দুর্গাপুর,৪ঠা জুলাই :
আজ বিকালে সি.আই.টি.ইউ ভূক্ত ইউনাইটেড
কনট্রাক্টর ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন , এ.এস.পি কনট্রাক্টর্স এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ও টাউনশিপ কনট্রাক্টর্স এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন এর যৌথ আহ্বানে দুর্গাপুর
ইস্পাত কারখানার সি.ই.ও দফ্তরের সামনে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা ও অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের
ঠিকা শ্রমিকরা ৭-দফা দাবিতে বিক্ষোভ দেখান । কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ব ইস্পাত উৎপাদক
সংস্হা সেইল ও আর.আই.এন.এল এর শ্রমশক্তির ৫০% এখন ঠিকা শ্রমিক এবং উৎপাদনে সর্বক্ষেত্রে
গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করলেও চরম বঞ্চনা-শোষনের শিকার হচ্ছেন । স্টিল ওয়ার্কার্স ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার ( সি.আই.টি.ইউ
) নেতৃত্বে সেইল ও আর.আই.এন.এল এর সি.আই.টি.ইউ -ভূক্ত ইউনিয়ন গুলির লাগাতার লড়াই এর ফলশ্রুতিতে সেইল ও আর.আই.এন.এল
এর শ্রমিক-কর্মচারিদের গত বেতন-চুক্তির আলোচনায়
( এন.জে.সি.এস) ঠিকা শ্রমিকদের বেতনের বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত হয় । চুক্তি মোতাবেক সেইল
ও আর.আই.এন.এল এর ঠিকা শ্রমিকদের বেতন ৭৫০
থেকে ১৫০০ টাকা বৃদ্ধির কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষের
বদান্যতায় ঠিকাদার সংস্হা গুলি সেই চুক্তি ভঙ্গ করছে । এর ফলে কোথাও কোথাও ঠিকা শ্রমিকরা
বেতন বাবদ মাত্র দৈনিক ১৫০-২০০ টাকা পাচ্ছেন
।এমনকি পিএফ – ইএসআই-ইডিএল-আই এর মতো আইনগত অধিকার থেকেও সব ক্ষেত্রে সুবিধা পাচ্ছেন
না । খনি ও কারখানার নূন্যতম সুরক্ষা অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ইস্পাত ঠিকা শ্রমিকরা
। ফলে ঠিকা শ্রমিকদের মৃত্যু বেড়েই চলেছে । গত মে মাসের ৮,৯ ও ১০ তারিখে ভিলাই কারখানায়
পর পর তিন দিন পৃথক দুর্ঘটনায় তিন জন ঠিকা শ্রমিকের মৃত্যু হয় । একই অবস্হা দুর্গাপুর
ইস্পাত কারখানা ও অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের । গত ১ বছরে এই দুই কারখানায় বেশ কয়েক জন
ঠিকা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে ।
ইতিমধ্যে সারা দেশের মানুষ
জেনেছেন দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা ও ইস্পাতনগরীর ঠিকা শ্রমিকদের ভয়াবহ অবস্হার কথা
। ২০১১ সালে তৃণমূল সরকার গঠিত হওয়ার পরে ইস্পাত ঠিকা শ্রমিকদের জীবন-জীবিকার উপর ভয়াবহ
আক্রমন নেমে আসে । সি.আই.টি.ইউ করার অপরাধে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা ও ইস্পাতনগরীর
চার হাজার ইস্পাত ঠিকা শ্রমিক কে কাজের জায়গা থেকে উৎখাত করা হয় । নৃশংস দৈহিক আক্রমনের
শিকার হন অনেকে । প্রশাসনের মদতে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয় ইউনিয়ন নেতৃত্ব কে । শ্রমিক
আন্দোলনের পীঠস্হান দুর্গাপুরে এই আক্রমনের আসল উদ্দেশ্য ছিল ঠিকা শ্রমিকদের চরম বঞ্চনা-শোষনের
দিকে ঠেলে দেওয়া । তৃণমূল-ঠিকাদার ও কর্তৃপক্ষের একাংশের গড়ে ওঠা অশুভ আঁতাত ঠিকা শ্রমিকদের
এক দমবন্ধ করা পরিবেশের দিকে ঠেলে দিয়েছে । এই অবস্হায় ঠিকা শ্রমিকরা লড়াই এর
রাস্তা বেছে নিয়েছেন । ২০১৭ এর ১লা জানুঃ থেকে নূ্ন্যতম বেতন ২১,০০০ টাকা ,নতুন
করে শ্রমিক উচ্ছেদ না করে উচ্ছেদ শ্রমিকদের কাজে বহাল , যথাযথ সুরক্ষা,জীবন বীমার মাধ্যমে
গ্র্যাচুইটি ,সর্ব ভারতীয় ক্রেতা সূচক বৃদ্ধির জন্য সূচক পিছু ২টাকা হারে বৃ্দ্ধি প্রভৃতি
৭ দফা দাবিতে আজকের বিক্ষোভ জমায়েতে ঠিকা শ্রমিকরা যোগ দেন । সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নিমাই ঘোষ , শত্রুঘ্ন
দেওঘরিয়া , আশিষতরু চক্রবর্তি , ললিত মিশ্র , সুমনব্রত দাস , বিভূতি দাস মন্ডল ও স্টিল ওয়ার্কার্স ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার ( সি.আই.টি.ইউ
)-র সম্পাদক পি.কে.দাস । উপস্হিত ছিলেন দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর বিধায়ক সন্তোষ দেবরায়
,বিশ্বরূপ ব্যানার্জী প্রমূখ । সমাবেশ চলাকালিন
সুবীর সেনগুপ্তর নেতৃত্বে দশ-সদস্যের এক প্রতিনিধি দল কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি-সম্বলিত
স্মারক লিপি জমা দিয়ে অবিলম্বে ফয়সালার দাবি জানিয়েছেন ।
No comments:
Post a Comment