Thursday 2 November 2017

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কে জনগনের মন কি বাত শুনতে হবে : ডঃ অসীম দাসগুপ্ত




দুর্গাপুর,২রা নভেঃ : আজ দুর্গাপুর ইস্পাতনগরীর চিত্তব্রত মজুমদার সভাগৃহে         ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের আসন্ন পশ্চিম বর্ধমান জেলা ২১ তম সম্মেলন ( দুর্গাপুরের সগরভাঙ্গায় ১০-১১ই নভেঃ ) উপলক্ষ্যে আয়োজিত ‘ মন কি বাত : ডিমনেটাইজেশন থেকে জিএসটি ‘ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ও প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ডঃ অসীম দাসগুপ্ত একথা বলেন ।
তিনি বলেন যে প্রায় ফ্যাশিষ্ট সুলভ বাগাড়ম্বর করে  প্রধানমন্ত্রী তথাকথিত বি-মুদ্রাকরন বা ডিমনেটাইজেশন এই বলে শুরু করেছিলেন যে এর ফলে সরকার কালো টাকা উদ্ধার করবেন । এখনও পর্যন্ত ৯৯.৯৮% টাকা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে ফেরৎ এলেও কালো টাকার উদ্ধার হয়েছে অতি সামান্যই । সাধারন মানুষ প্রধানমন্ত্রী ঘোষনা কে বিশ্বাস করেছিলেন । কিন্তু এই বিশ্বাসের মূল্য চোকাতে হয়েছে সাধারন মানুষ কে । ১০০ জনের বেশী খেটে খাওয়া মানুষ প্রান হারিয়েছেন । কৃষি ও বিশেষ করে ছোট শিল্প বিপর্যস্ত হয়ে পরে । অথচ কালো টাকা উদ্ধারের জন্য কার্যকরী বিকল্প পথ থাকা সত্বেও প্রধানমন্ত্রী সে পথে জাননি । প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুইস ব্যাঙ্কে কালো টাকা আছে এমন ৮০০ জনের নামের তালিকা আছে । অথচ তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্হা নিচ্ছেন না । মরিশাস-রুট ধরে যে কালো টাকা আসছে প্রধানমন্ত্রী তাকে বিদেশি বিনিয়োগ বলে মহিমান্বিত করেন । কিন্তু কালো টাকা উদ্ধার দুরস্ত । প্রধানমন্ত্রী , আপনার মন কি বাত জনগন অনেক শুনেছেন , কিন্তু এবার আপনা কে জনতার মন কি বাত শুনতে হবে । ডঃ অসীম দাসগুপ্ত পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন যে সাম্প্রতিক হিসাব অনুসারে ( ২০১০ সাল ) দেশের জাতীয় আয়ের ২৫% কালো টাকা । অর্থমূল্যে প্রায় ৩৫ লক্ষ কোটি টাকা , যা উদ্ধার করা গেলে দেশের কর্মসংস্হান সহ অন্যান্য কল্যানকামী কাজে অসাধারন উন্নতি ঘটানো যাবে । এর রেশ ধরেই ডঃ দাসগুপ্ত বলেন যে জিএসটি লাগু করার ক্ষেত্রে ও একই রকম ভাবে তালগোল পাকানো নীতি নেওয়ার জন্য উন্নত, যুক্তিনির্ভর ও সরলীকৃত কর-ব্যবস্হার বদলে একটি জটিল এবং ক্ষতিকারক কর ব্যবস্হা চালু হয়েছে । তিনি বলেন যে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের দ্বারা নির্বাচিত হয়ে ২০০০-২০১০ পর্যন্ত এমপাওয়ারড কমিটির সভাপতি  হিসাবে তিনি কাজ করেছিলেন । সেই কমিটি দেশে উন্নত, যুক্তিনির্ভর ও সরলীকৃত কর-ব্যবস্হা চালু করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ভ্যাট কর-ব্যবস্হা চালুর সুপারিশ করেছিল এবং ২০০৫ সাল থেকে এই ব্যবস্হা চালু হলে ২২% হারে বার্ষিক রাজস্ব বৃদ্ধি ঘটে এবং জনগনের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের একটা বড় অংশই করের ছাড় পায় । করাদাতাদের প্রশিক্ষিত করা হয়েছিল । ভ্যাট কর-ব্যবস্হা কে উন্নত করার জন্য জিএসটি কর-ব্যবস্হা চালু করার জন্য তার নেতৃত্বে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের পর্যন্ত এমপাওয়ারড কমিটির সুপারিশ তৎকালীন ইউপিএ সরকার মেনে নিলেও তৎকালীন গুজরাটের মোদি সরকার ও অন্যান্য বিজেপি শাসিত রাজ্য সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থে তা লাগু হতে দেন নি । তিনি এই বিষয়টি বিজেপি নেতাদের বোঝানো চেষ্টা করেছিলেন র মধ্যে বর্তমান অর্থমন্ত্রী অরুন জেটলি ছিলেন । তিনি বলেন যে জেটলি বর্তমানের ত্রুটিপূর্ণ জিএসটি কর-ব্যবস্হা চালু করতে গিয়ে ঐ ঘটনার বিকৃত ব্যাখ্যার অবতারন করেছেন । ডঃ দাসগুপ্ত বলেন যে অবিলম্বে ত্রুটিপূর্ণ জিএসটি কর-ব্যবস্হার সংশোধন করে এমপাওয়ারড কমিটির সুপারিশ অনুসারে জিএসটি চালু করলে জনগনের উপরে অযথা করের বোঝা লাঘব হবে ,প্রভূত রাজস্ব আদায় ঘটবে,রাজ্য গুলি করের নায্য ভাগ পাবে এবং জীবনদায়ী ওষুধ প্রভৃতির ক্ষেত্রে কর বসবে না । অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক ভোলানাথ ঘোরুই । সেমিনারের সূচনায় বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি সন্তোষ দেবরায় ও সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকার । উপস্হিত ছিলেন গৌরাঙ্গ চ্যাট্যার্জী ,রথীন রায়,অজিত মুখার্জি,বিনয়েন্দ্রকিশোর  চক্রবর্তী ,নির্মল ভট্টাচার্য,সুবীর সেনগুপ্ত,সলিল দাসগুপ্ত,বিশ্বরূপ ব্যানার্জী, সিদ্ধার্থ বসু , শুভাশীষ মাইতি সহ প্রাক্তন ও বর্তমান যুব নেতৃবৃন্দ এবং শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ।
এদিকে ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের আসন্ন পশ্চিম বর্ধমান জেলা ২১ তম সম্মেলন উপলক্ষ্য দুর্গাপুর জুড়ে প্রস্তুতি তুঙ্গে । সম্মেলনের জন্য যুব সদস্যদের প্রত্যেকে অর্থদান করছেন । অর্থ সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন শ্রমিকরা ও সাধারন মানুষ । সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশে আগামী ১০ই নভেঃ সগরভাঙ্গায় বক্তব্য রাখবেন ভারতের গনতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সম্পাদক ও সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য মহঃ সেলিম ।























No comments:

Post a Comment