দুর্গাপুর,২০শে নভেঃ
– আজ ভোর রাতে ( আনুমানিক রাত্রি ১-৩০ মিঃ থেকে ২-০০ মিঃ এর মধ্য ) দুর্গাপুর ইস্পাত
কারখানার কোক ওভেনে ( ৩নং ব্যাট্যারীর পিছনে
) ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মারা গেছেন দুই জন ঠিকা শ্রমিক । গ্যাস পরিবহনের পাইপলাইনের ‘ওয়াটার-সিল’
কাজ না করায় বিষাক্ত ব্লাষ্ট ফার্ণেস গ্যাস লিকেজের জন্য এই দুর্ঘটনা ঘটে । মৃত ২ জন
ঠিকা শ্রমিকের নাম যথাক্রমে সেখ হাফিজুল (
বাড়ী – আরতি গ্রাম ) ও সমীর চক্রবর্তী (
বাড়ী – জামগড়া ) । আহত আরও ৪ শ্রমিক – প্রবীর বোস , সেখ ফরিউদ্দীন , উত্তম কর্মকার
ও সরোজ রায় কে স্হানীয় মিশন হাসপাতালে ভর্তি
করা হয়েছে । আপাতত তাদের অবস্হা স্হিতিশীল বলে জানা গেছে । এক জন কে প্রাথমিক চিকিৎসার
পরে ছেড়ে দেওয়া হয় ।এই মাসেই অন্য আরেক টি দুর্ঘটনায় আরেক জন কর্মরত ঠিকা শ্রমিকের
মৃত্যু হয় ।
আজ সকালে দুর্ঘটনার
খবর ছড়িয়ে পরতেই শ্রমিকদের মধ্যে প্রবল বিক্ষোভ তৈরি হয় । হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ
ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ ) এর ডাকে দলে দলে শ্রমিক কোক ওভেনের জি.এম. অফিসের সামনে বিক্ষোভ
প্রদর্শন করেন । পরে সুব্রত ঘোষের নেতৃত্বে ইউনিয়নের এক প্রতিনিধিদল কোক ওভেনের জি.এম.
এর সাথে দেখা করে অবিলম্বে মৃত শ্রমিকদের পরিবার পিছু একজন পোষ্যের ডিএসপি-তে স্হায়ী চাকুরী , সেফটি কমিটি সহ সুরক্ষা
সংক্রান্ত সমস্ত স্ট্যাটুটারী কমিটিকে অবিলম্বে সক্রিয় করা ও দুর্ঘটনার সামগ্রিক তদন্ত
উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কে দিয়ে করানোর দাবী জানানো হয় । এই দাবীতে আগামী পরশু দিন ইউনিয়নের
পক্ষ থেকে ই.ডি.ওয়ার্কস এর দফ্তরে প্রতিবাদ সভার ডাক দেওয়া হয়েছে ।
ইউনিয়নের সহ-সভাপতি
প্রদ্যুৎ মুখার্জী জানিয়েছেন যে ডিএসপি তে ঘটে যাওয়া একের পর এক দুর্ঘটনা ও তৎজনিত
কারনে মৃত্যুর ঘটনা বন্ধের জন্য প্রতিবিধান চেয়ে আগামী ২২-২৩ শে নভেঃ ভাইজাগে অনুষ্ঠিত
জয়েন্ট কমিটি অফ সেফটি,হেলথ এ্যান্ড এনভায়রোনমেন্ট ইন স্টিল ইন্ড্রাস্টির( জে.সি.এস.এস.আই.)
সভায় তিনি ইউনিয়নের পক্ষ থেকে দাবী জানাবেন । তিনি অভিযোগ করেছেন যে কর্তৃপক্ষের থেকে
দক্ষ ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিস্টদের স্হায়ী করার বদলে বসিয়ে দিয়ে অদক্ষ ঠিকা শ্রমিকদের নিযুক্ত
করার প্রবনতা থাকায় সেফটির বিষয়ে অবহেলা ও দুর্ঘটনা বাড়ছে ।
ইউনিয়নের যুগ্ম-সম্পাদক
স্বপন মজুমদার অভিযোগ করেন যে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার কর্তৃপক্ষের স্বৈরাচারী ও
একগুঁয়েমি মনোভাবের ফলে সেফটি কমিটি সহ সুরক্ষা সংক্রান্ত সমস্ত স্ট্যাটুটারী কমিটি
নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়ায় কারখানার মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে । ফলে ‘ব্লাডলেস’ ইস্পাত
উৎপাদন লক্ষভ্রষ্ট হচ্ছে । ইউনিয়নের সহকারী কোষাধ্যক্ষ সন্দীপ দুবে বলেন যে সি.আই.টি.ইউ
এর আন্দোলনের ফলে কর্তৃপক্ষ গ্যাস-মিটার এর ব্যবস্হা করলেও , তার সংখ্যা যথেষ্ঠ না
থাকায় গতকালের দুর্ঘটনা এড়ানো যায় নি ।
এই ঘটনায় এলাকার বিধায়ক
সন্তোষ দেবরায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দুর্গাপুর
ইস্পাত কারখানার কর্তৃপক্ষ কে অবিলম্বে দুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য
ইউনিয়ন সমূহের সাথে যৌথ আলোচনায় বসা , অবিলম্বে মৃত শ্রমিকদের পরিবার পিছু একজন পোষ্যের
অবিলম্বে ডিএসপি-তে স্হায়ী চাকুরী ও দুর্ঘটনার সামগ্রিক তদন্ত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কে
দিয়ে করানোর আবেদন জানিয়েছেন । তিনি মৃত ঠিকা শ্রমিক সেখ হাফিজুল ও সমীর চক্রবর্তীর
পরিবারবর্গের প্রতি গভীর মর্মবেদনা জানিয়ে সর্বোতভাবে তাদের পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন
ও আহত শ্রমিকদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন ।
No comments:
Post a Comment