দুর্গাপুর ,১৫ই সেপ্টেঃ : পঃ বঙ্গে শ্রীমতি
মমতা ব্যানার্জী নেতৃত্বে তৃণমূল সরকার সাড়ে চার বছরে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে একদিকে
একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে অন্যদিকে শ্রমিক অধিকারের উপর তীব্র আঘাত নেমে এসেছে । বিশেষতঃ
তীব্র আক্রমন নেমে এসেছে রাষ্ট্রায়ত্ব ইস্পাত
শিল্প সেইলের অন্তর্ভূক্ত দুর্গাপুর ইস্পাতের শ্রমিকদের উপরে । তৃণমূলের দুষ্কৃতিরা
এ পর্যন্ত ৩৫০০ জন দুর্গাপুর ইস্পাতের ঠিকা শ্রমিক কে সি.আই.টি.ইউ করার ‘ অপরাধে ’
কাজের জায়গা থেকে উচ্ছেদ করেছে । তৃণমূলের দুষ্কৃতিরা কারখানার ভিতরে ও ইস্পাতনগরীতে
স্হায়ী ও ঠিকা শ্রমিকদের উপরে অকথ্য নির্যাতন চালিয়েছে,বহু শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন
। উচ্ছেদ হওয়া বহু ঠিকা শ্রমিকের পরিবার ভেসে গেছে । একের পর এক শ্রমিক-সমবায় তৃণমূলীরা
গায়ের জোড়ে বিনা নির্বাচনে দখল করেছে । আসলে তৃণমূল সরকার আসার পরেও দুর্গাপুর ইস্পাত
কারখানায় ইউনিয়ন স্বীকৃতি নির্বাচনে হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ
) বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ার পরে তৃণমূল সরাসরি সন্ত্রাস সৃষ্টির পথ ধরে । কিন্তু তৃণমূলের
এই অবর্নণীয় সন্ত্রাসে বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্হা নেওয়ার পরিবর্তে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন
অসংখ্য মিথ্যা মামলায় সি.আই.টি.ইউ এর নেতা-কর্মীদের জড়িয়েছে । অন্যদিকে তৃণমূলী দুষ্কৃতিদের
সন্ত্রাস নিয়ে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার কর্তৃপক্ষ নীরবতা পালন করছে যা পরোক্ষে কারখানা
ও ইস্পাতনগরীতে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতে সাহায্য করছে । আবার , দুর্গাপুর ইস্পাত
কারখানার কর্তৃপক্ষ যখন কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে একের পর স্বৈরাচারী কায়দায়
শ্রমিকবিরোধী পদক্ষেপ নিচ্ছে তখন তৃণমূলী ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষের স্বৈরাচারী সিদ্ধান্তের
বিরোধীতা না করার জন্য শ্রমিকদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে । একইভাবে,মোদী সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত
শিল্প ধ্বংস করার নীতির বিরোধীতার করার বদলে , ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলনেরই বিরোধীতা করছে তৃণমূলী ইউনিয়ন
! কিন্তু তৃণমূলী ইউনিয়ন ও দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার কর্তৃপক্ষের এই পারস্পরিক দেওয়া-নেওয়ার
খেলা আজ দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার শ্রমিকদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে । আজ দুর্গাপুর
ইস্পাত কারখানার অ্যাডমিন বিল্ডিং এ এক বিশাল প্রতিবাদ সভায় এই অভিযোগ করেন হিন্দুস্হান
স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ ) এর ওবি-কনভেনর ( ডিএসপি শাখা) কমরেড বিশ্বরূপ
ব্যানার্জী । তিনি বলেন যে অতীতের মত বর্তমানেও এইচ.এস.ই.ইউ সন্ত্রাসের সামনে মাথা
নত করে নি ,করবেও না । গত সাড়ে চার বছরে একথা প্রমানিত হয়েছে । ডিএসপি র কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত
শ্রমিক-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দুর্গাপুর ইস্পাত
কারখানার কর্তৃপক্ষ যে একাধিক অন্যায় ও অনায্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে ,তা প্রত্যাহার না
করা পর্যন্ত এইচ.এস.ই.ইউ তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবে । একই সাথে তিনি ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক
আন্দোলনের উপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন যে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার কর্তৃপক্ষের স্বৈরাচারী
সিদ্ধান্তকে পরিবর্তনের জন্য প্রত্যেক শ্রমিক প্রতিটি শ্রমিক ইউনিয়নকে যৌথ ভাবে লড়াই
গড়ে তুলতে হবে । ১৯-দফা দাবীতে হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ )
আন্দোলন চালাচ্ছে । গত এক সপ্তাহের মধ্যে হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ
) র ডাকে ১৯-দফা দাবীতে ডিএসপি র কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়ে পর পর দুটি বিশাল প্রতিবাদ
সভা হল । সভা চলাকালীন কমঃ অরুন চৌধুরীর নেতৃত্বে ইউনিয়নের এক প্রতিনিধিদল সি.ই.ও এর
দফ্তরে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেন এবং প্রতিনিধিদলের সদস্য কমঃ ললিত মিশ্র আলোচনার বিষয়
সভাকে জানান । এছাড়াও ,আজকের সভায় বক্তব্য রাখেন মনোজ হাজরা ( ওউন ইয়োর ওউন হাউস ওনার্স অ্যাসোঃ ),শ্যামল দত্ত ( স্টীল এমপ্লঃ ফোরাম)
,অশোক চক্রবর্তী ( এক্স- এমপ্লঃ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোঃ ) ও অনীতা মাল ( ইস্পাতনগরীর মহিলাদের পক্ষে
)। সভাপতিত্ব করেন কমঃ কাজল
মজুমদার ।
No comments:
Post a Comment