দুর্গাপুর,২৯শে মার্চ
: দুর্গাপুর মানেই চোখের সামনে ভেসে কল-কারখানা চিমনির ধোঁয়া , মজুরের জীবন-সংগ্রাম
। দুর্গাপুর মানে শ্রমিকের লড়াই , স্বাধীন ভারতে শ্রমিকদের প্রথম ব্যারিকেড-লড়াই,দুর্গাপুর
প্রথম শহিদদ্বয় আশিষ ও জব্বারের রক্তে ভেজা আরও ৩৩ শহিদের বীরভূমি যেখানে আধুনিক প্রযুক্তির
কারখানায় উৎপাদনে একই সাথে ঘাম ঝরায় কোন আশিষ অথবা জব্বার , লড়াই এর ময়দানে হাত ধরে
এগোয় , ঘাতকের উদ্যত বন্দুকের সামনে জোর গলায় হেঁকে বলে- দুনিয়ার মজদুর এক হও । কিন্তু
এর মধ্যেই সারা দেশ,গোটা রাজ্যের সাথে দুর্গাপুরেও ধর্মান্ধ হায়নাদের আনাগোনা শুরু
হয়ে গেছে । শুরু হয়েছে শ্রমজীবি মানুষের ঐক্য ভাঙ্গার জন্য বিভেদের জাল বোনার কাজ ।
তৃণমূল ও আর.এস-বিজেপি-র প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতার আসল লক্ষ্য যে মেহেনতি মানুষের জীবন-জীবিকা হরণ
করা,গনতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া ও লাল ঝাণ্ডা কে মুছে দেওয়ার কৌশল এ কথা মানুষ ক্রমশই
বুঝতে পারছেন । শাসক তৃণমূলের সৌজন্যে সংঘ যে প্রভাব বাড়াচ্ছে , এ কথা পরিষ্কার হচ্ছে
। জেলার বিভিন্ন অঞ্চল সাম্প্রদায়িকতার আগুনে পুড়ছে ।দুর্গাপুরে সেই আগুন ছড়াতে যাতে
না পারে সেই জন্য ইস্পাত শ্রমিক সহ ছাত্র-যুব-মহিলা-সাংস্কৃতিক কর্মিরা আগেই পথে নেমেছেন
।ধারাবাহিক প্রচার চলছে ।
আজ দুর্গাপুর ইস্পাত
১ এরিয়া কমিটির অন্তর্গত সি.আই.টি.ইউ ভুক্ত বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন গুলির পক্ষ থেকে দুর্গাপুর
ইস্পাত কারখানার মেইন গেটে ঢোকার মুখে জি.টি.রোডের ওপরে ফ্লাইওভারে জেনারেল শিফট এ
ঢোকার সময়ে সকাল ৮-০০ থেকে ৮-৩০ পর্যন্ত ইস্পাত শ্রমিকরা মানব-বন্ধন করেন । মানব-বন্ধন
থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শ্রমিক ঐক্য আরও জোরদার করার আহ্বান জানানো হয় এবং সমস্ত
ধরনের সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদি শক্তি কে হুঁশিয়ারি জানানো হয় । মানব-বন্ধনের শেষে ভারতীয়
গণনাট্য সংঘের দুর্গাপুর ইস্পাত শাখার পক্ষ থেকে ‘ হে মানব সন্তান ‘ ও হিন্দুস্হান
স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( সি.আই.টি.ইউ ) এর সাংস্কৃতিক শাখার পক্ষ থেকে ‘রং নাম্বার
‘ এই দুটি পথ নাটিকা সহ গান পরিবেশিত হয় । মানব-বন্ধন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কে কেন্দ্র করে মেইন গেটে সংলগ্ন স্হানিয় বাসিন্দাদের
মধ্যে ভালো সাড়া পড়ে ।
উপস্হিত ছিলেন এলাকার সি.পি.আই.(
এম ) বিধায়ক সন্তোষ দেবরায়, ( দুর্গাপুর পূর্ব ),শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বিশ্বরূপ ব্যানার্জী,নিমাই
ঘোষ,দিপক ঘোষ প্রমূখ ।
No comments:
Post a Comment