Friday 24 November 2017

দুর্গাপুর ব্যারেজের ১নং লকগেট ভেঙ্গে চূড়ান্ত বিপত্তি : বন্যার আশংকা নিম্ন দামোদর অববাহিকা অঞ্চলে, গভীর সংকটে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল ।



দুর্গাপুর,২৪শে নভেঃ : আজ ভোর রাতে ( আনুমানিক ভোর ৫-০০ ) দুর্গাপুর ব্যারেজের ১নং লকগেট ভেঙ্গে চূড়ান্ত বিপত্তি ঘটে । ব্যারেজের জলাধার ভেঙ্গে প্রবল বেগে জল বেরোতে শুরু করেছে । এর ফলে দামোদর নিম্ন অববাহিকা অঞ্চলের বর্ধমান,বাঁকুড়া,হুগলী ও হাওড়া জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বন্যার আশংকা তৈরি হয়েছে । মাঠের ধান মাঠেই নষ্ট হতে পারে । অন্যদিকে জল বেড়িয়ে যাওয়ার ফলে ব্যারেজের জল ও সংলগ্ন জলাধার গুলিতে জল কমে যাওয়ার ফলে গভীর সংকটে পড়তে চলেছে গোটা দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল ।
খবর পেয়ে ঘটনাস্হলে দ্রুত পৌঁছান  পশ্চিম বর্ধমান জেলার সভাপতি সি.আই.টি.ইউ  বিনয়েন্দ্র কিশোর চক্রবর্তী , হিন্দুসহান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ ) এর নেতৃবৃন্দ বিশ্বরূপ ব্যানার্জী , মৃত্যুঞ্জয় ঝা , সীমন্ত চ্যাটার্জী ও বাবুরাম শর্মা এবং দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর সি.পি.আই.(এম ) বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় ।
বিধায়ক অসুস্হ শরীরে ঘটনাস্হলে পৌঁছে বিধান সভার মারফৎ রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার দ্রুত ব্যবস্হা গ্রহনের আর্জি জানান । তিনি জানিয়েছেন যে দুর্গাপুর রক্ষা করতে হলে বিভেদ ভুলে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ কে দ্রুত হাতে হাতে মিলিয়ে কাজ করতে হবে । একই সাথে তিনি বলেন যে ‘ দুর্গাপুর রক্ষা কর’ আন্দোলনের অন্যতম দাবী হল দুর্গাপুর ব্যারেজের নিয়মিত রক্ষনাবেক্ষন ও ড্রেজিং । তিনি অভিযোগ করেছেন যে দুর্গাপুর ব্যারেজের আজকের এই পরিনতির জন্য দায়ী রাজ্য সরকার ও ডিভিসি কর্তৃপক্ষের  লাগাতার গাফিলতি । বারংবার জানানো হলেও কেউই কোন কার্যকরী ব্যবস্হা নেয় নি ।
 হিন্দুসহান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ ) এর ওবি-কনভেনর ( ডিএসপি শাখার ) ও সি.আই.টি.ইউ এর রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য বিশ্বরূপ ব্যানার্জী জানিয়েছেন যে দ্রুত ব্যবস্হা না নেওয়া হলে পরিস্হিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে । জল বেড়িয়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট জলাধার ও চ্যানেল গুলিতে জল কমে জলের অভাবে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা সহ ছোট-বড় ৩৩ টি কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে । অন্যদিকে ইস্পাতনগরী সহ বৃহত্তর দুর্গাপুর অঞ্চলে পানীয় জল সরবরাহের উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে চলেছে বলে আশংকা প্রকাশ করে তিনি জানিয়েছেন যে ইতিমধ্যে ইস্পাত কর্তপক্ষ ইতিমধ্যে ইস্পাতনগরীতে পানীয় জল সরবরাহের উপর নিয়ন্ত্রন জারী করেছে । তিনি আরও জানিয়েছেন পরিস্হিতির গুরুত্ব বুঝে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার কর্তৃপক্ষ সব রকমের প্রযুক্তিগত সহায়তার জন্য তৈরি রয়েছে । কারখানার উ্চপদস্হ আধিকারিকরাও ঘঠনাস্হলে উপস্হিত রয়েছে । ডিভিসির আধিকারিকরাও পৌঁছে লকগেটের মেরামতির চেষ্টা করছে । কিন্তু রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের দেখা পাওয়া যায় নি । দেখা পাওয়া যায় নি রাজ্য সরকারের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের ।
পশ্চিম বর্ধমান জেলার সভাপতি সি.আই.টি.ইউ  বিনয়েন্দ্র কিশোর চক্রবর্তী রাজ্য সরকারে বিরুদ্ধে ‘নির্লিপ্ত’ থাকার অভিযোগ তুলেছেন । তিনি বলেছেন যে ডিভিসি পূর্বেই রাজ্যের হাতে দুর্গাপুর ব্যারেজ ও ইরিগেশনের দায়িত্ব তুলে দিয়েছে কিন্তু রাজ্য সরকার তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ায় এই দূর্যোগ তৈরি হয়েছে । ফলে গোটা আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল ভয়াবহ সংকটের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে । ঘটনার ৮ ঘন্টা পড়েও  রাজ্য সরকারের আধিকারিকরদের ঘটনাস্হলে দেখা যায় নি । তিনি ক্ষোভের সাথে প্রশ্ন তোলেন – কোথায় গেলেন রাজ্যের মন্ত্রীরা ? কোথায় গেলেন আসানসোল ও দুর্গাপুরের মেয়র ?








No comments:

Post a Comment