Friday 20 October 2023

দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় প্রবল শ্রমিক আন্দোলনের চাপে শ্রমিক নেতাদের সাসপেনশনের নির্দেশ নিঃশর্তে প্রত্যাহার :যৌথ আন্দোলন চলবে।

 


দুর্গাপুর,২০শে অক্টোঃ : প্রবল শ্রমিক আন্দোলনের চাপে শেষ পর্যন্ত দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার শ্রমিক নেতা সীমান্ত চ্যাটার্জী ও সুকান্ত রক্ষিতের বিরুদ্ধে সাসপেনশনের নির্দেশ নিঃশর্তে প্রত্যাহার করতে বাধ্য হোল।

দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার ৭ টি ইউনিয়ন, সিআইটিইউ-আইএনটিটিইউসি-আইএনটিইউসি-এআইটিইউসি-এইচএমএস-বিএমএস-এআইইউটিইউসি এর যৌথ আহ্বানে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন শুরু হয় আরএফআইডি-বায়োমেট্রিক হাজিরা নিয়ে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা কর্তৃপক্ষের সার্কুলার বাতিলের দাবিতে। পরে যুক্ত হয় অবিলম্বে নায্য বার্ষিক বোনাস( যা গতবারের প্রাপ্ত বোনাস থেকে কম হবে না),পুর্নাঙ্গ বেতন-চুক্তি,৩৯ মাসের এরিয়ার,বেতন-চু্ক্তিতে ঠিকা শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্তি, এবং দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা ও অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের আধুনিকীকরন-সম্প্রসারনের কাজ অবিলম্বে শুরু সহ অন্যান্য বকেয়া দাবি। দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় ৭ টি ইউনিয়ন, এর যৌথ আহ্বানে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় লাগাতার ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলন চলছে।

ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন কে স্বৈরাচারী উপায় দমন করার উদ্দেশ্য নিয়ে গত ১৪ই অক্টোঃ আচমকাই দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার কর্তৃপক্ষ হিন্দুস্থান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন(সিআইটিইউ) এর দুর্গাপুর ইস্পাত শাখার সম্পাদকমণ্ডলীর আহ্বায়ক সীমান্ত চ্যাটার্জী এইচএমএস ইউনিয়নের আহ্বায়ক সুকান্ত রক্ষিত কে কোন রকম সতর্কীকরন করা ছাড়াই সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশনামা জারি করে।এছাড়াও বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ কে কর্তৃপক্ষসতর্ককীরনেরচিঠি পাঠায়।এর পরে আন্দোলনের তীব্রতা আরো বৃদ্ধি পায়। সেইল-আরআইএনএল এর সর্বত্র তীব্র শ্রমিক বিক্ষোভ শুরু হয়। গত ১৭ই অক্টোবর সেইল-আরআইএনএল এর দিল্লির কর্পোরেট অফিসে সেইল-আরআইএনএল এর বার্ষিক বোনাসের সভা শুরু হলে দেশের ইস্পাত শিল্পের শ্রমিক নেতৃবৃন্দ দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় সিআইটিইউ নেতা সীমান্ত চ্যাটার্জী ও এইচএমএস নেতা সুকান্ত রক্ষিতের ওপর থেকে অবিলম্বে ও নিঃশর্তে সাসপেনশন ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ কে দেওয়া ‘সতর্ককীরনের’ চিঠি প্রত্যাহারের দাবি জানান এবং ৭ টি ইউনিয়নের যৌথ মঞ্চের নেতৃত্বে  দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় বর্তমানে চলা শ্রমিক আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানান। এই পরিস্থিতিতে আজকে কারখানার ডিআইসি সাথে সাতটা ইউনিয়নের সভা হয়। এই সভায় সমস্ত ইউনিয়নের পক্ষ থেকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় শ্রমিক নেতা সীমান্ত চ্যাটার্জী ও সুকান্ত রক্ষিতের বিরুদ্ধে সাসপেনশনের নির্দেশ নিঃশর্তে প্রত্যাহারের দাবি করা হয় এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ কে দেওয়াসতর্ককীরনেরচিঠি প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

৭টি ইউনিয়নের যৌথ দাবি মেনে নিয়ে কর্তৃপক্ষ নিঃশর্ত সাসপেনশন তোলার কথা ঘোষণা করেন এবং তাদের আজকেই কাজে যোগদান করতে আহ্বান করেন।‘সতর্ককীরনের’ চিঠি প্রত্যাহারের বিষয়েও ইউনিয়নগুলির দাবি মত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা কর্তৃপক্ষ জানায়। এই জয় কে দুর্গাপুর ইস্পাতের সমস্ত শ্রমিকের সংগ্রামী ভূমিকার জয় বলেই যৌথ নেতৃত্ব মনে করে।

   এর আগে,সকালে ৭টি ইউনিয়নের যৌথ আহ্বানে কারখানার প্ল্যান্ট মেডিক্যালের কাছে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিশ্বরূপ ব্যানার্জি,পরেশ প্রামানিক,সুভাষ সিং,নিরঞ্জন রায়,সব্যসাচী গোস্বামী ও অরূপ দাস।নেতৃবৃন্দ সমস্ত দাবি না মেটা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে সাফ জানিয়ে দেন।বেলা গড়াতে খবর আসে যে কর্তৃপক্ষ সেইল-আরআইএনএল এর কর্তৃপক্ষ কেন্দ্রিয় ট্রেড ইউনিয়নদের সাথে আলোচনা ছাড়াই,কোন রকম গনতন্ত্রিক রীতিনীতির তোয়াক্কা না করে একতরফা ভাবে শ্রমিক-কর্মচারিদের গতবারের বার্ষিক বোনাসের প্রায় অর্ধেকের সামান্য কিছু বেশি এবারের বার্ষিক বোনাস দেওয়ার জন্য একক উদ্যোগ গ্রহন করেছে। ৭টি ইউনিয়নের যৌথ মঞ্চ কর্তৃপক্ষের  এই উদ্যোগ কে শ্রমিক-ঐক্য ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র বলেছেন।তবে এই ষড়যন্ত্রের জাল ছিঁড়ে শেষ পর্যন্ত শ্রমিক আন্দোলন জয়ী হবে বলে ৭টি ইউনিয়নের যৌথ মঞ্চ প্রত্যয়ী।







No comments:

Post a Comment