দুর্গাপুর ,৬ই আগষ্ট
: আজ আবারও ৬ই আগষ্ট । দুর্গাপুরের ইতিহাসের সাথে এই দিনটির অচ্ছেদ্য সম্পর্ক। ১৯৬৬ সালের এই দিনে,শ্রমিকদের
অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার শ্রমিক ও লাল ঝাণ্ডা শ্রমিক
ইউনিয়ন হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন এর সদস্য আব্দুল জব্বার ( ভোর রাত্রি ) এবং
ইউনিয়নের সহ-সম্পাদক ও নির্বাচিত ওয়ার্কস কমিটির আশিষ দাসগুপ্ত ( দিনে ) তৎকালীন রাজ্যের কংগ্রেস সরকারের পুলিশের
লাঠি-গুলিতে শহীদের মৃ্ত্যু বরণ করেন । তার পর থেকে শ্রমিক অধিকার , নাগরিক অধিকার
ও গনতান্ত্রিক অধিকার বজায় রাখতে গিয়ে দুর্গাপুরের রাস্তা রাঙ্গা হয়ে গিয়েছে সি.পি.আই.(এম)
নেতা-কর্মীর রক্তে ।
৩৮ জন শহীদ হয়েছেন। তার মধ্যে,২০১১
সালে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরে শহীদ হয়েছেন দুই জন । আহত হয়েছেন শত শত । সি.আই.টি.ইউ
করার অপরাধে চাকুরী থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে চার হাজারের বেশী ঠিকা শ্রমিক । রাজ্য সরকারে
পুলিশ-প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদতে সন্ত্রাস চালিয়ে নির্বাচন ভণ্ডুল করে তৃণমূল দখল করে
নিয়েছে কো-অপাঃ ব্যাঙ্ক –সমবায়-স্কুল এর পরিচালন সমিতি । কিন্তু গনতান্ত্রিক অধিকারের টুঁটি চিপে ধরে দুর্গাপুর কে
নতজানু করানোর চক্রান্ত মানুষ ব্যর্থ করে দিয়েছে । ভয়ংকর সন্ত্রাসের মধ্যও লাল ঝাণ্ডা
উর্ধে তুলে মানুষ লড়াই চালিয়ে গেছে । তৃণমূলকে একে একে পরাস্ত করেছে দুর্গাপুর ইস্পাত
কারখানার শ্রমিক ইউনিয়ন স্বীকৃতি নির্বাচন ( দু-বার ),মহিলা ব্যাঙ্ক , সেইল সমবায় আবাসন
সহ বিগত ২০১৬ সালের বিধান সভা নির্বাচনে দুর্গাপুর ( পূর্ব ) ও দুর্গাপুর ( পশ্চিম
) দুটি আসনে ।
অন্য দিকে , দুর্গাপুর
শিল্পাঞ্চলের ‘শিল্প-ধ্বংসের’ নীতি নিয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকার । শিল্পাঞ্চলের
প্রান-ভোমরা রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্প অবলুপ্তির দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে । ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ব
কারখানা ২৫ টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে । লক্ষাধিক শ্রমিক কাজ হারিয়েছে । নতুন কোন শিল্প
আসে নি । লোকের মুখে মুখে প্রশ্ন ঘুরছে – ‘মোদি-দিদি’-র সৌজন্যে দুর্গাপুর কি ‘দুর্দশাপুর’
হয়ে যাবে ?
দুর্গাপুরের মানুষের
দুর্দশার জন্য আজ তৃণমূল ও বিজেপি আজ আসামীর কাঠগড়ায় ।
আগামী ১৩ই আগষ্ট দুর্গাপুর
নগর নির্বাচনে দুর্গাপুর আবার তৈরি হচ্ছে তৃণমূল ও বিজেপি কে পরাস্ত করতে ।
আজ সকালে বিভিন্ন
অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ইস্পাতনগরী সহ গোটা দুর্গাপুরে পালিত হয় দুর্গাপুরের প্রথম শহীদদ্বয়
আশিষ-জব্বার সহ সমস্ত শহীদের স্মরনে শহীদ দিবস । সকালে বি.টি.রণদিভে ভবনে ( ১নং বিদ্যাসাগর এভিন্যু ) রক্তপতাকা উত্তোলন
করেন বিশ্বরূপ ব্যানার্জী ও অরুন চৌধুরী । পরে আশীষ মার্কেট এর মূল অনুষ্ঠানে ও আশীষ-জব্বার
ভবনে রক্তপতাকা উত্তোলন করেন করেন রথীন রায় । শহীদবেদীতে মাল্যদান করেন রথীন রায়,সন্তোষ
দেবরায়,পি কে দাস,জীবন রায়,নির্মল ভট্টাচার্য,সুবীর সেনগুপ্ত, বিশ্বরূপ ব্যানার্জী,অরুন চৌধুরী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ।
সকালে হিন্দুস্থান
স্টীল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন(সি.আই.টি.ইউ) -র উদ্যোগে শহীদ দিবস উপলক্ষে বসে আঁকো প্রতিযোগিতা
ও অভিভাবকদের জন্য তাৎক্ষনিক বক্তৃতা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় বি.টি.রণদিভে ভবনে ।
No comments:
Post a Comment