দুর্গাপুর,২০ ফেব্রুঃ
: এক বছর আগে অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের ১০০% স্ট্র্যাটেজিক ডিসইনভেষ্টমেন্টের জন্য
গ্লোবাল টেণ্ডার ডাকা হয়েছিল । কিন্তু শ্রমিক আন্দোলন ও গনআন্দোলনের তীব্রতা এতটাই
ছিল যে আক্ষরিক অর্থে কোন সংস্হাই অ্যালয় স্টিল কেনার জন্য প্ল্যান্টের চত্বরে পা রাখার
সাহস করে নি । ইস্পাত শ্রমিকরা দৃঢ় ভাবে জানিয়ে দেন যে অ্যালয় স্টিলের বিলগ্নিকরন রুখতে
জান কবুল । তাদের পাশে দৃঢ় ভাবে এসে দাঁড়ান দুর্গাপুরের সমস্ত স্তরের মানুষ । সর্ব
স্তরে ছড়িয়ে পড়ে প্রতিরোধের শপথ – দুর্গাপুর কে দুর্দশাপুর হতে দেব না । অ্যালয় স্টিল
প্ল্যান্টের বিলগ্নিকরন বাতিল,
অ্যালয় স্টিল ও দুর্গাপুর ইস্পাত
বাঁচাতে আধুনিকিকরন-সম্প্রসারনের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধন বিনিয়োগ,দুর্গাপুর ব্যারাজের
আমূল সংস্কার ও দুর্গাপুর ইস্পাতের উচ্ছেদ ঠিকা শ্রমিকদের কাজে ফেরানো,ডি.পি.এল-ডি.সি.এল
ও ডি.টি.পি.এস এর আধুনিকিকরন-সম্প্রসারনের দাবিতে গত তিন বছর বছর ধরে লাগাতার লড়াই
চালিয়ে যাচ্ছে সি.আই.টি.ইউ সহ কেন্দ্রিয় ট্রেড ইউনিয়ন গুলির যৌথ মঞ্চ,’ অ্যালয় স্টিল
বাঁচাও - দুর্গাপুর ইস্পাত বাঁচাও – রক্ষা করো শিল্প- রক্ষা করো দুর্গাপুর’ কমিটি । দেড় শতাধিক আন্দোলন কর্মসূচি
পালন করেছে ।
ইতিমধ্যে কয়েকদিন
আগে কিছু সংবাদ মাধ্যম, আপাততঃ অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের বিলগ্নিকরন হচ্ছে না – এই
খবর চাউর করে । সি.আই.টি.ইউ সহ কেন্দ্রিয় ট্রেড
ইউনিয়ন গুলির যৌথ মঞ্চ এই খবরের সততা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করে । কারন অন্তর্বর্তি
বাজেটে মোদি সরকার ৩৫টি রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা বিলগ্নি করে বর্তমান আর্থিক বর্ষেই ৮০,০০০
হাজার কোটি টাকা তোলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করেছে এবং এই তালিকার সেইলের অ্যালয় স্টিল,সালেম ও ভদ্রাবতি
কারখানা আছে – এই খবর প্রকাশিত হয়েছে ।
বিভ্রান্তি আরও ছড়ায়
কারন সংবাদটিতে অ্যালয় স্টিলের কৌশলগত বিলগ্নিকরন থেকে সরে আসার কথা জানালেও অ্যালয়
স্টিল ও দুর্গাপুর ইস্পাত বাঁচাতে মূলধন বিনিয়োগের বিষয় নীরব ছিল । এর আগে বাজপেয়ী
সরকারের আমলে এম-এ-এম-সি,বি.ও.জি.এল,এফ.সি.আই এবং ২০১৪ সালে নির্বাচনী বৈতরনী পার করার
জন্য হিন্দুস্হান কেবলস এর ক্ষেত্রে একই ধরনের ছল-চাতুরীর আশ্রয় নেওয়া হলেও পরে প্রতিটি
কারখানা বন্ধ করে দেওয়া । এমন কি অ্যালয় স্টিলের কৌশলগত বিলগ্নিকরন হবে না – এই খবর
ছড়িয়ে আন্দোলনের গোড়ার দিকে শ্রমিকদের মধ্যে
বিভেদের চেষ্টা করা হয়েছিল । যদিও কেন্দ্রিয় ট্রেড ইউনিয়ন গুলির যৌথমঞ্চ সেই
চেষ্টা ব্যর্থ করে ।
এই অবস্হায় গতকাল
অ্যালয় স্টিলের ১০০% কৌশলগত বিলগ্নিকরনের জন্য গ্লোবাল টেন্ডার আহ্বান করতে চেয়ে সেবি-র
কাছে সেইলের চেয়ারম্যানের পাঠানো চিঠি ফাঁস ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সেইলের অ্যালয়
স্টিল,সালেম ও ভদ্রাবতি কারখানার বিলগ্নিকরনের খবর প্রকাশিত হতেই দুর্গাপুর জুড়ে হতাশা
নেমে এসেছে । অন্যদিকে ইস্পাত শ্রমিকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ । যার বহিঃপ্রকাশ
দেখা যায় আজ সকালে অ্যালয় স্টিলের মেইন গেটের বিক্ষোভ সমাবেশে । শ্রমিকরা স্পষ্টতঃ
জানিয়ে দেন যে কোন মূল্যে অ্যালয় স্টিল কৌশলগত বিলগ্নিকরন রোখা হবে । বক্তব্য রাখতে
নেতৃবৃন্দ তৃতীয় পর্যায়ের আন্দোলন সর্বাত্মক করার উপর গুরুত্ব দিয়ে ব্যপকতম ঐক্য গড়ে
তোলার আহ্বান জানান । বক্তব্য রাখেন বিশ্বনাথ মন্ডল ( এ.আই.ইউ.টি.ইউ.সি),মলয় ভট্টাচার্য,বিশ্বরূপ
ব্যানার্জী ( সি.আই.টি.ইউ) । এছড়াও বক্তব্য রাখেন দুর্গাপুর ( পূর্ব )-এর বিধায়ক সন্তোষ
দেবরায় । তিনি জোরদার লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান । সাথে সাথে তিনি ডি.পি.এল ও
ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরনের ফলে তৈরি সংকটের উদাহরন টেনে বলেন যে মার্জার-ভিআরএস আরও ব্যপকভাবে
শ্রমিকদের স্বার্থ কে ক্ষতিগ্রস্হ করে । সমাবেশের পর শ্রমিকরা মেইন গেট অঞ্চলে মিছিল
করেন । অ্যালয় স্টিল ও দুর্গাপুর ইস্পাতের শ্রমিকরা আজকের কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন ।
No comments:
Post a Comment