দুর্গাপুর,১৯শে ফেব্রুঃ : আজ দুপুরে কর্মস্থল থেকে বাড়ি
ফেরার পথে ইস্পাতনগরী ও দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার মধ্যে সংযোগকারী লিঙ্ক রোডে মর্মান্তিক
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হোল দুর্গাপুর ইস্পাতের প্ল্যান্ট গ্যারেজের স্থায়ী শ্রমিক সঞ্জয়
চক্রবর্তির। বয়স ৫৭। তিনি মোটর বাইকে ছিলেন।জাতীয় সড়কের ওপরে ফ্লাইওভার পার করে তিনি
যখন যাচ্ছিলেন তখন একটি বেপরোয়া গতির ট্র্যাকটার তাঁর বাইকে ধাক্কা মেরে তাকে পিষে
দেয়।ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।পরে তাঁকে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার মেইন হাসপাতালে
নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।তাঁর স্ত্রী,এক মাত্র কন্যা ও অবিবাহিত
বোন বর্তমান।ইস্পাতনগরীর রাণাপ্রতাপ রোডে তাঁর বাসস্থান।খবর ছড়াতেই কারখানা ও ইস্পাতনগরীতে
শোকের ছায়া নেমে আসে। ক্ষুব্দ শ্রমিকরা ও সাধারন মানুষ লিঙ্ক রোড অবরোধ করলে যানবাহন
চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।কাতারে কাতারে ক্ষুব্দ শ্রমিক ও সাধারন মানুষ মেইন হাসপাতালে জড়ো
হলে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা ও পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় আধিকারিকরা পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে
আসেন । পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠার আশংকায় দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা ও পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় আধিকারিকরা তড়িঘড়ি দুর্গাপুর ইস্পাত
কারখানার ৭ টি ইউনিয়ন ( সিআইটিইউ-আইএনটিটিইউসি-আইএনটিইউসি-এআইটিইউসি-এইচএমএস-বিএমএস-এআইইউটিইউসি)
এর যৌথ মঞ্চের সাথে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার প্রশাসনিক ভবনে ( টি.এ.বিল্ডিং )-এ আলোচনায়
বসলে লিঙ্ক রোডের অবরোধ ওঠে। কিন্তু হাসপাতালে চত্বরে ক্ষুব্দ শ্রমিক ও সাধারন মানুষের
জমায়েত চলতে থাকে। অভিযোগ ওঠে পুলিশের মদতে লিঙ্ক রোডে বেআইনীভাবে ভারী যানবাহন চলছে।পুলিশের
কিয়স্ক থেকে ভারী যানবাহন কে দাঁড় করে “তোলা” তোলার জন্য যে যান জট তৈরি হয় তার ফলে
শ্রমিক ও সাধারন মানুষের ভোগান্তি হয় এবং দুর্ঘটনা হচ্ছে। আজকের দুর্ঘটনা তারই মর্মান্তিক
পরিনতি বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে লিঙ্ক রোডের মতো গুরুত্বপূর্ন রাস্তা মেরামতি-সংস্কার-আধুনিকীকরনের
বিষয়ে ধারাবাহিক ভাবে অবহেলা করার অভিযোগে উঠেছে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার কর্তৃপক্ষের
দিকে ।শেষ পর্যন্ত যৌথ মঞ্চের চাপের কাছে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা ও পুলিশ প্রশাসন
নতি স্বীকার করে। ঠিক হয় যে আগামী তিন দিনের মধ্যে লিঙ্ক রোডে ভারী যানবাহন চলাচল কে
সকাল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হবে।যত দিন পর্যন্ত বিকল্প রাস্তা হবে
ততদিন এই ব্যবস্থা চালু থাকবে। পুলিশের অভিযুক্ত কিয়স্কটি ভেঙ্গে ফেলা হবে। ময়না তদন্তের
রিপোর্ট পাওয়ার পরে বিধিবদ্ধ নিয়ম অনুসারে মৃত শ্রমিক সঞ্জয় চক্রবর্তির পোষ্যের একজনের
চাকুরীর জন্য দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে এবং অন্যান্য আর্থিক ক্ষতিপুরন দেবে। লিঙ্ক রোডের সংস্কার
করে রাস্তায় গবাদি পশুর চলে আসা বন্ধ,বেআইনী পার্কিং বন্ধ ও বাম্পার অপসারন এবং নগরায়নের
ফলে লিঙ্ক রোডের সাথে রাস্তার সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে খতিয়ে দেখে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা
নেওয়ার কথার প্রতিশ্রুতি মিলেছে।
দুর্গাপুর
ইস্পাত কারখানা ও ইস্পাতনগরীর যাবতীয় নিরাপত্তা নিয়ে খুব দ্রুত যৌথ মঞ্চের সাথে আলোচনায়
বসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার কর্তৃপক্ষ।পুলিশ ও দুর্গাপুর ইস্পাত
কারখানার কর্তৃপক্ষ লিঙ্ক রোডে যাতায়াতের সময় শ্রমিকদের কোন রকম ভাবেই হয়রানি না করারও
প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আগামীকাল ময়না তদন্তের পরে মৃত শ্রমিক সঞ্জয় চক্রবর্তির দেহ তাঁর
পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। আলোচনার ফলাফল যৌথ মঞ্চের নেতৃবৃন্দ
হাসপাতালে অপেক্ষমান শ্রমিক-জনসাধারনের কাছে তুলে ধরেন। তারপরে উত্তেজনা প্রশমিত হয়। বাম আন্দোলনের একনিষ্ঠ কর্মী ও
No comments:
Post a Comment