Monday 20 March 2017

অ্যালয় স্টীল প্ল্যান্ট বাঁচাতে ধর্মঘটের পথে ইস্পাত শ্রমিকরা ।



দুর্গাপুর , ২০শে মার্চ – অবিলম্বে  মোদি সরকারের অ্যালয় স্টীল প্ল্যান্ট বিক্রির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবী  জানিয়ে , অ্যালয় স্টীল প্ল্যান্টের শ্রমিক ইউনিয়ন সমূহের যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে আজ কারখানার কর্তৃপক্ষের কাছে ধর্মঘটের নোটিশ জমা দেওয়া হয় ।উল্লেখ্য, ইতিমধ্যে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার রাষ্ট্রায়ত্ব ইস্পাত উৎপাদক সংস্হা সেইলের অ্যালয় স্টীল প্ল্যান্ট , সালেম ও ভদ্রাবতী স্টিল প্ল্যান্ট বিক্রি করে দেওয়ার জন্য ব্যবস্হা নিয়েছে । এর বিরুদ্ধে সেইলের ইস্পাত শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলেছেন । সালেম ও ভদ্রাবতীর  ইস্পাত শ্রমিকরা ধর্মঘটের নোটিশ জমা দিয়েছেন । চেষ্টা হচ্ছে অ্যালয় স্টীল প্ল্যান্ট , সালেম ও ভদ্রাবতী স্টিল প্ল্যান্টে একই দিনে ধর্মঘট করার ।
এদিকে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট কে বাঁচাতে , সংবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলনের পাশে জোড়ালো সমর্থন নিয়ে দাঁড়িয়েছেন  দুর্গাপুর এবং বর্ধমান জেলার সাধারন খেটে খাওয়া মানুষ সহ সমাজের সব অংশের মানুষ । মোদির মনভোলানো স্লোগান – ‘সব কা সাথ সব কা বিকাশ ‘  এর আড়ালে আন্তর্জাতিক মানের বিশেষ ইস্পাত উৎপাদনকারী  অ্যালয় স্টীল প্ল্যান্টর “ বিনাশ “ এর চক্রান্ত, মানুষের রুটি-রুজি বন্ধের চক্রান্ত - তা দুর্গাপুরের মানুষ কে বলে দিতে হচ্ছে না । তাই আজ সকালে  ধর্মঘটের নোটিশ জমা দেওয়া কে কেন্দ্র করে , প্ল্যান্টের মেইন গেটে শ্রমিক সমাবেশের পাশে এসে দাঁড়ালো প্রাক্তন শ্রমিক-কর্মচারী সহ মেহেনতী মানুষ-যুব-মহিলা । এক বিশাল মিছিল কারখানার মেইন গেটে কে ঘিরে পরিক্রমা করে । মিছিল-সমবেশে অবরুদ্ধ হয়ে আটকে পড়েন কারখানার আধিকারিকরা ।
সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর বিধায়ক সন্তোষ দেব রায় তীব্র ভাষায় কেন্দ্রের মোদি সরকারে রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা  ‘বিনাশ’ এর নীতি কে আক্রমন করে বলেন যে মোদি সরকারে হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র গঠনের মূল লক্ষ্য হল মেহেনতী মানুষের রুটি-রুজির ‘বিনাশ- যার প্রত্যক্ষ প্রমান হল অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট কে বেঁচার চেষ্টা । ‘সেটে’-র প্রস্তাব অনুসারে  মাত্র ১১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করলে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট কে লাভজনক সংস্হায় পরিনত করা যায় । তা করার পরিবর্তে দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেওয়া হচ্ছে ।তাই  মোদি সরকারই বাধ্য করেছে  অ্যালয় স্টীল প্ল্যান্ট বাঁচাতে ইস্পাত শ্রমিকদের ধর্মঘটের পথে যেতে।  একই পরিনতির দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা কে । অন্যদিকে মোদি সরকার মালয়শিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার সাথে বাণিজ্য-চুক্তি করে দেশে ফেরো-ইস্পাত আমদানির যে রাস্তা খুলে দিয়েছে , তা দুর্গাপুরের সহ রাজ্যের  বেসরকারী ফেরো-ইস্পাত কারখানা গুলি কে  বন্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে , তিনি সাবধান করে দেন । প্রসংগত তিনি উল্ল্যেখ করেন যে দেশের ৩৫% ফেরো-ইস্পাত উৎপাদিত হয় এই রাজ্যে । অ্যালয় স্টীল প্ল্যান্ট বিক্রির সিদ্ধান্ত বাতিল ও আধুনিকীকরনের জন্য সেটের প্রস্তাব অনুসারে বিনিয়োগ, দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা কে ১০ মিলিয়ন টনের উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন কারখানা পরিনত  করার জন্য  বিনিয়োগ ও উচ্ছেদ হওয়া ৪০০০ ঠিকা শ্রমিকের কাজ ফেরৎ এর দাবী জানিয়ে , তিনি অ্যালয় স্টীল প্ল্যান্ট - রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা  - শিল্প বাঁচাও , রক্ষা কর দুর্গাপুর - আন্দোলন কে আরও ঐক্যবদ্ধ ও  প্রসারিত করার আহ্বান জানান ।
সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আই.এন.টি.ইউ.সি-র বর্ধমান জেলার সভাপতি বিকাশ ঘটক বলেন যে মোদি সরকারের সিদ্ধান্তই অ্যালয় স্টীল প্ল্যান্টের শ্রমিকদের ধর্মঘটের রাস্তায় ঠেলে দিয়েছে । এ ছাড়াও বক্তব্য রেখেছেন বিজয় সাহা ( এইচ.এস.ই.ইউ,সি.আই.টি.ইউ) ও সাধন সিনহা । 











No comments:

Post a Comment