দুর্গাপুর,৯ই মে : বিগত বাজপেয়ী নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের আমলে ২০০০ সালে দুর্গাপুর
ইস্পাতের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী কারখানার ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্টটি বেসরকারী বহুজাতিক
সংস্হা এনরনের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় । সেবার,বহুজাতিক উপদেষ্টা সংস্হা ম্যাকেঞ্জির সুপারিশে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার
ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্ট কিনতে চেয়ে আসা বহুজাতিক সংস্হা এনরনের প্রতিনিধিদল কে
“ গো ব্যাক এনরন” শ্লোগান দিতে দিতে কারখানার চত্বরে ঢুকতেই দেয় নি সি.আই.টি.ইউ এর
নেতৃত্বে দুর্গাপুর ইস্পাতের শ্রমিকরা । পরে দেউলিয়া হয়ে যায় এনরন কোম্পানি । শেষমেশ ২০০১ সালে সরকারি
সংস্হা এন.টি.পি.সি ও সেইল যৌথভাবে তৈরি করে এন.এস.পি.সি.এল(এন.টি.পি.সি-সেইল পাওয়ার
কোম্পানী লিমিটেড) । বর্তমানে উভয় সংস্হার হাতে ৫০% করে মোট ১০০% শেয়ার আছে ।বর্তমানে
রাষ্ট্রায়ত্ব ইস্পাত উৎপাদক সংস্হা সেইলের দুর্গাপুর ইস্পাত ছাড়াও রৌরকেল্লা ও ভিলাই
কারখানায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা এন.এস.পি.সি.এল। কিন্তু মোদি
সরকার আসার পরে নতুন করে লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা এন.এস.পি.সি.এল এর শেয়ার বিক্রি
ও বেসরকারীকরনের ষরযন্ত্র শুরু হয়ছে । ফলে বিপদের মুখে পড়েছে দুর্গাপুর ইস্পাত,রৌরকেল্লা
ও ভিলাই কারখানায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্হা । ১৭-১০-২০১৯ তারিখে এন.এস.পি.সি.এল কর্তৃপক্ষের থেকে সংস্হার ‘সাংগঠনিক ব্যবস্হা রূপান্তরের উদ্যোগ’- শীর্ষক একতরফা জারি করা নোটিশে উপদেষ্টা হিসাবে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বহুজাতিক বিমা উপদেষ্টা ও ব্রোকারেজ সংস্হা উইলিস টাওয়ার্স ওয়াটসন পিএলসি কে নিয়োগ করায় এই সন্দেহ আরও গাঢ় হয় । ২০১৯ এর ২১শে অক্টোবর দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্হা এন.এস.পি.সি.এল-এ উইলিস টাওয়ার্স ওয়াটসন পিএলসি-র প্রতিনিধিরা পরিদর্শনে এলে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পরে । দলমত নির্বিশেষে এন.এস.পি.সি.এল ও দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার স্হায়ি ও ঠিকা শ্রমিকরা জড়ো হয়ে ঐ বহুজাতিক সংস্হার প্রতিনিধিদের ঘিরে ধরেন।শ্লোগান দিতে থাকেন ,” গো ব্যাক ওয়াটসন “ ।
ছুটে আসেন এন.এস.পি.সি.এল.ই.ইউ(সি.আই.টি.ইউ) ও হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সি.আই.টি.ইউ) সহ অন্যান্য ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ । শ্রমিকদের প্রবল বিক্ষোভ ও
চাপের মুখে উইলিস টাওয়ার্স ওয়াটসন পিএলসি-র প্রতিনিধিরা কারখানার চত্বর ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। কিন্তু এরপরেও চক্রান্ত চলতে থাকে
। মোদি সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এন.এস.পি.সি.এল-এ এন.টি.পি.সি ও সেইল উভয়ের অংশের
৫০ : ৫০ শতাংশ শেয়ার থেকে ২৪ : ২৪ শতাংশ অর্থাৎ মোট ৪৮% শেয়ার বিক্রি করা হবে।অথচ বিগত
পাঁচ বছরে সংস্হার মুনাফার পরিমান ছিল যথাক্রমে,৩৩১.৭১ কোটি ( ২০১৭-১৮) ৩৬২.৩৩ কোটি(২০১৮-১৯)
,৩৬৮.৯৬ কোটি( ২০১৯-২০),৩৪৮.৯৮ কোটি(২০২০-২১) ও ৩৬০ কোটি(২০২১-২২) টাকা । । অবিলম্বে
শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে এন.এস.পি.সি.এল-এর শ্রমিকরা গড়ে তুলেছেন এন.এস.পি.সি.এল
বাঁচাও, রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা বাঁচাও কমিটি । কমিটিতে আছে সিআইটিইউ অনুমোদিত এন.এস.পি.সি.ই.ইউ,আইএনটিটিইউসি
ও এন.এস.পি.সি.এল এক্স এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশান। নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে
অফিসার্সদের সংগঠন । আজ সকালে কমিটির ডাকে শ্রমিকরা জড়ো হয়ে অবিলম্বে শেয়ার বিক্রির
সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে প্রবল বিক্ষোভ দেখান । এন.এস.পি.সি.ই.ইউ (সিআইটিইউ) এর পক্ষে
প্রদ্যুত মুখার্জী,অবিলম্বে শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে আন্দোলন আরও জোরদার
করতে শ্রমিক ঐক্য আরও প্রসারিত ও মজবুত করার আহ্বান জানিয়েছেন ।
No comments:
Post a Comment