দুর্গাপুর , ২১শে মার্চ – বিপন্ন
শিল্প-শহর দুর্গাপুর ,বিপন্ন রুটি-রুজি , বিপন্ন শহরের শিল্প-সংস্কৃতি , শ্রমের বলয়
ঘিরে গড়ে ওঠা শ্রমিক সংস্কৃতি । মড়ক এসেছে – এক অন্য মড়ক । শিল্পনগরীতে বন্ধ হয়েছে
একে একে ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ব কারখানা সহ ২০ টি বেসরকারী কারখানা । হাজার হাজার শ্রমিক
কাজ হারিয়েছেন , তাদের পরিবার নিয়ে চরম দুর্দশায় দিন কাটছে । বেকার যুবক-যুবতীরা কাজের
খোঁজে দুর্গাপুর ছাড়ছেন । এক গাল দাড়িও ছিল / ডিউটির জন্য ছিল প্যান্ট ,জামা/পায়ে সেফটি
বুট ,মাথায় টুপি,হাতে গ্লাবস … ( কবি কেষ্ট চট্টোপাধ্যায়,শ্রমশ্রী মুখের বলয় ) – এই
চেনা চিত্র ক্রমশঃ বিলীন হচ্ছে । নতুন করে মৃত্যু পরোয়ানা জারী হয়েছে অ্যালয় স্টিল
প্ল্যান্ট,দুর্গাপুর কেমিক্যালস , ফেরো-স্ক্র্যাপ নিগম,ডিপিএল এর কোক-ওভেনের মত রাষ্ট্রায়ত্ব
কারখানার । দিন গুনছে দুর্গাপুর ইস্পাত ,ডিটিপিএস । পলি পরে বুঁজে আসছে দুর্গাপুর ব্যারেজ
। একদা শাল-মহুয়ার জঙ্গলে ঘেরা যে কুমারী মাটির ঘুম ভেঙ্গেছিল কলের চাকার ঘরঘরানিতে
, সেখানে এক একে কারখানার দেউটি নিভেছে যা সুস্হ শিল্প-সংস্কৃতির ধাত্রী গৃহ দুর্গাপুরে
সংস্কৃতি-চর্চার ভিত্তিমূলে আঘাত করেছে । শিল্পনগরী রক্ষার জন্য দুর্গাপুরের শিল্পীরা
জোট বেঁধেছেন , তৈরী করেছেন ‘সাংস্কৃতিক সমন্বয়’ । বিশ্ব কবিতা দিবস উপলক্ষ্যে ,আজ
সন্ধ্যায়
সাংস্কৃতিক সমন্বয় এর পক্ষে ইস্পাতনগরীর
আশীষ মার্কেটে খোলা আকাশের নীচে – “ শিল্পের
জন্য - শিল্পীরা” অনুষ্ঠানে “ ফিরিয়ে দাও আমার শহর,শ্রমিক সংস্কৃতি”
এই দাবীতে এক অভিনব কবিতা পাঠের আসরের আয়োজন করে । ৩০ জন শিল্পী আবৃতি
করে শোনান । উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য মাইক ছিল না । কিন্তু খালি গলাতেও শিল্পীরা
উপস্হিত অগুন্তি শ্রোতা-দর্শকদের উদ্বেলিত করে তোলে।প্রতিজ্ঞা-শপথে শিল্পী ও দর্শক
কূল শিল্পনগরীর বাঁচানোর লড়াই শক্তিশালী করার বার্তা দিল।
No comments:
Post a Comment