দুর্গাপুর,২৩শে নভেঃ : গতকাল সন্ধ্যায় দুর্গাপুর স্টেশন সংলগ্ন দুর্গাপুর পরিবহন
শ্রমিক ভবনে এবিভিপি নামধারী একদল দুষ্কৃতি আচমকা আক্রমন চালানোর চেষ্টা করলে পার্টি
কর্মি ও সাধারন মানুষের প্রতিরোধে পালিয়ে যায় । অভিযোগ যে এই হামলার সময় পুলিশ নিষ্ক্রিয়
ছিল ।শ্রমিক ভবনে বিজেপি-আরএসএস এর মদতপুষ্ট এভিবিপি-র বিশৃংখলা তৈরির চেষ্টার খবর
পেয়ে শয়ে শয়ে মানুষ ছুটে আসে । পার্টির পক্ষ থেকে দুষ্কৃতিদের অবিলম্বে গ্রেফ্তারের
দাবিতে ও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদ জানিয়ে
বাঁকুরা-দুর্গাপুর রোডে অবরোধ শুরু হয় । পরে পুলিশি আশ্বাসে অবরোধ ওঠে ।
এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ পার্টির পক্ষ থেকে শ্রমিক
ভবনের সামনে বিশাল গণ জমায়েতে বক্তব্য রেখে পার্টির পশ্চিম বর্ধমান জেলার সম্পাদকমণ্ডলীর
সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন স্বামী বিবেকানন্দর প্রতিকৃতি সামনে রেখে এভিবিপি-র দুষ্কৃতিরা
হামলা চালিয়েছে।অথচ স্বয়ং স্বামী বিবেকানন্দ ঘোরতরভাবে জাতিভেদপ্রথা ও সাম্প্রদায়িকতার
ঘোর বিরোধী ছিলেন । বিবেকানন্দর মতবাদের সাথে মনুবাদী বিজেপি-আরএসএস এর কোন মিল নেই
। আক্রমন চালনোর সময় দেশপ্রেমের জিগির তোলা এভিবিপি-র সদস্যরা ভুলে গেছেন যে মোদি সরকারের
আমলে সর্বোচ্চ সংখ্যক সেনা জওয়ান সন্ত্রাসবাদীদের হাতে নিহত হয়েছেন । দেশে কৃষক আত্মহত্যা
ও বেকারিত্ব সর্বোচ্চ পরিমানে পৌঁছেছে ।১কোটি ১০ লক্ষ মানুষ কাজ হারিয়েছেন। কর্পোরেটদের
প্রতি প্রেম গোপন করতে দেশপ্রেমের জিগির আর
প্রকৃত দেশপ্রেমের মধ্যে ফারাক সারা দেশের মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে । কমিউনিস্টদের
দেশপ্রেমের পাঠ শেখানোর কোন নৈতিক অধিকার বিজেপি-আরএসএস এর নেই । ভারতের স্বাধীনতা
আন্দোলনে কমিউনিস্ট পার্টির গৌরব জনক ভুমিকা ও আরএসএস এর অনুপস্হি,নির্লজ্জ ব্রিটিশ-স্হাবকতা
ও সহযোগিতার ইতিহাস মানুষ জানে । মানুষ মোদি সরকারের ভয়ংকর জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে
রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে সামিল হচ্ছেন । এই নীতির বিরুদ্ধে আগামী
৩০শে নভেঃ থেকে ১১ই ডিসেঃ চিত্তরঞ্জন থেকে রাজভবন পর্যন্ত পদযাত্রায় মানুষের
ঢল নামবে । পায়ের তলা থেকে মাটি সরছে এটা আন্দাজ করেই বিজেপি-আরএসএস সংগঠিত ভাবে এই
আক্রমন চালিয়েছে । দুর্গাপুরের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পার্টি অফিস আক্রমনের ঐতিহ্য ছিল
না । এই সংস্কৃতি আমদানি করে তৃণমূল আজ দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়েছে । বিজেপি-আরএসএসও
সেই পথেই অগ্রসর হচ্ছে । কিন্তু মানুষের গণপ্রতিরোধ কোন জায়গায় যেতে পারে,তা গতকালের
ঘটনা প্রমান করেছে । তিনি হুঁশিয়ারী দেন এরপরেও এই ঘটনা ঘটলে,মানুষ ছেড়ে কথা বলবে না
।
এর আগে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দুর্গাপুর ( পূর্ব)-এর বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় বলেন যে
দুর্গাপুর ভয়াবহ অবস্হার মুখোমুখি হয়েছে । ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা বন্ধের মুখে দাঁড়িয়ে
আছে । এই সবের থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতে এনআরসি,সাম্প্রদায়িক মেরুকরনের আশ্রয় নিচ্ছে বিজেপি-আরএসএস
। অন্যদিকে হিংশাশ্রয়ী রাজনীতির আশ্রয় নিয়ে প্রতিবাদি কন্ঠস্বর দমাতে চাইছে বিজেপি
ও তৃণমূল । তাদের নীতি সফল হবে না । এর বিরুদ্ধে ব্যপকতর ঐক্য গড়ে তিনি গণ প্রতিরোধের
আহ্বান জানান ।এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সিদ্ধার্থ বসু ।
No comments:
Post a Comment