Tuesday 31 January 2017

দুর্গাপুরে প্রতিশ্পর্ধী গন-আন্দোলনের সামনে পিছু হটল প্রশাসন ।



দুর্গাপুর,৩১শে জানুঃ- এ যেন উলট্ পূরাণ ! রাজ্যে তৃণমূলের সরকার আসার পরে , সিপিআই(এম) নেতৃত্বের কাছে কবে খোদ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘ মিটমাট ‘ করার প্রস্তাব পৌঁছেছে তা গবেষনার বিষয় । কিন্তু আজ এরকমই ঘটল দুর্গাপুরে । ঘটনার শুরু হয় গত ২৮শে জানুঃ , ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টি ( মার্কসবাদী)-র বর্ধমান জেলা কমিটির ডাকে ,’ শিল্প বাঁচাও,কৃষি বাঁচাও,দেশ বাঁচাও’ দাবীতে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে ঐতিহাসিক শ্রমিক-কৃষক জমায়েতর মধ্য দিয়ে । পুলিশের আগাম অনুমতি নিয়ে আইন মোতাবেক ও শান্তিপূর্ন জময়েতে বিপুল জন সমাবেশ দলদাস প্রশাসন কে হতচকিত করে দেয় ।বিপুল     জনস্রোত সমাবেশে স্হলের অত্যন্ত নিকটবর্তী ২নং জাতীয় মহা সড়ক ( জি.টি.রোড) প্লাবিত করে দেয় । এই সময় জেলার ডি.এম সৌমিত্র মোহনের গাড়ী এসে পরে । পার্টির স্বেচ্ছাসেবক ও নেতৃত্ব তার যাওয়ার রাস্তা করে দিলেও,তিনি উত্তেজিত ভঙ্গিমায় প্ররোচনা তৈরির করার চেষ্টা করেন এবং ‘ ব্যবস্হা গ্রহন’ এর হুমকি দেন বলে অভিযোগ । গোটা ঘটনার ভিডিও ফুটেজ  আছে বলেও পার্টি নেতৃত্বর পক্ষ থেকে পরে জানানো হয় । পরের দিন থেকে ‘ ব্যবস্হা গ্রহন’ এর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায় । পুলিশের পক্ষ থেকে স্হানীয় সিটি সেন্টার থানায় অকল্পনীয়ভাবে জেলা পার্টি নেতৃত্বের একাংশ সহ ২০০৬ জন  নামে সাজানো অভিযোগের ভিত্তিতে জামিন-অযোগ্য ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয় এবং রাতারাতি দুর্গাপুরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ৫ জন পার্টি সদস্য কে গ্রেফ্তার করা হয় ।তৃণমূলের দলদাস হয়ে পুলিশ  দুর্গাপুরের বিভিন্ন জায়গায় পার্টি নেতাদের খোঁজে তল্লাসীর নামে বাড়ী বাড়ী গিয়ে হুমকি-গালিগালাজ শুরু করে । দুর্গাপুরের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙ্গে । দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল ভয়াবহ সংকটের মুখে ।দায়ী কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকার । বর্ধমান জেলা ভাগ করার অজুহাতে দুর্গাপুর কে গুরুত্বহীন করার চক্রান্ত সর্ব সমক্ষে ।পৌরসভা নিষ্ক্রিয় ।  লাল ঝান্ডা নেতৃত্বে মানুষ যখন দুর্গাপুর বাঁচাতে যখন প্রায় প্রতিদিন রাস্তায় ,তখন তৃণমূল দলটিকে দূরবীন দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না । এই পরিস্হিতিতে তৃণমূলের মদতপুষ্ট পুলিশী-সন্ত্রাস আগুনে ঘৃতাহূতি দেয় । পার্টির পক্ষ থেকে দুর্গাপুরের মানুষের কাছে আজ দুর্গাপুর থানায় স্বেচ্ছায় গ্রেফ্তার-বরন অভিযানের ডাক দেওয়া হলে,মানুষ সর্বশক্তি দিয়ে প্রস্তুতি নিতে শুরু করে । এ দিকে আজ সকালে পার্টি নেতা ও ই.সি.এল এর শ্রমিক পঙ্কজ রায়সরকার তার কর্মস্হল খাস কাজোরা কোলিয়ারি তে কাজে যোগ দিতে গেলে , তৃণমূলের গুন্ডা বাহিনী আক্রমন করে । শ্রমিক-কর্মচারী ও এলাকার সাধারন মানুষ গুন্ডাদের তাড়া করে ধরে ফেলে ও উত্তম-মধ্যম দেয় । পরে পুলিশ এসে তৃণমূলের গুন্ডাদের উত্তেজিত জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় ।  এই খবর পৌঁছাতেই , দুর্গাপুরের উত্তেজনার পারদ আরও চড়তে শুরু করে । প্রবল জন-সুনামী দুর্গাপুর থানায় আছড়ে পড়তে চলেছে , এটা আঁচ করে পুলিশের কর্মকর্তারা পার্টি নেতৃত্বের কাছে আলোচনায় বসার জন্য নাছোরবান্দা হয়ে বার বার আবেদন জানাতে থাকে । লিখিত স্মারক লিপি নেবে এই শর্তে পার্টির প্রতিনিধি দল আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশারিয়েটের ডেপুটি পুলিশ কমিশনারের সাথে দেখ করে । প্রতিনিধি দলে ছিলেন রথীন রায়,বিনয়েন্দ্রকৃষ্ণ চক্রবর্তী , সন্তোষ দেবরায়,মহাদেব পাল,নির্মল ভট্টাচার্য ও মীনা মজুমদার । পুলিশের পক্ষ থেকে বাড়ী বাড়ী গিয়ে গ্রেফ্তার বন্ধ ও ৫ জন জেল-বন্দীদের জামিনের ক্ষেত্রে  বিরোধীতা করা হবে না এই প্রতিশ্রুতি দিলে, পার্টি নেতৃত্ব আজকের কর্মসূচী আগামী ৬ তারিখ পর্যন্ত স্হগিত রাখার কথা জানিয়ে দেয় ।

ইতিমধ্যে , আজকের বেলা ৩-০০ টার কর্মসূচীতে যোগ দিতে হাজার হাজার মানুষ পার্টির দুর্গাপুর ইস্পাত জোনাল দফ্তর আশীষ-জব্বর ভবনে জড়ো হতে শুরু করেন । পার্টি নেতৃবৃন্দ তাদের সামনে বক্তব্য রাখেন এবং প্রশাসনের সাথে আলোচনার বিবরন দিয়ে ,লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান । বক্তব্য রাখেন রথীন রায়,সন্তোষ দেবরায়,গৌরাঙ্গ চ্যাটার্জী ও নির্মল ভট্টাচার্য ।








No comments:

Post a Comment