Friday 16 November 2018

দুর্গাপুরে শিল্পের অমানিশা কাটাতে জোরদার লড়াই এর ডাক দিল ট্রেড ইউনিয়নের যৌথ মঞ্চ ।




দুর্গাপুর,১৬ই নভেঃ : উৎসবের দিন কাটতেই ট্রেড ইউনিয়নের যৌথ মঞ্চ “ সেভ এএসপি – সেভ ডিএসপি – সেভ দুর্গাপুর “ এর পক্ষ থেকে দুর্গাপুরে কল-কারখানার ঘন অন্ধকারাচ্ছন্ন দিন কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে জোরদার লড়াই এর ডাক দিল । বিগত ২ বছর ধরে যৌথ মঞ্চ কেন্দ্রিয় সরকারের অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট কে বিক্রি করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক লড়াই গড়ে তুলেছে । অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের বিলগ্নিকরন বাতিল, অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টে ও দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার আধুনিকিকরন-সম্প্রসারনের দাবিতে এই লড়াই দুর্গাপুরের অন্যান্য কল-কারখানার শ্রমিকদের উজ্জ্বীবিত করেছে । এর ফলশ্রুতি তে সমগ্র দুর্গাপুরের শ্রমিক ও কেন্দ্রিয় ট্রেড ইউনিয়ন গুলি কনভেনশনের মধ্য দিয়ে  সমস্ত কল-কারখানার বাঁচানো লড়াই কে এক ছাতার তলায় এনে যৌথ মঞ্চের ঐক্যবদ্ধ লড়াই কে সারা দুর্গাপুরে ছড়িয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।
  কেন্দ্রিয় ও রাজ্য সরকারের নীতির ফলে গোটা দুর্গাপুর জুড়ে চলছে শিল্পের মড়ক চলছে । বর্তমানে নতুন কোন শিল্প আসে নি কর্মসংস্হানের কোন সুযোগ না থাকার ফলে শিল্পনগরীর ছেলে-মেয়েরা ভিন রাজ্যে বা বিদেশে কাজের আশায় চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে
আজ দুর্গাপুর ‘দুর্দশাপুর’-এ পরিনত হতে চলেছে বিশ্বায়নের হাত ধরে কেন্দ্র রাজ্য সরকারের নীতিগত অবস্হানের ফলে বন্ধ হয়ে গেছে এম..এম.সি/এইচ.এফ.সি/ বি..জি.এল/রিফ্যাকট্রি সহ ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ব এবং ২৪টি বেসরকারি কারখানা সেই সাথে বন্ধ হয়েছে বিভিন্ন অনুসারী শিল্পের কারখানা ,পরিষেবা সংস্হা ও কয়লা খনি। ফলে কর্মচ্যূত হয়েছেন প্রায় আড়াই লক্ষ শ্রমিক এম..এম.সি কারখানার পুনরুজ্জীবনের ক্ষেত্রে বামফ্রন্ট সরকারের উদ্যোগে ২০১৩ সালে হাইকোর্টের মাধ্যমে ১০০ কোটি টাকায় একটি কনসোর্টিয়াম ( কোল ইন্ডিয়া,ডিভিসি,ভারত আর্থ মুভার্স কে নিয়ে তৈরি ) ক্রয় করা সত্বেও ,আজ পর্যন্ত সেই কারখানা খোলার কোন উদ্যোগ বর্তমান রাজ্য সরকার দেখায় নি ২০০২ সালে বন্ধ হয়ে গেছে ভারত অপথ্যালমিক (বি..জি.এল ) এই কারখানার কর্মচ্যূত শ্রমিক-কর্মচারিরা আজও তাদের প্রাপ্য পি.এফ.-গ্র্যাচ্যুইটির টাকা পান নি রাজ্য সরকার নির্লিপ্ত কেন্দ্রিয় সরকার ৬টি বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ব সার কারখানার খোলার উদ্যোগ নিলেও সেই তালিকায় নেই দুর্গাপুরের ফার্টিলাইজার কারখানা (এইচ.এফ.সি ) খোলার দাবিতে রাজ্যের বাম পরিষদিয় দল নেতা, দুর্গাপুর ( পূর্ব ) এর সি.পি.আই.(এম) বিধায়ক  মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে এবং সি.আই.টি.ইউ এর সাধারন সম্পাদক  কেন্দ্রিয় সরকারের কাছে দাবি জানালেও,  উভয়  সরকারই নিশ্চুপ থাকে ! ভ্যালুয়েশন অনুসারে কারখানাটির মূল্য ২০১২ সালের  ছিল ৭০৬.২৭ কোটি টাকা অথচ বর্তমানে তা মাত্র ৭০ কোটি টাকায়  বিক্রি করে দেওয়া হল
দুর্গাপুর কেমিক্যালসের ১০০% বিলগ্নিকরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার । দুর্গাপুর প্রোজেক্টস লিমিটেড ( ডি.পি.এল ) এর কোক ওভেন প্ল্যান্টের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে রাজ্য সরকার । ।ডিটিপিএস এর নতুন পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি না হলে ডিটিপিএস এর ভবিষ্যৎ নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দেবে । দুর্গাপুর ব্যারেজ শিল্পনগরীর একমাত্র জলের উৎস । জন্মলগ্ন থেকে ব্যারেজের ড্রেজিং অবহেলিত । ফলে ব্যারেজের নাব্যতা ক্রমাগত কমে যাওয়ায় শিল্প সহ পানীয় জলের সরবরাহের সংকটের আশংকা বাড়ছে ।
এই সব সমস্যার অবিলম্বে সমাধানের দাবি জানিয়ে আজ যৌথ মঞ্চের ডাকে গান্ধী মোড় থেকে শ্রমিকদের এক বিশাল মিছিল সিটি সেন্টারে এসডিও দফ্তরে যায় ও যৌথ মঞ্চের এক প্রতিনিধিদল দশ-দফা দাবি সম্বলিত এক দাবি-পত্র পেশ করেন । সমাবেশ চলাকালিন বক্তব্য রাখেন যৌথ মঞ্চের যুগ্ম-আহ্বায়ক বিনয়েন্দ্র কিশোর চক্রবর্তী ও বিকাশ ঘটক সহ সি.আই.টি.ইউ-আই.এন.টি.ইউ.সি-এ.আই.টি.ইউ.সি-টি.ইউ.সি.সি- এ.আই.ইউ.টি.ইউ.সি এর নেতৃবৃন্দ ।













No comments:

Post a Comment