রির বিরুদ্ধে গর্জে উঠল দুর্গাপুর ইস্পাতের বিদ্যুত সরবরাহকারী ইউনিটের শ্রমিকরা।

 


দুর্গাপুর,৯ই মে : বিগত বাজপেয়ী নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের আমলে ২০০০ সালে দুর্গাপুর ইস্পাতের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী কারখানার ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্টটি বেসরকারী বহুজাতিক সংস্হা এনরনের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় । সেবার,বহুজাতিক উপদেষ্টা সংস্হা  ম্যাকেঞ্জির সুপারিশে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্ট কিনতে চেয়ে আসা বহুজাতিক সংস্হা এনরনের প্রতিনিধিদল কে “ গো ব্যাক এনরন” শ্লোগান দিতে দিতে কারখানার চত্বরে ঢুকতেই দেয় নি সি.আই.টি.ইউ এর নেতৃত্বে দুর্গাপুর ইস্পাতের শ্রমিকরা । পরে দেউলিয়া হয়ে যায় এনরন কোম্পানি । শেষমেশ ২০০১ সালে সরকারি সংস্হা এন.টি.পি.সি ও সেইল যৌথভাবে তৈরি করে এন.এস.পি.সি.এল(এন.টি.পি.সি-সেইল পাওয়ার কোম্পানী লিমিটেড) । বর্তমানে উভয় সংস্হার হাতে ৫০% করে মোট ১০০% শেয়ার আছে ।বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ব ইস্পাত উৎপাদক সংস্হা সেইলের দুর্গাপুর ইস্পাত ছাড়াও রৌরকেল্লা ও ভিলাই কারখানায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা এন.এস.পি.সি.এল। কিন্তু মোদি সরকার আসার পরে নতুন করে লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা এন.এস.পি.সি.এল এর শেয়ার বিক্রি ও বেসরকারীকরনের ষরযন্ত্র শুরু হয়ছে । ফলে বিপদের মুখে পড়েছে দুর্গাপুর ইস্পাত,রৌরকেল্লা ও ভিলাই কারখানায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্হা ।  ১৭-১০-২০১৯ তারিখে এন.এস.পি.সি.এল কর্তৃপক্ষের থেকে সংস্হারসাংগঠনিক ব্যবস্হা রূপান্তরের উদ্যোগ’- শীর্ষক একতরফা জারি করা নোটিশে উপদেষ্টা হিসাবে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বহুজাতিক বিমা উপদেষ্টা ব্রোকারেজ সংস্হা উইলিস টাওয়ার্স ওয়াটসন পিএলসি কে নিয়োগ করায় এই সন্দেহ আরও গাঢ় হয় । ২০১৯ এর ২১শে অক্টোবর দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্হা এন.এস.পি.সি.এল- উইলিস টাওয়ার্স ওয়াটসন পিএলসি- প্রতিনিধিরা পরিদর্শনে এলে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পরে দলমত নির্বিশেষে এন.এস.পি.সি.এল দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার স্হায়ি ঠিকা শ্রমিকরা জড়ো হয়ে বহুজাতিক সংস্হার প্রতিনিধিদের ঘিরে ধরেন।শ্লোগান দিতে থাকেন ,” গো ব্যাক ওয়াটসন  ছুটে আসেন এন.এস.পি.সি.এল..ইউ(সি.আই.টি.ইউ) হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সি.আই.টি.ইউ) সহ অন্যান্য ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ শ্রমিকদের প্রবল বিক্ষোভ   চাপের মুখে উইলিস টাওয়ার্স ওয়াটসন পিএলসি- প্রতিনিধিরা কারখানার চত্বর ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। কিন্তু এরপরেও চক্রান্ত চলতে থাকে । মোদি সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এন.এস.পি.সি.এল-এ এন.টি.পি.সি ও সেইল উভয়ের অংশের ৫০ : ৫০ শতাংশ শেয়ার থেকে ২৪ : ২৪ শতাংশ অর্থাৎ মোট ৪৮% শেয়ার বিক্রি করা হবে।অথচ বিগত পাঁচ বছরে সংস্হার মুনাফার পরিমান ছিল যথাক্রমে,৩৩১.৭১ কোটি ( ২০১৭-১৮) ৩৬২.৩৩ কোটি(২০১৮-১৯) ,৩৬৮.৯৬ কোটি( ২০১৯-২০),৩৪৮.৯৮ কোটি(২০২০-২১) ও ৩৬০ কোটি(২০২১-২২) টাকা । । অবিলম্বে শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে এন.এস.পি.সি.এল-এর শ্রমিকরা গড়ে তুলেছেন এন.এস.পি.সি.এল বাঁচাও, রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা বাঁচাও কমিটি । কমিটিতে আছে সিআইটিইউ অনুমোদিত এন.এস.পি.সি.ই.ইউ,আইএনটিটিইউসি ও  এন.এস.পি.সি.এল এক্স এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশান। নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে অফিসার্সদের সংগঠন । আজ সকালে কমিটির ডাকে শ্রমিকরা জড়ো হয়ে অবিলম্বে শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে প্রবল বিক্ষোভ দেখান । এন.এস.পি.সি.ই.ইউ (সিআইটিইউ) এর পক্ষে প্রদ্যুত মুখার্জী,অবিলম্বে শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে আন্দোলন আরও জোরদার করতে শ্রমিক ঐক্য আরও প্রসারিত ও মজবুত করার আহ্বান জানিয়েছেন ।





No comments:

Post a Comment