Thursday 15 November 2018

কমরেড অর্চনা ভট্টাচার্যের জীবনাবসান ।




দুর্গাপুর,১৫ই নভেঃ : গতকাল রাত্রি ৯-৩০ মিঃ আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইস্পাতনগরীর রাণা প্রতাপ রোডে নিজের বাস ভবনেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি ( মার্কসবাদি)-র প্রাক্তন বিধায়িকা ( দুর্গাপুর ১ ) ও প্রাক্তন অঞ্চল সম্পাদিকা কমরেড অর্চনা ভট্টাচার্য ।মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ । তাঁর তিন কন্যা,জামাতা,নাতি-নাতনি বর্তমান । তাঁর স্বামী পার্টি নেতা ফণী ভট্টাচার্য আগেই প্রয়াত হয়েছেন ।
আজ সকালে তাঁর মরদেহ বাড়ী থেকে রাণা প্রতাপ সেক্টর অফিস হয়ে নিয়ে আসা হয় আশিস-জব্বার ভবনে । সেখানে তাঁর মরদেহে রক্তপতাকায় আচ্ছাদিত করে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি ( মার্কসবাদি)-র কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য আভাস রায়চৌধুরী, পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটির সম্পাদক গৌরাঙ্গ চ্যাটার্জী,সন্তোষ দেবরায় ও বংশগোপাল চৌধুরী । এছাড়াও পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন জাহানারা খান,বিরেশ্বর মন্ডল,অলোক ভট্টাচার্য,পার্থ মুখার্জী সহ পার্টি ও বিভিন্ন গন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সহ  অসংখ্য সাধারন মানুষ । এরপরে তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় যথাক্রমে ১নং বিদ্যাগর এভিন্যু-এ হিন্দুস্হান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের অফিস ও সিটি সেন্টারে  শহীদ বিমল দাসগুপ্ত ভবনে । অঙ্গীকার অনুযায়ী তাঁর চক্ষুদান করা গেলেও স্হানীয় মেডিক্যাল কলেজ অক্ষমতা জানালে মরণত্তোর দেহদান করা যায় নি । তবে তাঁর দেহে প্রতিস্হাপিত পেস মেকার দান করা গেছে । পরে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে বীরভানপুর শ্মশানে । ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি ( মার্কসবাদি)-র পঃ বঙ্গ  রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র এক ট্যুইট বার্তায় তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন ।
১৯৪৫ সালে অধুনা বাংলাদেশের গোপালগঞ্জে জন্ম হয় অর্চনা ভট্টাচার্যের । বাল্যকাল ও শৈশব কেটেছে বহরমপুর ও আরামবাগের ডিহি বাগনান গ্রামে । বিবাহসূত্রে ১৯৬০ সালে দাঁইহাটে এবং ১৯৬৩ সালে চাকুরীসূত্রে ইস্পাতনগরীর বিদ্যাপতি রোডে বসবাস শুরু করেন । ১৯৬০ এর দশকে দুর্গাপুরে উত্তাল শ্রমিক আন্দোলনের হাত ধরে পার্টির সংশ্পর্ষে আসেন ও মহিলা সমিতি গড়ে তোলার জন্য দুর্গাপুর সহ অবিভক্ত বর্ধমান জেলায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন । নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সমবায় আন্দোলনের । ৭০-এর দশকে বার বার সন্ত্রাসের শিকার হয়েও তিনি ও তাঁর পরিবার অবিচল ছিলেন । ১৯৭১ সালে পার্টি সভ্যপদ পান । মতাদর্শের প্রতি অবিচল আস্হা রেখে পার্টি ও গন ফ্রন্টের পরিচালনা,অনারম্বর জীবন-যাপন,সাধারন মানুষ বিশেষ করে মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনা শুনলে বিপদ-বাঁধা ভুলে ঝাঁপিয়ে পড়া তাঁর স্বাভাবিক অভ্যাসে পরিনত হয়েছিল।সাধারন মানুষ তাকে আপনজন বলে ভাবতেন । তিনি বামফ্রন্টের পক্ষে পার্টির প্রার্থী হয় ২০১০ সালে দুর্গাপুর-১ বিধানসভা থেকে উপনির্বাচনে জয়ী হন ।






No comments:

Post a Comment