দুর্গাপুর ,৩রা আগষ্ট
: আসন্ন ১৩ই আগষ্ট দুর্গাপুর পৌর নিগম নির্বাচনে
উপলক্ষ্যে আজ ইস্পাতনগরীর নিউটন ময়দানে ( ৯ নং স্ট্রীট ) বামফ্রন্টের প্রার্থীদের পক্ষে
আয়োজিত এক বিশাল নির্বাচনী সভায় স্পষ্ট ভাষায় তৃণমূলের ‘ নির্বাচনী- সন্ত্রাস ’ কে
চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এ কথা বলেন ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টি ( মার্কসবাদী )-র রাজ্য সম্পাদক
ও পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র । তিনি শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে তৃণমূলের ‘ভোট-সন্ত্রাস’ রুখে দেওয়ার আহ্বান জানান । তিনি
বলেন জনগনের টাকা লুঠ করে , জনগনের স্বার্থ বিরোধী নীতি নিয়ে , নির্বাচনে জনগনের মুখোমুখি
হওয়ার সাহস তৃণমূল হারিয়েছে । তাই তৃণমূল সন্ত্রাসের মাধ্যমে জিতবার চেষ্টা করছে ।
কিন্তু দুর্গাপুরে তৃণমূলের এই সন্ত্রাস রোখার জন্য বামফ্রন্টের সাথে অন্য বাম দল ও
কংগ্রেস এগিয়ে এসেছে ।
তিনি বলেন যে জন-বিরোধী
নীতির গ্রহনের ক্ষেত্রে কেবল কেন্দ্রীয় সরকার নয় রাজ্য সরকারও সমান ভাবে দায়ী । আজ
গ্যাসের ভর্তুকি তুলে দেওয়ার বিরোধীতা করছেন মুখ্যমন্ত্রী ,আমরাও করছি । কিন্তু পার্থক্য
হোল তিনি দ্বিতীয় ইউ.পি.এ সরকারের সময় গ্যাসের ভর্তুকি তুলে দেওয়ার জন্য পারেখ কমিটির
সুপারিশের আমরা বিরোধীতা করেছিলাম ,উনি করেন নি । জিএসটি-র লোক দেখানো বিরোধীতা করছেন
,কারন তার অর্থমন্ত্রী নিজেই জিএসটি প্রনোয়ন কমিটির প্রধান ছিলেন । শ্রী মিশ্র প্রশ্ন
করেন – এই বিরোধীতার পরে মুখ্যমন্ত্রী কি রাজ্যের কর কমানোর নীতি নেবেন ? নোট বাতিলের
বিরোধীতা করেছিল তৃণমূল । কারন সারদা-নারদা কেলেংকারীর লুঠের টাকা ধরা পড়ার ভয় ছিল
। আমরা নোট বাতিলের বিরোধীতা করি নি । আমরা বাতিল নোটের সম পরিমান টাকা ছাপানোর দাবী
করেছিলাম জনগনের হয়রানি দুর করার জন্য । আজ নোট বাতিলের ফলে দেশের অর্থনীতিতে মারাত্মক
কুপ্রভাব তৈরি হয়েছে । বহু লোক কাজ হারিয়েছেন । ৫৬-ইঞ্চি ছাতি দেখিয়ে মোদি বছরে ২ কোটি
কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন , মমতা ব্যানার্জী বছরে ২ লক্ষ চাকরীর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন । কোথায় গেল সেই প্রতিশ্রুতি
?
আজ ধর্মের নামে বিভেদ
ছড়ানোর চেষ্টা করছে বিজেপি । পিছিয়ে নেই তৃণমূল । বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের যারা বিরোধীতা
করেছিল , তৃণমূল তাদের আশ্রয় দিচ্ছে । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দাঙ্গা ঠেকানোর ক্ষমতা
নেই । দাঙ্গা ঠেকানোর ক্ষমতা বামপন্হ দের আছে । বাম আমলে জ্যোতি বসু-বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের
সময়ে দাঙ্গাকারীরা মাথা তোলার সাহস পায় নি । দাঙ্গা ঠেকানোর ক্ষমতা বামপন্হীদেরই আছে ।
দূর্ণীতি তৃণমূলের
আগাপাশতলা চেপে বসেছে । সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামে তথাকথিত ‘জমি-আন্দোলন’ এর কথা বলেছিলেন
। মানুষ দেখছেন যে ভাঙ্গর থেকে হরিশ চ্যাটার্জী স্ট্রীট পর্যন্ত জমি-লুঠের পাশে আছেন
মুখ্যমন্ত্রী । অনেকে মনে করেছিলেন মোদির প্রতিশ্রুতি অনুসারে চিটফান্ড কেলেংকারীর
কিনারা হবে , প্রতারিতরা টাকা ফেরৎ পাবেন , দোষীরা জেলে যাবেন । কিন্তু তা হবার নয়
। কারন দূর্ণীতিগ্রস্হরা উভয় দলের সম্পদ । একমাত্র উজ্জ্বল ব্যতিক্রম বামপন্হীরা ।
আজ যখন কেন্দ্র ও
রাজ্যের নীতির জন্য দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল ধুঁকছে , তখন বামপন্হীরাই শিল্প বাঁচাতে
, শহর বাঁচাতে লড়াই লড়াই গড়ে তুলেছে । তাই দুর্গাপুর বাঁচাতে পৌর নির্বাচনে বামফ্রন্টের
প্রার্থীদের বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করে বাম পৌর
বোর্ড গঠনের জন্য রায়দান করার আবেদন জানান সূর্যকান্ত মিশ্র ।
আজকের সভায় অন্যান্যদের
মধ্যে বক্তব্য রেখেছেন অমল হালদার,বংশগোপাল চৌধুরী,গৌরাঙ্গ চ্যাটার্জী ও সন্তোষ দেবরায়
।
No comments:
Post a Comment