দুর্গাপুর,১লা নভেঃ : আজ দুর্গাপুরের বেনাচিতি-র
আনন্দধারা সভাগৃহে ভারতের গনতান্ত্রিক
যুব ফেডারেশনের আসন্ন পশ্চিম বর্ধমান জেলা ২১ তম সম্মেলন ( দুর্গাপুরের সগরভাঙ্গায়
১০-১১ই নভেঃ ) উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সেমিনারে একথা বলেন প্রাক্তন যুবনেতা মানব মুখার্জী
। কর্মসংস্হান ও বাস্তবতা : দিল্লি টু নবান্ন
শীর্ষক সেমিনারে একমাত্র বক্তা মানব মুখার্জী বলেন যে পুঁজিবাদী ব্যবস্হার সাথে
বেকারী অঙ্গাঙ্গী ভাবে যুক্ত । পুঁজি মুনাফার পিছনে দৌড়ায় । সেই দৌড়ের সাথে কর্মসংস্হান
বৃদ্ধির সম্পর্ক বিপরীতমুখী না হলেও খুব সহায়কও নয় । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে সংকটগ্রস্হ
পুঁজিবাদী ব্যবস্হায় কর্মসংস্হান এর জন্য কেইন্সীয় দাওয়াই এর ফলে রাষ্ট্রের ‘ সোশ্যাল-ওয়েলফেয়ার
‘ এর দায়িত্বও আজ নয়া উদারনৈতিক বাদের ঠেলায় বিপর্যস্ত । স্বাধীনোত্তোর ভারতে পঞ্চবার্ষিকী
পরিকল্পনা ও রাষ্ট্রায়ত্ব ক্ষেত্রের মাধ্যমে কর্মসংস্হানের যে উদ্যোগ নেওয়া হয় , প্রয়োজনের
তুলনায় তা নিতান্তই স্বল্প ছিল । আসলে ভারতীয় পুঁজিপতিদের তৎকালীন দূর্বল পুঁজি কে
বিকাশ ঘটানোর জন্য ভারতীয় রাষ্ট্র কে ব্যবহার করার নীতি নেওয়া হয়েছিল । কিন্তু আজ সেই
নীতিও পরিত্যাগ করে রাষ্ট্রায়ত্ব ক্ষেত্র কে ধ্বংস করার জন্য রাষ্ট্র কে ব্যবহার করা
হচ্ছে । কর্মসংস্হানের দায়িত্ব থেকে রাষ্ট্র কে হাত গুটিয়ে , বাজারের হাতে তুলে দেওয়ার
যে নীতি নেওয়া হয়েছে । বাজারের আগ্রাসী নীতির সাথে পাল্লা দিয়ে কমছে কর্মসংস্হান । ফাটকা বাজারী
বিনিয়োগে অতি ধনীদের অকল্পনীয় মুনাফায় কাজের সংস্হান তলানিতে ঠেকেছে শিল্প ও কৃষি উভয়
ক্ষেত্রেই । এই সর্বনাশা বাজারী অর্থনীতির প্রয়োগের ক্ষেত্রে দিল্লি থেকে নবান্ন উভয়েই
ব্যাকুল । পঃ বঙ্গে গোদের উপরে বিষফোঁড়া তৃণমূলের তোলা ও সিন্ডিকেট রাজ । যে রাজ্যে
একটা লেদ মেশিন বসাতেও তোলা দিতে হয় , সেখানে কে শিল্পে বিনিয়োগ করতে আসবে ? যে উইপ্রো-ইনফোসিস
এর নামে বাজার মাত করার চেষ্টা করার চেষ্টা করছে , সেই উইপ্রো-ইনফোসিস তো আসছে রিয়াল
এস্টেটে বিনিয়োগ করতে , আই.টি তে বিনিয়োগ অথবা কর্মসংস্হানের জন্য নয় । মানব মুখার্জী
ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের আসন্ন পশ্চিম
বর্ধমান জেলা ২১ তম সম্মেলন কে কর্মসংস্হানের জন্য বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য
উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান । সেমিনারের সূচনায় সঞ্চালক প্রখ্যাত সাংবাদিক ত্রিদিব
ভট্টাচার্য ফোর্বস পত্রিকার থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে ২০১৫-১৬ আর্থিক
বছরে সারা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বিকাশের হার কমেছে ভারতে । তাই সকলের জন্য কাজের দাবীতে
ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের লড়াই এর ভিত্তি আরও প্রসারিত হওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি
হয়েছে । সেমিনারের সূচনায় বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি সন্তোষ
দেবরায় ও সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকার । উপস্হিত ছিলেন গৌরাঙ্গ চ্যাট্যার্জী , পার্থ মুখার্জী
, মহাব্রত কুন্ডু , বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী , পরেশ মন্ডল, সিদ্ধার্থ বসু , শুভাশীষ মাইতি
সহ প্রাক্তন ও বর্তমান যুব নেতৃবৃন্দ ।
এদিকে ভারতের গনতান্ত্রিক
যুব ফেডারেশনের আসন্ন পশ্চিম বর্ধমান জেলা ২১ তম সম্মেলন উপলক্ষ্য দুর্গাপুর জুড়ে প্রস্তুতি
তুঙ্গে । সম্মেলনের জন্য যুব সদস্যদের প্রত্যেকে অর্থদান করছেন । অর্থ সাহায্য করতে
এগিয়ে এসেছেন শ্রমিকরা ও সাধারন মানুষ । সম্মেলনের
প্রকাশ্য সমাবেশে আগামী ১০ই নভেঃ সগরভাঙ্গায় বক্তব্য রাখবেন ভারতের গনতান্ত্রিক যুব
ফেডারেশনের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সম্পাদক ও সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য মহঃ সেলিম
। সম্মেলনের বার্তা পৌঁছে দিতে আগামীকাল ইস্পাতনগরীর চিত্তব্রত মজুমদার ভবনে আরেকটি
সেমিনার হবে । মন কি বাত : ডিমনেটাইজেশন থেকে জিএসটি শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য রাখবেন
রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাসগুপ্ত ।
No comments:
Post a Comment