Monday 29 May 2017

মেহেনতি মানুষের সংগ্রাম বিকশিত করেই ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জোড়দার লড়াই গড়ে তোলা সম্ভব ।



দুর্গাপুর , ২৯শে মে : আজ সন্ধ্যায়  ইস্পাতনগরীর দেশবন্ধু ভবনে , ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি ( মার্কসবাদী )-র ইস্পাত জোনাল কমিটির পক্ষ থেকে আয়োজিত ‘ সাম্প্রদায়িকতার বিপদ ও আমাদের দায়িত্ব ‘- শীর্ষক আলোচনা সভায় একথা বলেন একক আলোচক ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি ( মার্কসবাদী )-র রাজ্য কমিটির সদস্য দেবাশীষ চক্রবর্তী । তিনি বলেন যে পরাধীন ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ ভারতের সাম্প্রদায়িকতার ভাবাদর্শ নির্মান করে এবং সেই ভাবাদর্শ হিন্দুত্ববাদী ও মুসলিম সাম্প্রদায়িক শক্তি উভয়ে গ্রহন করে পরিপুষ্ট হয় , যা ভারতের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল ধারার সাথে মেলে না । এই প্রসঙ্গে তিনি উল্ল্যেখ করেন যে ১৯৩১ সালে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের করাচী অধিবেশনে স্বাধীন ভারতে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের পক্ষে প্রস্তাব গ্রহন করা হয় । তথাপি স্বাধীনতার সময়ে কলংকজনক দেশভাগের স্মৃতি আজও বয়ে বেড়াতে হচ্ছে । ১৯৯১ সালে দেশে নয়া অর্থনীতির প্রনোয়নের সাথে সাথে দেশে সাম্প্রদায়িকতার ধরন ও বিপদ পাল্টেছে । হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক শক্তি সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের সাম্প্রদায়িক শক্তি হিসাবে ‘ রাজনৈতিক হিন্দু ‘ ধারনা নির্মান করার মধ্য দিয়ে ধর্মীয় পরিচিতি কে ব্যবহার করে মেরুকরনের মাধ্যমে কেবল রাজনৈতিক নয় রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করতে চাইছে । সংখ্যালঘু সাম্প্রদায়িকতা বিপজ্জনক , কিন্তু তা কোন ভাবেই রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের রাস্তায় যাওয়ার সমর্থ হয় না । ‘রাজনৈতিক হিন্দু ‘ ধারনা প্রসার ঘটাতে হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক শক্তি বেদ-মহাকাব্য-গীতা-পুরানের ভুল ভাষ্য হাজির করছে । ইতিহাসের বিকৃতিকরন  করছে । অন্যদিকে হিন্দু ধর্মের   ‘তেত্রিশ কোটি দেবতার’ বহুত্ববাদী ধারনার বদলে এক দেবতা,এক ধর্মের ধারনায় ধর্মপ্রান মানুষ কে বেঁধে ফেলতে চাইছে হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক শক্তি । বিভিন্ন বিকৃত তথ্য হাজির সংখ্যালঘু  সম্প্রদায়কে ‘কাল্পনিক’ শত্রু হিসাবে চিত্রিত করে , বর্তমান নব্য উদার অর্থনীতিতে চরম ভাবে নিষ্পেষিত মেহেনতি মানুষ কে ভুল বুঝিয়ে লড়াই-সংগ্রামের রাস্তা থেকে দুরে সরিয়ে রাখার লক্ষ্যে , সংখ্যালঘু  সম্প্রদায়কে ‘প্রতিপক্ষ ‘ চিহ্নিত করতে চাইছে । আসলে নব্য উদার অর্থনীতিতে গেরুয়া ঝাণ্ডা হল পুঁজির ঝাণ্ডা । তাই সাম্প্রাদায়িকতার বিরুদ্ধে , ধর্মনিরপেক্ষতার স্বার্থে লড়াই জোরদার করতে হলে নব্য উদার অর্থনীতির বিরু্ধে মেহেনতী মানুষের ইস্পাত দৃঢ় ঐক্য গড়ে লড়াই তীব্র থেকে তীব্রতর করতে হবে । সেই লড়াই বিকশিত করা বামপন্হীদের অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য ।

সভায় সভাপতিত্ব করেন নির্মল ভট্টাচার্য । উপস্হিত ছিলেন সন্তোষ দেবরায় , মহাব্রত কুন্ডু ,সুবীর সেনগুপ্ত প্রমূখ ।











No comments:

Post a Comment