Monday 19 March 2018

ওহি নক্সা কদম পর চলনা হ্যায় – মহঃ আমিনের স্মরণসভায় নেতৃবৃন্দের আহ্বান ।






দুর্গাপুর , ১৯শে মার্চ : আজ ইস্পাতনগরীর বি.টি.রণদিভে ভবনে সি.আই.টি.ইউ এর পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটির আহ্বানে আয়োজিত প্রয়াত মহঃ আমিনের স্মরণসভায় এই আহ্বান জানালেন সি.আই.টি.ইউ এর রাজ্য সম্পাদক অনাদি কুমার সাহু। তিনি বলেন যে ভারত তথা ভারতীয় উপমহাদেশে স্বাধীনতার আগে ও পরে ৭০ বছরের বেশী সময় ধরে শ্রমিক আন্দোলন ও শ্রমিক শ্রেনীর সংগ্রামের নেতৃত্ব প্রবাদপ্রতিম নেতা মহঃ আমিনের জীবনাবসানে যে শূণ্যতা তৈরি হয়েছে তা পূরনের লক্ষ্যে তাঁরই প্রদর্শিত পথ ধরে সহজ-সরল-অনাড়ম্বর জীবন যাপন , মার্কসবাদ-লেনিনবাদের গভীর অধ্যায়ন-আত্মস্হিকরন-প্রয়োগ ও কোন অবস্হাতে সাম্রাজ্যবাদ-পুঁজিবাদ-সাম্প্রদায়িকতার কাছে আত্মসমর্পন নয় এই শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে । বাবার হাত ধরে উত্তর প্রদেশ থেকে মাত্র ১৪ বৎসর বয়েসে বরানগর জুট মিলে কাজে যোগ দেন । প্রথাগত শিক্ষা না পেলেও নিজের অদম্য চেষ্টায় উর্দুর সাথে অনায়েস বিচরন ছিল হিন্দি,ইংরাজি ও বাংলায় । উর্দু ভাষায় বিশিষ্ট শায়ের ও বয়েৎ রচনাকার মহঃ আমিন কে উর্দু সাহিত্যে বিশেষ স্হান দিয়েছে । এহেন মহঃ আমিন শ্রমিক আন্দোলনের নেতৃত্ব থেকে শ্রমিকশ্রেনীর পার্টি কমিউনিষ্ট পার্টির নেতৃত্বে উঠে আসেন । দেশভাগের পর পার্টির নির্দেশে মাত্র ২৪ বছর বয়েসে তৎকালিন পূর্ব পাকিস্হান অধুনা বাংলাদেশে কমিউনিষ্ট পার্টি গড়ার কাজে যান । কিন্তু সেখানের শাসকের রোষে জেলে যেতে হয় ,প্রান সংশয় হয় । এই অবস্হায় পার্টির নির্দেশে দেশে ফেরেন এবং পার্টি ও ট্রেড ইউনিয়নের কাজে আত্মনিয়োগ করেন । ১৯৬৪ সালে পার্টি ভাগের সময়ের থেকে সিপিআইএমে এর এবং ১৯৭০ সালে সিআইটিইউ গঠনের সময় থেকে নেতৃত্ব দানের ভূমিকা পালন করেন । পরবর্তি সময়ে সিপিআইএমে এর পলিটব্যুরো সদস্য ও সিআইটিইউ এর সর্বভারতীয় সম্পাদক হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন । যুক্তফ্রন্ট ও বামফ্রন্টের তিন দফায় মন্ত্রি ও রাজ্য সভার সদস্য হয়েছিলেন । প্রত্যেক ক্ষেত্রে তিনি কৃতিত্বের সাক্ষর রেখেছেন । কিন্তু কোন ক্ষেত্রেই সাধারন খেটে খাওয়া মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হন নি । জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ছিলেন সেই জুট মিলের শ্রমিক আদি অকৃত্রিম মহঃ আমিন । জুট ও পরিবহন শ্রমিক সংগঠন এবং বস্তিবাসি সংগঠনের নেতৃত্ব দেওয়ার সময়ে মানুষ কে কিভাবে সংগঠিত করে টেনে নিয়ে আসতে হয় ,কি ভাবে ভিন্ন মতাবলম্বী মানুষের সাথে মিলে সংগ্রামী জোট গঠন করতে হয় তা অনবদ্য ভঙ্গিমায় হাতে কলমে প্রয়োগ করেছেন মহঃ আমিন । তাই আজকে সারা দেশের প্রধান বিপদ হিসেবে উঠে আসা সাম্প্রদায়িক বিজেপি কে পরাস্ত করার যে ঐতিহাসিক কর্তব্য বামপন্হিদের সামনে এসেছে , মহঃ আমিনের জীবন ও সংগ্রাম সেই সংগ্রামের পাথেয় হবে ।
বিপিএমও-র রাজ্য আহ্বায়ক শ্যামল চক্রবর্তী বলেন যে পার্টি ও ট্রেড ইউনিয়নের পরিচালনা ও মতাদর্শগত সংগ্রামের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ন বাঁকে মহঃ আমিনের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব আজকের দিনের সংগ্রাম পরিচালনায় অত্যন্ত মূল্যবান উপাদান হিসাবে কাজ করে যাবে । এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সি.আই.টি.ইউ এর পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটির সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরী ও বিশ্বরূপ ব্যানার্জী । সভাপতিত্ব করেন সি.আই.টি.ইউ এর পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটির সভাপতি বিনয়েন্দ্র কিশোর চক্রবর্তী ।

সভার শুরুতে প্রয়াত নেতার প্রতিকৃতিতে মাল্যদান ও নিরবতা পালন করা হয়শোক প্রস্তাব পাঠ করেন বিনয়েন্দ্র কিশোর চক্রবর্তী ।


উপস্হিত ছিলেন রথিন রায় , সন্তোষ দেবরায় , পি.কে.দাস , বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী,নির্মল ভট্টাচার্য,সুবীর সেনগুপ্ত সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ।





















No comments:

Post a Comment