Wednesday 1 November 2017

বাস্তবতার নিরিখে কর্মসংস্হানে ব্যর্থ দিল্লি ও নবান্ন উভয় : মানব মুখার্জী

  

দুর্গাপুর,১লা নভেঃ : আজ দুর্গাপুরের বেনাচিতি-র আনন্দধারা সভাগৃহে         ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের আসন্ন পশ্চিম বর্ধমান জেলা ২১ তম সম্মেলন ( দুর্গাপুরের সগরভাঙ্গায় ১০-১১ই নভেঃ ) উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সেমিনারে একথা বলেন প্রাক্তন যুবনেতা মানব মুখার্জী । কর্মসংস্হান ও বাস্তবতা : দিল্লি টু নবান্ন  শীর্ষক সেমিনারে একমাত্র বক্তা মানব মুখার্জী বলেন যে পুঁজিবাদী ব্যবস্হার সাথে বেকারী অঙ্গাঙ্গী ভাবে যুক্ত । পুঁজি মুনাফার পিছনে দৌড়ায় । সেই দৌড়ের সাথে কর্মসংস্হান বৃদ্ধির সম্পর্ক বিপরীতমুখী না হলেও খুব সহায়কও নয় । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে সংকটগ্রস্হ পুঁজিবাদী ব্যবস্হায় কর্মসংস্হান এর জন্য কেইন্সীয় দাওয়াই এর ফলে রাষ্ট্রের ‘ সোশ্যাল-ওয়েলফেয়ার ‘ এর দায়িত্বও আজ নয়া উদারনৈতিক বাদের ঠেলায় বিপর্যস্ত । স্বাধীনোত্তোর ভারতে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও রাষ্ট্রায়ত্ব ক্ষেত্রের মাধ্যমে কর্মসংস্হানের যে উদ্যোগ নেওয়া হয় , প্রয়োজনের তুলনায় তা নিতান্তই স্বল্প ছিল । আসলে ভারতীয় পুঁজিপতিদের তৎকালীন দূর্বল পুঁজি কে বিকাশ ঘটানোর জন্য ভারতীয় রাষ্ট্র কে ব্যবহার করার নীতি নেওয়া হয়েছিল । কিন্তু আজ সেই নীতিও পরিত্যাগ করে রাষ্ট্রায়ত্ব ক্ষেত্র কে ধ্বংস করার জন্য রাষ্ট্র কে ব্যবহার করা হচ্ছে । কর্মসংস্হানের দায়িত্ব থেকে রাষ্ট্র কে হাত গুটিয়ে , বাজারের হাতে তুলে দেওয়ার যে নীতি নেওয়া হয়েছে । বাজারের আগ্রাসী নীতির  সাথে পাল্লা দিয়ে কমছে কর্মসংস্হান । ফাটকা বাজারী বিনিয়োগে অতি ধনীদের অকল্পনীয় মুনাফায় কাজের সংস্হান তলানিতে ঠেকেছে শিল্প ও কৃষি উভয় ক্ষেত্রেই । এই সর্বনাশা বাজারী অর্থনীতির প্রয়োগের ক্ষেত্রে দিল্লি থেকে নবান্ন উভয়েই ব্যাকুল । পঃ বঙ্গে গোদের উপরে বিষফোঁড়া তৃণমূলের তোলা ও সিন্ডিকেট রাজ । যে রাজ্যে একটা লেদ মেশিন বসাতেও তোলা দিতে হয় , সেখানে কে শিল্পে বিনিয়োগ করতে আসবে ? যে উইপ্রো-ইনফোসিস এর নামে বাজার মাত করার চেষ্টা করার চেষ্টা করছে , সেই উইপ্রো-ইনফোসিস তো আসছে রিয়াল এস্টেটে বিনিয়োগ করতে , আই.টি তে বিনিয়োগ অথবা কর্মসংস্হানের জন্য নয় । মানব মুখার্জী  ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের আসন্ন পশ্চিম বর্ধমান জেলা ২১ তম সম্মেলন কে কর্মসংস্হানের জন্য বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান  জানান ।  সেমিনারের সূচনায় সঞ্চালক প্রখ্যাত সাংবাদিক ত্রিদিব ভট্টাচার্য ফোর্বস পত্রিকার থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে সারা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বিকাশের হার কমেছে ভারতে । তাই সকলের জন্য কাজের দাবীতে ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের লড়াই এর ভিত্তি আরও প্রসারিত হওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে । সেমিনারের সূচনায় বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি সন্তোষ দেবরায় ও সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকার । উপস্হিত ছিলেন গৌরাঙ্গ চ্যাট্যার্জী , পার্থ মুখার্জী , মহাব্রত কুন্ডু , বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী , পরেশ মন্ডল, সিদ্ধার্থ বসু , শুভাশীষ মাইতি সহ প্রাক্তন ও বর্তমান যুব নেতৃবৃন্দ ।

এদিকে ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের আসন্ন পশ্চিম বর্ধমান জেলা ২১ তম সম্মেলন উপলক্ষ্য দুর্গাপুর জুড়ে প্রস্তুতি তুঙ্গে । সম্মেলনের জন্য যুব সদস্যদের প্রত্যেকে অর্থদান করছেন । অর্থ সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন শ্রমিকরা ও সাধারন মানুষ । সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশে আগামী ১০ই নভেঃ সগরভাঙ্গায় বক্তব্য রাখবেন ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সম্পাদক ও সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য মহঃ সেলিম । সম্মেলনের বার্তা পৌঁছে দিতে আগামীকাল ইস্পাতনগরীর চিত্তব্রত মজুমদার ভবনে আরেকটি সেমিনার হবে । মন কি বাত : ডিমনেটাইজেশন থেকে জিএসটি শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য রাখবেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাসগুপ্ত । 















No comments:

Post a Comment