দুর্গাপুর,২৬শে এপ্রিল
: প্রবলতম শ্রমিক আন্দোলনের মুখে , রাষ্ট্রায়ত্ব
ইস্পাত উৎপাদক সংস্হা সেইলের অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট সহ সালেম ও ভদ্রাবতী কারখানা বেসরকারী
হাতে বিক্রীর প্রক্রিয়া ধাক্কা খেয়েছে, কারন কোন খদ্দের কেনার জন্য এগিয়ে আসে নি ।
তাই কেন্দ্রীয় সরকার ২রা মে পর্যন্ত টেন্ডারের সময়সীমা বৃ্দ্ধি করেছে । কিন্তু, আজ ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের যৌথ মঞ্চের ডাকে , চড়া রোদ
কে উপেক্ষা করে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের মেইন
গেটে সমাবেশ বুঝিয়ে দিল যে ইস্পাত শ্রমিকরা
বেসরকারীকরনের বিরুদ্ধে লড়াই এ বিন্দুমাত্র শৈথিল্য দেখাতে রাজি নয় । একই কথার প্রতিধ্বনি
শোনা গেল নেতৃবৃন্দের বক্তব্যে । দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় গত ১১ই
এপ্রিল বেসরকারীকরনের বিরুদ্ধে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের ঐতিহাসিক ধর্মঘটের জন্য ইস্পাত শ্রমিকদের অভিনন্দন
জানিয়ে বলেন যে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বাঁচানোর লড়াই কে কেন্দ্র করে যে অভূতপূর্ব
শ্রমিক ঐক্য তৈরি হয়েছে । এ যাবৎ ৭২ টি যৌথ কর্মসূচী পালিত হয়েছে । যৌথ আন্দোলনে কে আরও প্রসারিত করতে হবে । যারা এখনও
যৌথ আন্দোলনে যুক্ত হননি,তাঁদের প্রতি তিনি কারখানা বাঁচানোর আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার
জন্য আবেদন জানান । আই.এন.টি.ইউ.সি-র বর্ধমান জেলার সভাপতি ও ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের যৌথ
মঞ্চের যুগ্ম-আহ্বায়ক বিকাশ ঘটক বলেন যে কারখানা বাঁচানোর আন্দোলনের ব্যাপকতা ধর্মঘটের
বিরোধীদেরও মন ছুঁয়েছে । অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট ও রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা ছাড়া ডঃ বিধানচন্দ্র রায়ের মানস-নগরী দুর্গাপুর
শিল্পাঞ্চল বেঁচে থাকা অসম্ভব । তাই অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট বাঁচানোর লড়াই এর পাশে
শিল্পী-ক্রীড়াবিদ-ব্যবসায়ী সহ সমাজের সমস্ত অংশের মানুষ এসে দাঁড়িয়েছেন । সিআইটিইউ
-র বর্ধমান জেলার সভাপতি বিনয়েন্দ্র কিশোর চক্রবর্তী সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে শ্রমিক
আন্দোলনের ব্যাপকতা দেখে নানা বিভ্রান্তিকর প্রচার চালানোর যে চেষ্টা চলছে সে বিষয়ে
সতর্ক থাকার জন্য ইস্পাত শ্রমিকদের কাছে আবেদন জানান । বিএমএস এর বক্তব্য খন্ডন করে
তিনি বলেন অতীতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী কে
চিঠি লিখে আশ্বাস দেওয়ার অব্যবহিত পরেই এম.এ.এম.সি কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয় । সাম্প্রতিক
কালে , কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রীয় প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার
হিন্দুস্হান কেবলস্ বন্ধ করে দিয়েছে । তাই কারখানা বাঁচানোর স্বার্থে , বিএমএস এর উচিৎ
যৌথ আন্দোলনে সাথে যুক্ত হওয়া । একই সাথে তিনি রাজ্য সরকারের নীরবতার সমালোচনা করেন
। স্টিল ওয়ার্কার্স ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (সিআইটিইউ
)-এর সম্পাদক পি.কে.দাস বলেন
রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা গুলিকে মোদী সরকারের বেসরকারীকরন-বিলগ্নীকরন করার প্রক্রিয়া
আই.এম.এফ-বিশ্ব ব্যাঙ্ক নির্দেশিত তৃতীয় বিশ্বের দেশে ‘অবশিল্পায়ন’-এর চক্রান্তের অঙ্গ
। রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা
গুলিকে বাঁচাতে এবং লাভজনক সংস্হায় পরিনত করার
জন্য শ্রমিক আন্দোলন কে নীতি-পরিবর্তনের লড়াই গড়ে তুলতেই হবে । এছাড়াও আজকের সমাবেশে
বক্তব্য রেখেছেন অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট ও দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের শ্রমিক নেতৃবৃ্ন্দ
।
সমাবেশ থেকে দুর্গাপুর
শিল্পাঞ্চলে কারখানা বন্ধ ও রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা
বেসরকারীকরন-বিলগ্নীকরন করার বিরুদ্ধে একটি বিশাল নাগরিক কনভেনশন অনুষ্ঠিত করার কথা
ঘোষনা করা হয় ।
No comments:
Post a Comment