Thursday 31 October 2013

প্রয়াত কমরেড ফণীভূষন ভট্টাচার্যের স্মরণ সভা ।

দুর্গাপুর , ৩১শে অক্টোঃ : আজ সন্ধ্যায় , ইস্পাতনগরীর বি'জোনের দেশবন্ধুভবনে , ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টি ( মার্কসবাদী )-র দুর্গাপুর ১এ জোনালের অন্তর্ভূক্ত  ডিএস-২ লোক্যাল কমিটির উদ্যোগে  প্রয়াত  কমরেড ফণীভূষণ ভট্টাচার্যের স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয় । গত ২১শে অক্টোঃ , ২০১৩ , দুর্গাপুর ইস্পাত মেইন্ হাসপাতালে  সকাল  ৫-৪০ মিনিটে কমরেড ফণীভূষণ ভট্টাচার্যের জীবনাবসান হয় । তিনি ক্যান্সার রোগে ভুগছিলেন । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ ।

   অধুনা বাংলাদেশের বরিসালে কমরেড ফণীভূষন ভট্টাচার্য্যর জন্ম হয়েছিল ।ফণী ভট্টাচার্য নামেই তিনি সমাধিক পরিচিত ছিলেন  । দেশভাগের পর বর্ধমানের দাঁইহাটে তাঁর বাল্যকাল কাটে এবং স্কুলের পড়া শেষ করে নৈহাটির রামমোহন কলেজে থেকে বি.এ. ও বি.কম পাশ করেন ও শিক্ষকতার সাথে যুক্ত হয়েছিলেন । এই সময়ে শিক্ষক আন্দোলনের সাথে  এবং কমঃ জগদীশ দাসের সংশ্পর্ষে অবিভক্ত কমিউনিষ্ট পার্টীর সাথে যুক্ত  হয়ে ১৯৫৭ সালে পার্টীর সভ্যপদ লাভ করেন ।পরে ১৯৬৪ সালে সংশোধনবাদীদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে সিপিআইএমে-র জন্মলগ্নেই পার্টির সাথে যুক্ত হয়েছিলেন । ১৯৬১ সালে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় অফিস কর্মী হিসেবে যোগদান করেন ও ১৯৯৫ চাকরী থেকে অবসরগ্রহন করেন । দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় যোগদানের অব্যবহিত পরেই তিনি  হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নের সভ্যপদ গ্রহন করেন । ৬০'-৭০'র দশকে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় শ্রমিক-কর্মচারীদের সংগঠিত করা ও হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নকে সুসংগঠিত করতে  কমরেড ফণী ভট্টাচার্য্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন । তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতার জন্য তিনি ইউনিয়নের পর্ষদ ও কার্যকরী কমিটির সদস্য এবং পরবর্তীকালে ইউনিয়নের সহ-সম্পাদক ও অফিস-সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন  ।তিনি ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টী ( মার্কসবাদী )-র দুর্গাপুর ইস্পাত-২ লোক্যাল কমিটির সদস্য এবং পরে মৃত্যুকাল পর্যন্ত শাখা-সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন । ৭২'এর সন্ত্রাসের কালো দিন গুলিতে , কমঃ  ফণী ভট্টাচার্য্যকে কং-গুন্ডাদের হাতে শারীরিকভাবে নির্যাতিত হতে হয় এবং ৭ মাস জেলে বন্দী থাকতে হয় । কমিউনিষ্ট সুলভ ব্যক্তিগত জীবন শৈলী অনুসরণ , মতাদর্শের প্রশ্নে আপোষহীন যোদ্ধা  এবং পার্টী - ট্রেড ইউনিয়ন - অন্যান্য গণসংগঠনে  পরিচালনায় সুশৃংখলভাবে ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনে  আগুসারি ভূমিকা  পালন করেছেন দুর্গাপুরের অন্যতম প্রবীন  পার্টী-সদস্য কমরেড ফণী ভট্টাচার্য্য ।  মৃত্যুকালে তাঁর স্ত্রী , প্রাক্তন বিধায়িকা ও মহিলা  আন্দোলনের নেত্রী কমঃ অর্চনা ভট্টাচার্য্য ও তিন কন্যা বর্তমান । কমরেড ফণী ভট্টাচার্যের পরিবারের সবাই পার্টি জীবনের সাথে একাত্ম হয়ে আছেন ।

  প্রয়াত কমরেড  ফণীভূষন ভট্টাচার্য্যর প্রতিকৃতিতে মাল্যদানের মধ্য দিয়ে স্মরণসভার কাজ শুরু হয় । বিভিন্ন  ট্রেড-ইউনিয়ন  এবং  গণ-সংগঠনের পক্ষ থেকেও মাল্যদান  করা  হয় ।  ভীড়-উপচে পড়া ভবনে  বক্তাদের ভাষনে উঠে আসে কিভাবে চরম প্রতিকূল পরিস্হিতির মধ্যে মতাদর্শের প্রতি অবিচল আস্হা রেখে  কমিউনিষ্টদের কাজ করতে হয় , তা কমরেড ফণী ভট্টাচার্য জনগনের মধ্যে কাজ করে এবং ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টি ( মার্কসবাদী )-র  প্রসার  ঘটিয়ে , করে দেখিয়েছেন । তাই আজকের প্রতিকূল পরিস্হিতিতে , প্রয়াত কমরেড  ফণীভূষন ভট্টাচার্য্যের মত লক্ষ্যে অবিচল থাকার আহ্বান জানানো হয় । সভায় বক্তব্য রাখেন কমঃ সন্তোষ দেব রায় , অজিত মুখার্জী ও রথীন রায় ।সভাপতিত্ব করেন  কমঃ   বাদল মজুমদার। স্মরণসভায় উপস্হিত ছিলেন প্রয়াত কমরেড  ফণীভূষন ভট্টাচার্য্যর স্ত্রী , প্রাক্তন বিধায়িকা ও মহিলা  আন্দোলনের নেত্রী কমঃ অর্চনা ভট্টাচার্য্য ও আত্মীয়-পরিজনেরা । 
                স্মরণসভায় ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টি ( মার্কসবাদী )-র দুর্গাপুর ১এ জোনাল কমিটি ও   ডিএস-২ লোক্যাল কমিটির পক্ষ থেকে প্রয়াত কমরেড  ফণীভূষন ভট্টাচার্য্যর মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করে প্রয়াত কমরেড  ফণীভূষন ভট্টাচার্য্যর স্ত্রী - কন্যা - আত্মীয়-পরিজনদের প্রতি সমবেদনা জানানো হয় ।
     

                                           





























No comments:

Post a Comment